প্রতীকী ছবি।
রোগী এবং চিকিৎসক-কর্মীদের জন্য নির্দিষ্ট লিফট ব্যবহার করেছিলেন দুই মহিলা। এক জনের কোলে ছিল দু’বছরের অসুস্থ সন্তান। তা সত্ত্বেও ‘অপরাধ’-এর শাস্তি হিসেবে দুই মহিলাকে কুড়ি বার করে কান ধরে ওঠবোস করানোর অভিযোগ উঠল উলুবেড়িয়া মহকুমা হাসপাতালের এক লিফটম্যানের বিরুদ্ধে।
শুক্রবার রাতে ওই হাসপাতালের তিনতলায় শিশু বিভাগের সামনে ওই কাণ্ডের পরে বিক্ষোভ দেখান অন্য রোগী ও তাঁদের আত্মীয়েরা। বেগতিক বুঝে শেখ আব্বাসউদ্দিন নামে ওই লিফটম্যান চম্পট দেন। হাসপাতালের সুপার সুদীপরঞ্জন কাঁড়ার মানছেন, ওই মহিলাদের সঙ্গে অন্যায় করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘ওই লিফটম্যানকে সতর্ক করা হয়েছে। তাঁকে অস্থায়ী ভাবে নিয়োগ করেছে পূর্ত দফতর। লিফট ওই দফতরই চালায়।’’ মহকুমা পূর্ত দফতরের এক কর্তা জানান, ওই লিফটম্যানকে সাবধান করা হয়েছে।
কী হয়েছিল শুক্রবার?
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, বাউড়িয়ার ফোর্ট গ্লস্টার এলাকার বাসিন্দা সাইনা বেগমের দু’বছরের শিশুপুত্র শিশু বিভাগে ভর্তি ছিল। তার বুকে সর্দি জমেছিল। শুক্রবার রাতে কর্তব্যরত চিকিৎসক সাইনাকে ছেলের জন্য ওষুধ কিনে আনতে বলেন। তিনি ছেলেকে কোলে নিয়েই নীচে নামার জন্য লিফটে ওঠেন। তাঁর সঙ্গে আর এক মহিলাও ছিলেন। হাসপাতালের তিনটি লিফটই শুধু মাত্র রোগী এবং চিকিৎসক-কর্মীদের জন্য বরাদ্দ। কিছুটা দূর থেকে সাইনাদের লিফটে উঠতে দেখে আব্বাসউদ্দিন আটকাতে যান। কিন্তু তত ক্ষণে লিফট নামতে শুরু করেছে। আব্বাসউদ্দিন সিঁড়ি দিয়ে দ্রুত নীচে নেমে লিফট থেকে বেরনোর আগেই দুই মহিলাকে আটকান বলে অভিযোগ।
প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, প্রায় ১০ মিনিট পরে ফের লিফট তিন তলায় উঠে আসে। তত ক্ষণে ভিতরে ক্লান্ত হয়ে পড়েন মহিলারা। শিশুটিও কাহিল হয়ে পড়ে। কিন্তু এর পরেও লিফটম্যানকে নিরস্ত করা যায়নি। তাঁর নির্দেশ মতো শিশুটিকে অন্যের কোলে দিয়ে দুই মহিলা কান ধরে কুড়ি বার করে ওঠবোস করেন।
সাইনা বলেন, ‘‘সারা দিন তিন-চারবার সিঁড়ি ভেঙে ওষুধ কেনার জন্য ওঠানামা করায় ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলাম। তাই লিফটে উঠি। জানতাম না ওটা সবাই ব্যবহার করতে পারেন না। কার কাছে ছেলেকে রেখে যাব? সেই কারণে সঙ্গে নিই। ভুল হয়েছে বলা সত্ত্বেও লিফটম্যান শুনলেন না। লিফটে আটকে রাখলেন। শ্বাসকষ্ট হচ্ছিল। তার পর ওঠবোস করালেন।’’
শনিবার শিশুটিকে হাসপাতাল থেকে ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়। সাইনার স্বামী শেখ শাজাহান জানান, এ দিন সুপার আসেননি। সোমবার তাঁর কাছে লিখিত অভিযোগ জানিয়ে লিফটম্যানকে সরানোর দাবি জানাবেন। আব্বাসউদ্দিনের সঙ্গে চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা যায়নি। শনিবার তিনি হাসপাতালে আসেননি। তাঁর ফোন বন্ধ ছিল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy