অধীর চৌধুরীর ক্ষোভ, দলের বৈঠক ও নানা সিদ্ধান্তের খবর সকলের কাছে পৌঁছচ্ছেই না। —নিজস্ব চিত্র।
জোটের প্রশ্নে তাঁদের সুর এক। রাহুল গাঁধীর নির্দেশ মাফিক সংগঠনে জোর দেওয়ার কথা বলছেন দু’জনেই। বর্তমান ও প্রাক্তনকে পাশাপাশি বসতে দেখে খুশি হচ্ছেন ভারপ্রাপ্ত এআইসিসি-র নেতাও। তবু কোথাও যেন থেকে যাচ্ছে ব্যবধান!
প্রদেশ কংগ্রেসে জমানা বদলের পরে বুধবারই প্রথম বিধান ভবনে বৈঠকে যোগ দিতে এলেন প্রাক্তন প্রদেশ সভাপতি অধীর চৌধুরী। বৈঠকে বললেন, দর কষাকষি করার মতো শক্তি অর্জন করতে না পারলে জোটের খেলায় কংগ্রেসকে কেউ আমলই দেবে না! একই সঙ্গে বর্তমানের সামনে প্রাক্তন সভাপতির ক্ষোভ, দলের বৈঠক ও নানা সিদ্ধান্তের খবর সকলের কাছে পৌঁছচ্ছেই না। অধীরবাবুর বক্তৃতার সময়ে উপস্থিত ছিলেন বাংলার ভারপ্রাপ্ত এআইসিসি-র নেতা গৌরব গগৈ ও অন্যতম সহ-পর্যবেক্ষক বি পি সিংহ। গৌরব অবশ্য দৃশ্যত ঐক্যেই ‘সন্তুষ্ট। তাঁর মন্তব্য, ‘‘সোমেন মিত্র, অধীর চৌধুরী, আব্দুল মান্নান-সহ প্রদেশ কংগ্রেসের সব গুরুত্বপূর্ণ নেতা এক মঞ্চে এসেছেন। এই রকম ঐক্যবদ্ধ ভাবেই কংগ্রসেকে পথে নেমে লড়াই করতে হবে।’’
লড়াই করার কথা দলের নেতা-কর্মীদের বলেছেন অধীরবাবুও। প্রদেশ কংগ্রেসের কার্যনির্বাহী কমিটির বর্ধিত বৈঠকের দ্বিতীয় ও শেষ দিনে মুর্শিদাবাদ-সহ ১৪টি সাংগঠনিক জেলার প্রতিনিধিরা মতামত দিয়েছেন। বহরমপুরের সাংসদ ও প্রদেশ প্রচার কমিটির চেয়ারম্যান অধীরবাবু এ দিনের বৈঠকে বলেন, ২০১১ সালে কর্মীরা চেয়েছিলেন বলেই তৃণমূলের সঙ্গে জোট হয়েছিল। দলের কর্মীরা চেয়েছিলেন বলেই ২০১৬ সালে জোট হয়েছিল সিপিএমের সঙ্গে। এখন আবার কেউ কেউ বলছেন, একলা চলতে হবে। একলা চলার মতো শক্তি থাকলে ভাল। কর্মীরা যা চাইবেন, তা-ই হবে। তবে সংগঠনকে দর কষাকষির জায়গায় নিয়ে যেতে পারলে তবেই জোট করা বা না করা নিয়ে কথা বলা ভাল। আর গৌরব পরে এই নিয়ে প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘‘নির্বাচনী জোট নিয়ে এআইসিসি সিদ্ধান্ত নেবে। বাংলার নেতা-কর্মীদের মনোভাব মাথায় রেখেই সিদ্ধান্ত হবে।’’ সোমেন, অধীরের মতোই বিজেপি এবং তৃণমূলকে একাসনে বসিয়ে গৌরবের তির, ‘‘দু’টো দলের সরকারই জনগণের করের টাকা নিজেদের প্রচারে ব্যবহার করছে!’’
জোট ও সংগঠন নিয়ে মত দেওয়ার পরেই অধীরবাবূ এ দিন বৈঠকে সোমেনবাবুকে ‘অভিভাবক’ সম্বোধন করে অভিযোগ করেন, বর্তমান প্রদেশ সভাপতির অধীনে কিছু লোক ছড়ি ঘোরানোর চেষ্টা করছেন। বৈঠক, কর্মসূচির খবর দলের সকলকে দেওয়া হচ্ছে না। ‘ঐক্যবদ্ধ’ কংগ্রেসের সঙ্গে এই জিনিস খাপ খায় না। দলীয় সূত্রের খবর, প্রদেশ কংগ্রেসের পুরনো দায়িত্বপ্রাপ্ত কিছু নেতা বর্ধিত বৈঠকে ডাক পাননি। সোশ্যাল মিডিয়ার জন্য নির্দিষ্ট ঘরও ওই শাখার আহ্বায়ককে না জানিয়ে হাত বদল হয়েছে বলে অভিযোগ। সেই সূত্রেই অধীরবাবুর ক্ষোভ। সোমেনবাবু অবশ্য প্রাক্তন সভাপতির বক্তব্যের ‘নোট’ রেখেছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy