ডুবন্ত: এ ভাবেই খালে পড়ে যায় গাড়িটি। বুধবার, বাসন্তী হাইওয়েতে। নিজস্ব চিত্র
সরস্বতী পুজোর দুপুরে পথ দুর্ঘটনা ঘটল বাসন্তী হাইওয়েতে। দ্রুত গতিতে থাকা একটি গাড়ি সরাসরি নেমে যায় চৌবাগা খালে। গাড়িতে থাকা দুই তরুণী কোনও মতে সাঁতরে উপরে উঠে আসেন। তাঁদের সঙ্গে ছিলেন এক তরুণও। তিন জনকেই ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে ছেড়ে দেওয়া হয়। তবে গাড়ির চালক পলাতক।
পুলিশ সূত্রের খবর, মহম্মদ আলম নামে তিলজলার বছর আঠেরোর এক তরুণের সঙ্গে বুধবার বেরিয়েছিলেন আনাম পরভিন ও রোশনি খাতুন নামে দুই তরুণী। ভোজেরহাটের দিক থেকে তাঁরা কলকাতার দিকে আসছিলেন। গাড়ি চালাচ্ছিলেন সোনু নামে এক তরুণ। তিনি আলমের বন্ধু। এ দিন দুপুর ১টা নাগাদ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে চৌবাগা খালে নেমে যায় গাড়িটি। খবর পেয়ে যায় পুলিশ। এলাকাটি প্রগতি ময়দান থানার অন্তর্গত হলেও আশপাশের থানা থেকেও যায় বিশাল পুলিশবাহিনী। খবর যায় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী ও পুলিশের ডুবুরিদের কাছেও। তত ক্ষণে সাঁতরে উঠে আসেন দুই তরুণী। তাঁদের হাসপাতালে পাঠানো হয়। তবে আলম নামের ওই তরুণ রাস্তাতেই দাঁড়িয়ে ছিলেন বলে পুলিশ জানিয়েছে। দেখা মেলেনি সোনুর।
আলম পুলিশের কাছে দাবি করেছেন, কলকাতার দিকে আসার সময়ে হঠাৎ গাড়ির জ্বালানি ফুরিয়ে যায়। গাড়ি থেকে নেমে তাই পিছন থেকে সেটিকে ঠেলছিলেন। হঠাৎ গাড়িটি চালু হয়ে যায়। কিন্তু আচমকা গতি বেড়ে যাওয়ায় সোনু গাড়িটিকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেননি। আনাম ও রোশনিকে নিয়ে গাড়ি খালে নেমে যায়।
এই বয়ানে অবশ্য সন্তুষ্ট নন তদন্তকারীরা। তাঁদের প্রশ্ন, তা-ই যদি হয়ে থাকে, তা হলে সোনু ঘটনাস্থল থেকে পালালেন কেন? রাস্তাতেই বা গাড়ির চাকার স্পষ্ট ছাপ মিলবে কেন? পুলিশের অনুমান, গাড়িটি বেশি গতিতে চলছিল। তাই রাস্তায় চাকার ছাপ পড়েছে। গাড়ির নম্বর ও আলমদের সূত্রে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে সোনুর খোঁজে তাঁর বাড়িতেও যায় পুলিশ। তবে বুধবার রাত পর্যন্ত তাঁর খোঁজ মেলেনি।
এ দিন ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, ওই দুর্ঘটনার জেরে যানজট হয়েছে বাসন্তী হাইওয়েতে। তার মধ্যেই এক লেনে গাড়ি চলাচল করানো হচ্ছে। খালে পড়ে যাওয়া গাড়িটি তুলতে বেগ পেতে হয় পুলিশকে। টেনে তোলার সময়ে উদ্ধারকারী গাড়ির কেবলও ছিঁড়ে যায় এক বার। শেষে বিকেল সাড়ে ৩টে নাগাদ গাড়িটি তোলা সম্ভব হয়। ঘটনাস্থলে উপস্থিত এক পুলিশ অফিসার বলেন, ‘‘গাড়িতে যাঁরা ছিলেন, তাঁরা সবাই সত্যি বলছেন কি না, দেখা হচ্ছে। ওঁরা মত্ত ছিলেন কি না, তা-ও খতিয়ে দেখা হবে। তবে বাসন্তী হাইওয়ে সম্প্রসারিত না হলে এমন দুর্ঘটনা এড়ানো কঠিন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy