Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪

ক্যানসার-যুদ্ধে পাশে দাঁড়াতে একতাই অস্ত্র

এক জন ব্লাড ক্যানসারে ভুগছেন। অন্য জন ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে আগে মারা গিয়েছেন।  দু’জনেরই পাশে রয়েছেন সহপাঠী, বন্ধুরা। 

পাশে: বাবার সঙ্গে অনুভব। নিজস্ব চিত্র

পাশে: বাবার সঙ্গে অনুভব। নিজস্ব চিত্র

অরুণাক্ষ ভট্টাচার্য
শেষ আপডেট: ১৫ নভেম্বর ২০১৮ ০১:৫৮
Share: Save:

একটাই মন্ত্র। ‘আসল অস্ত্র-সমন্বয়’।

এক জন ব্লাড ক্যানসারে ভুগছেন। অন্য জন ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে আগে মারা গিয়েছেন। দু’জনেরই পাশে রয়েছেন সহপাঠী, বন্ধুরা।

বারাসতের ছেলেটির কেমোথেরাপি চলছে। তাঁকে সুস্থ করে তুলতে পথে-পথে অর্থ সংগ্রহে নেমেছে স্কুল-কলেজের পড়ুয়ারা। চরম ব্যস্ততা নতুন প্রজন্মের হাতে গড়া দু’টি দলেই। সোশ্যাল মিডিয়াতেও উঠেছে ঝড়। দুই শিবিরে অস্ত্র একটাই, তা হল এক জন থেকে দশ জন, দশ জন থেকে একশোর সমন্বয়।

কালীপুজোয় যেমন দেখেছিলেন বারাসতের বড় পুজো কমিটিগুলির উদ্যোক্তারা। কয়েকটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের ২৫-৩০ জন ছেলেমেয়ে তাঁদের গিয়ে বলেছিল, ‘কাকু আমাদেরই এক দাদা আইইএম-এর তৃতীয় বর্ষের ছাত্র অনুভব বন্দ্যোপাধ্যায় রক্তের ক্যানসারে (অ্যাকিউট মাইলয়েড লিউকেমিয়া) আক্রান্ত। দ্বিতীয় পর্যায়ের কেমোথেরাপি চলছে। অনেক টাকা চাই। আপনাদের তো বড় পুজো, যদি কিছু সাহায্য করা যায়।’

‘প্যাণ্ডেল হপিং’ না করেই অর্থ সংগ্রহে নেমেছিল ছেলেমেয়েরা। বাধা দেননি শিক্ষক-অভিভাবকেরাও। তাদের ফেরাননি পুজো উদ্যোক্তারা, বড় বিপণির মালিকেরাও।

বারাসতের চাঁপা়ডালির বাসিন্দা অনুভবের বাবাও ৬ বছর ধরে একই রোগে আক্রান্ত। এই অবস্থায় ওই ছেলেমেয়েরা ছাড়াও বন্ধুবান্ধব, শিক্ষকের পাশাপাশি বিভিন্ন স্কুল-কলেজ ও যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরাও পথে নেমেছেন। একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের প্রাক্তনীরা ফুটবল প্রতিযোগিতার মাধ্যমে ২২ হাজার টাকা তুলে দিয়েছে। ওই স্কুলেরই নবম শ্রেণির ছাত্রী ঋজুল চট্টরাজ, অবন্তিকা ভট্টাচার্যের আবেদনে তাদের আবাসন কর্তৃপক্ষ বাজির জন্য বরাদ্দ টাকা চিকিৎসার জন্য দিয়েছেন।

সোশ্যাল মিডিয়া, অনলাইন গেম, মিলাপ ও পেটিএম মারফত অনুভবের জন্য অর্থ সংগ্রহ করে এখনও পর্যন্ত ১০ লক্ষ জোগাড় হয়েছে। কিন্তু ‘বোন ম্যারো ট্রান্সপ্ল্যান্টের’ জন্য তা যথেষ্ট নয় বলেই জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা। তাই আরও ব্যস্ত ছেলেমেয়েরা।

অন্য দিকে, ব্লাড ক্যানসারের সঙ্গে টানা ৬ মাস লড়াই চালিয়েছিলেন সুস্মিতা মালি নামে এক তরুণী। নিয়মিত রক্ত দিয়ে পাশে দাঁড়ায় ‘ব্লাডমেট্‌স’ নামে তার বন্ধুদের একটি দল। সেপ্টেম্বরে মারা যান সুস্মিতা। আগামী ৯ ডিসেম্বর কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রক্তদান শিবির করে সুস্মিতার ১৮তম জন্মদিন আয়োজন করেছে ব্লাডমেট্স।

সুস্মিতার ভাই সুব্রত মালি বলেন, ‘‘ছ’মাস লড়েছিল দিদি। রক্তদানের অনুষ্ঠানে আমরাও থাকব।’’

সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা-সদস্য প্রিয়ম সেনগুপ্ত বলেন, ‘‘সুস্মিতার জন্মদিনে রক্তদাতা জোগাড়ে বাংলা ব্যান্ডের বিভিন্ন শিল্পী সাহায্য করছেন। তাই ক্যাম্পের থিম, বাংলা ব্যান্ড।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Cancer Health
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE