Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

তোলার তির সব্যসাচীকে

বিধাননগরের মেয়র তথা তৃণমূল বিধায়ক সব্যসাচী দত্তের বিরুদ্ধে তোলা চেয়ে হুমকি, ভীতি প্রদর্শনের অভিযোগ তুললেন সল্টলেকের বাসিন্দা এক ব্যবসায়ী। যদিও অভিযোগ নস্যাৎ করেছেন সব্যসাচী।

সব্যসাচী দত্ত

সব্যসাচী দত্ত

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০৪:১৬
Share: Save:

বিধাননগরের মেয়র তথা তৃণমূল বিধায়ক সব্যসাচী দত্তের বিরুদ্ধে তোলা চেয়ে হুমকি, ভীতি প্রদর্শনের অভিযোগ তুললেন সল্টলেকের বাসিন্দা এক ব্যবসায়ী। যদিও অভিযোগ নস্যাৎ করেছেন সব্যসাচী।

কলকাতা প্রেস ক্লাবে মঙ্গলবার বিকেলে সাংবাদিক সম্মেলন করে ওই ব্যবসায়ী মধুসূদন চক্রবর্তী অভিযোগ করেন, ‘‘ত্রিপুরা ও মেঘালয়ের ভোটে ফ্ল্যাগ, ফেস্টুনের জন্য মেয়রের কথায় ২ লাখ ৩০ হাজার টাকা দিয়েছি। আমার সিএফ ব্লকের অফিসে মেয়রের প্রতিনিধি বিদ্যুৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে টাকা দিই। এর পরেও সব্যসাচী দত্ত ১ কোটি টাকা চান এবং বলেন, ১২ ফেব্রুয়ারির মধ্যে তা না দিলে খারাপ হবে। তৃণমূলের কিছু নেতার কাছে গিয়েও সুরাহা হয়নি। আতঙ্কে রয়েছি।’’ মধুসূদনের আরও দাবি, দু’জনের কথোপকথন চলাকালীন মেয়র তাঁকে বলেন, তিনি এই বিষয় নিয়ে যাঁর কাছে খুশি যেতে পারেন। এমনকী মুখ্যমন্ত্রীকে জানালেও কিছু হবে না।

নিজের বক্তব্যের সমর্থনে অডিও ক্লিপিং এবং ভিডিও পেশ করেন মধুসূদন। যদিও ওই সব অডিও ক্লিপিং এবং ভিডিও-র সত্যতা যাচাই করা আনন্দবাজার পত্রিকার পক্ষে সম্ভব হয়নি। অভিযোগকারীর দাবি, তিনি স্পিড পোস্টের মাধ্যমে বিধাননগর পুলিশের কাছে অভিযোগপত্র পাঠিয়েছেন। বিধাননগর পুলিশ অবশ্য জানিয়েছে, তারা এ দিন রাত পর্যন্ত ওই অভিযোগ পায়নি।

সব্যসাচী এখন ত্রিপুরায় ভোটের প্রচারে। তিনি ফোনে বলেন, ‘‘আমি ওই নামের কাউকে চিনি না। তাঁর কাছে প্রমাণ থাকলে মামলা করুন।’’ আর বিদ্যুৎ ফোনে অভিযোগ অস্বীকার করেন।

মধুসূদন সল্টলেকের বিডি ব্লকের বাসিন্দা। একটি সংবাদপত্র এবং উচ্চ মাধ্যমিকের পাঠ্যপুস্তক প্রকাশনার কাজ করেন তিনি। ত্রিপুরাতেও সেই ব্যবসা রয়েছে। পুলিশ সূত্রের অবশ্য খবর, জমি-বাড়ি বিক্রির মধ্যস্থতা সংক্রান্ত কয়েকটি প্রতারণার অভিযোগে ইতিমধ্যেই ওই ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে সল্টলেকের তিনটি থানায় মামলা হয়েছে। একটিতে তিনি গ্রেফতারও হন। এখন জামিনে মুক্ত।

পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের বক্তব্য, ‘‘অভিযোগকারীর বিরুদ্ধেই প্রতারণার অভিযোগ রয়েছে। সব্যসাচী মানহানির মামলা করবেন।’’

বিরোধীরা অবশ্য শাসক দলকে চেপে ধরার সুযোগ হাতছাড়া করতে চাইছে না। রাজ্য বিজেপি-র সাধারণ সম্পাদক দেবশ্রী চৌধুরী এই প্রসঙ্গে বললেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী প্রায়ই বলে থাকেন, তৃণমূলে তোলাবাজ-সিন্ডিকেটের লোকদের কোনও ঠাঁই নেই। এ বার তিনি বলুন, সব্যসাচী দত্তকে কোথায় রাখবেন?’’ বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তীর বক্তব্য, ‘‘অনুপ্রেরণা আর তোলাবাজির রাজত্ব চলছে পশ্চিমবঙ্গে। যিনি যত বেশি অনুপ্রাণিত, তাঁর তোলা তত বেশি। কিন্তু ত্রিপুরায় তো ঘাসফুল সব পদ্মফুল হয়ে গিয়েছে! তাতেই এক কোটি!’’ আর কংগ্রেসের মনোজ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘সারদা-নারদার পর আর একটা পর্দা ফাঁস হল!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE