ফাইল চিত্র।
সন্ধ্যা গড়াতেই অশান্তি যেন চরমে উঠল। সারা দিনের ট্রেন ভোগান্তি বদলে গেল তুমুল বিশৃঙ্খলায়।
দিনভর রেল অবরোধ সমস্যার কোনও সুরাহা মেলেনি। রাত গড়াতে যাত্রীদের ভোগান্তি আরও বেড়ে যায়। কারণ, ওই অবরোধের জেরে দক্ষিণ-পূর্ব রেলের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ ট্রেন বাতিল করে দেওয়া হয়। এর পরেই যাত্রীরা বিক্ষোভে ফেটে পড়েন। হাওড়ার পাশাপাশি বিভিন্ন রেল স্টেশনে তাঁরা বিক্ষোভ দেখান। বেলদা স্টেশনে ভাঙচুর চালান যাত্রীদের একাংশ। ভাঙচুর করা হয় কন্ট্রোল প্যানেলে। এমনকি প্ল্যাটফর্মে রাখা এক রেল কর্মীর বাইকেও আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।
কখন ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হবে, রেলের তরফে সোমবার রাত পর্যন্ত কোনও আশ্বাস দেওয়া হয়নি। বাতিল করে দেওয়া হয় হাওড়া-মুম্বই গীতাঞ্জলি এক্সপ্রেস, হাওড়া-চেন্নাই করমণ্ডল এক্সপ্রেস, কন্যাকুমারী এক্সপ্রেস, হাওড়া-পুরী এক্সপ্রেস ও শিয়ালদহ-পুরী দুরন্ত এক্সপ্রেস-সহ একাধিক ট্রেন। ওই তালিকায় রয়েছে মুম্বই মেল, যশবন্তপুর এক্সপ্রেস, পুণে-আজাদ হিন্দ এক্সপ্রেস, হাওড়া-জ্ঞানেশ্বরী এক্সপ্রেস, হাওড়া-ভাস্কো অমরাবতী এক্সপ্রেস, হাওড়া-চেন্নাই মেল, হাওড়া-হাতিয়া, হাওড়া-ক্রিয়া যোগ এক্সপ্রেসের মতো ট্রেনও। দক্ষিণ-পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক সঞ্জয় ঘোষ বলেন, ‘‘এমন পরিস্থিতি আগে কখনও হয়নি। প্রায় ১৬ ঘণ্টা হতে চলল রেল যোগাযোগ কার্যত বন্ধ। এখনও কোনও আশার আলো দেখা যাচ্ছে না।’’
বাতিল ট্রেনের তালিকা।
‘ভারত জাকাত মাঝি পরগনা মহল’ নামে আদিবাসীদের একটি সংগঠনের তরফে অনির্দিষ্ট কালের জন্য রেল-রাস্তা রোকো কর্মসূচির ডাক দেওয়া হয়েছিল সোমবার। সেই কর্মসূচি অনুযায়ী রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় সকাল থেকেই রেল অবরোধ করা হয়। বিভিন্ন স্টেশনে আটকে পড়ে দূরপাল্লার ট্রেনগুলি। চূড়ান্ত ভোগান্তির মুখে পড়েন যাত্রীরা। কিন্তু, রেল এবং রাজ্য প্রশাসনের তরফে সেই অবরোধ তুলতে কোনও উদ্যোগ নেওয়া হয়নি বলে যাত্রীদের অভিযোগ। সঞ্জয়বাবু যদিও বলেন, ‘‘আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত বিষয় রাজ্যের এক্তিয়ারভুক্ত। সেখানে রেল কিছু করতে পারে না। রাজ্য সরকারের কাছে সহযোগিতা চেয়ে অনুরোধ করা হয়েছে। তারা বিষয়টি দেখছে বলে আমাদের জানানো হয়েছে।’’
আরও পড়ুন: ‘মা পক্ষাঘাতগ্রস্ত, একটা চাকরি পেয়েছিলাম, কিন্তু আর ভাবতে পারছি না’
এ দিন পশ্চিম মেদিনীপুরের শালবনি ও ঝাড়গ্রামের খেমাশুলি অর্থাৎ মূল দু’টি জায়গায় অবরোধ চলছিল। শালবনিতে প্রায় চার হাজারের কাছাকাছি অবরোধকারী ও খেমাশুলিতে প্রায় হাজার দুয়েক বিক্ষোভকারী জমায়েত হয়েছিলেন। সকাল থেকেই খেমাশুলিতে মহকুমাশাসক এবং স্থানীয় বিডিও অবরোধকারীদের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেন। কিন্তু অবরোধকারীরা অবরোধ তুলে নেওয়ার কোনও আশ্বাস দেননি।
আরও পড়ুন: আদিবাসী অবরোধে স্তব্ধ দক্ষিণ-পূর্ব রেল, অবরোধ চলবে আগামিকালও
প্রশাসন সূত্রে খবর, এ দিন সন্ধ্যাবেলা থেকেই পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসক পি মোহনগাঁধী শালবনীতে অবরোধকারীদের সঙ্গে কথা বলছেন। নবান্ন থেকে তাঁদের কাছে বার্তা পাঠানো হয়েছে, রাজ্য ওই সংগঠনের দাবিদাওয়া নিয়ে বিবেচনা করবে। কিন্তু, রাত গড়ালেও সেই কথায় কোনও কাজ হয়নি বলেই সূত্রের খবর। ‘ভারত জাকাত মাঝি পরগনা মহল’-এর তরফে জানানো হয়েছে, তাদের কেন্দ্রীয় কমিটি বৈঠকে বসেছে। সেই বৈঠক শেষে সিদ্ধান্তের কথা জানানো হবে।
পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বাংলায় খবর জানতে পড়ুন আমাদের রাজ্য বিভাগ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy