Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

বাঁচানোর নামে রাস্তায় ফেলেই চম্পট, বিনা চিকিত্সায় মৃত্যু

উদাসীনতা এ শহর আগেও দেখেছে। দেখেছে অমানবিক মুখের নানা ছবিও। কিন্তু মানবিকতার মুখোশে চরম নিষ্ঠুরতার কথা এ দিন জানল শহর।

নির্মম: রাস্তাতেই পড়ে সালিম। —নিজস্ব চিত্র

নির্মম: রাস্তাতেই পড়ে সালিম। —নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০১ মার্চ ২০১৭ ০৪:০৮
Share: Save:

উদাসীনতা এ শহর আগেও দেখেছে। দেখেছে অমানবিক মুখের নানা ছবিও। কিন্তু মানবিকতার মুখোশে চরম নিষ্ঠুরতার কথা এ দিন জানল শহর। অভিযোগ, দুর্ঘটনায় গুরুতর জখম এক যুবককে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার নাম করে নিজের গাড়িতে তুলে নেয় ধাক্কা দেওয়া গাড়ির চালকই। কিন্তু পরের দিন সকালে সেই যুবকের মৃতদেহ মিলেছে রাস্তায়। পুলিশের অনুমান, অভিযুক্ত চালকই ফেলে দিয়ে গিয়েছে ওই যুবককে। কার্যত বিনা চিকিৎসায় মারা গিয়েছেন তিনি।

সোমবার রাত সাড়ে দশটা নাগাদ টালিগঞ্জ সার্কুলার রোড এবং কে পি রায় লেনের সংযোগস্থলে পথ দুর্ঘটনার খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ। জখম যুবক, বছর চল্লিশের সালিমকে নিয়ে তত ক্ষণে চলে গিয়েছে দুর্ঘটনা ঘটানো মালবাহী গাড়ির ‘মানবিক’ চালক। কাছেই বাঙুর হাসপাতাল। ওই যুবককে সেখানেই নিয়ে যাওয়া হয়েছে ভেবে তাঁর পরিবারের লোকজন এবং পুলিশ পৌঁছন সেখানে। কিন্তু সেখানে ছিলেন না সালিম। কাছাকাছি অন্য হাসপাতালগুলিতেও সারা রাত মেলেনি খোঁজ। পরের দিন সকালে প্রিন্স আনোয়ার শাহ রোডের একটি ধর্মস্থান-সংলগ্ন রাস্তায় ফুটপাথের পাশে পড়ে ছিল দেহটি। হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা। সন্ধেবেলা ধরা পড়ে অভিযুক্ত চালক মহম্মদ পারভেজ খান। তার বিরুদ্ধে বেপরোয়া ভাবে গাড়ি চালানো ও অবহেলার কারণে মৃত্যু— এই দুই ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।

সালিমের ভাগ্নে আব্দুল মুস্তাক বলেন, ‘‘সকাল সাতটা নাগাদ মাছ ব্যবসায়ীরা আসছিলেন টালিগঞ্জ সার্কুলার রোডের বাজারে। তখনই এক ব্যবসায়ী সালিমকে চিনতে পেরে বাড়িতে খবর দেন।’’ অথচ, ওই রাস্তা সংলগ্ন স্থানীয় বাসিন্দারা নিশ্চিত ভাবে জানাচ্ছেন, ভোর পাঁচটা নাগাদ দেহ পড়ে ছিল না ওই রাস্তায়। পুলিশের অনুমান, সারা রাত শহরে ঘোরার পরে ভোর ছ’টা নাগাদ দেহটি ফেলে দিয়ে গিয়েছে ঘাতক গাড়ির চালক। সালিমের দিদি আবেদা বিবি বলেন, ‘‘ভাইকে নিয়ে সারা রাত শহরে ঘুরল অত বড় একটা গাড়ি! পুলিশ জানতেও পারল না!’’

সালিমের পরিবারের দাবি, রাতেই গাড়ির নম্বর জানিয়ে দেওয়া হয় পুলিশকে। কিন্তু রাতভর পুলিশ খোঁজ করেনি। পুলিশের অবশ্য দাবি, রাতে জানানো নম্বরটি অসম্পূর্ণ ছিল। পরে সিসিটিভি ফুটেজ দেখে গাড়িটি চিহ্নিত করা গিয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Accident inhuman
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE