দেওয়ালে ফাটল। তার পাশেই লাল কালিতে লেখা ইসিএলের সতর্কীকরণ। নিজস্ব চিত্র
বিজ্ঞপ্তি দিয়ে আসানসোলের কালীপাহাড়ির এজেন্ট অফিস লাগোয়া এলাকাকে ‘অত্যন্ত’ ধসপ্রবণ বলে ঘোষণা করল ইসিএল। মঙ্গলবার বিকেলে এই বিজ্ঞপ্তি জারির কথা জানান খনিকর্তারা। পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত বাসিন্দাদের ফাঁকা পড়ে থাকা ইসিএলের কর্মী আবাসনে উঠে যাওয়ারও পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এই বিজ্ঞপ্তি জারির পরে বাসিন্দারা ক্ষোভপ্রকাশ করেছেন। তাঁরা বুধবারেও পুনর্বাসনের দাবিতে অনড় থেকেছেন।
কালীপাহাড়ির এই অঞ্চলটি আসানসোল পুরসভার ৩৮ নম্বর ওয়ার্ডের সাতগ্রাম এরিয়ার অন্তর্গত। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গত সোমবার ভোর সাড়ে ৫টা নাগাদ প্রচণ্ড কম্পন অনুভূত হয়। আতঙ্কিত হয়ে বাসিন্দাদের অনেকে ঘরের বাইরে বেরিয়ে আসেন। তাঁদের নজরে পড়ে, রাস্তা ও আশপাশের এলাকায় ফাটল ধরেছে। বেশ কিছু অংশ বসে গিয়েছে। চওড়া ফাটল ধরেছে কয়েকটি বাড়িতেও। এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, প্রায় পাঁচটি বাড়ি বেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। খোলা আকাশের নীচে বেরিয়ে আসেন ওই পরিবারগুলির বাসিন্দারা। আপৎকালীন ব্যবস্থা হিসেবে ওই পরিবারগুলিকে ইসিএলের ফাঁকা কর্মী আবাসনে তুলে আনেন কর্তৃপক্ষ।
বাসিন্দাদের দাবি, ঘটনার দিনই ইসিএলের আধিকারিকেরা মৌখিক ভাবে জানিয়েছিলেন, এলাকাটি ‘অত্যন্ত’ ধসপ্রবণ। সেখানে বসবাস বিপজ্জনক। মঙ্গলবার বিকেলে খনি কর্তৃপক্ষের তরফে সে কথাই এলাকার বিভিন্ন দেওয়ালে লাল কালিতে লিখে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
এলাকাটি যদি এতটাই বিপজ্জনক হয়ে থাকে, তা হলে আগে থেকে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি কেন? খোঁজ নিয়ে জানা গিয়েছে, ১৯৯৯ সালে খনি অঞ্চলের ১২৬টি অঞ্চলকে ধসপ্রবণ বলে ঘোষণা করেছিল ডাইরেক্টর জেনারেল মাইন্স সেফ্টি (ডিজিএমএস)। ওই ঘোষণাপত্রে কালীপাহাড়ি এলাকার নাম উল্লেখ করা হয়েছিল। কালীপাহাড়ির এজেন্ট উমেশ যাদবের দাবি, ‘‘আমরা অনেকবারই জানিয়েছি, এই অঞ্চলটি ধসপ্রবণ। বসবাসের অনুপযুক্ত। তবুও সেই নিষেধাজ্ঞা না শুনে মানুষজন বাড়ি বানিয়ে বসবাস করছেন কেন বোঝা যাচ্ছে না!’’
খোঁজ নিয়ে জানা গিয়েছে, যে এলাকাকে বিপজ্জনক ঘোষণা করেছেন খনি কর্তৃপক্ষ, সেই অঞ্চলটি ব্যক্তিগত মালিকানাধীন। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, ওই একচিলতে জমিই তাঁদের শেষ সম্বল। এই পরিস্থিতিতে পরিবার নিয়ে তাঁরা কোথায় দাঁড়াবেন! স্থানীয় বাসিন্দা শ্যামল কোইরির দাবি, ‘‘পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করুক ইসিএল।’’
পুনর্বাসন প্রসঙ্গে কী বলছেন জেলা প্রশাসনের কর্তারা? আসানসোলের প্রাক্তন সাংসদ হারাধন রায়ের দায়ের করা জনস্বার্থ মামলার প্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্ট ওই সব ধসপ্রবণ এলাকার পুনর্বাসনের নির্দেশ দেয়। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, কেন্দ্রীয় কয়লা মন্ত্রক ২০০৯ সালে পুনর্বাসন প্রকল্পের জন্য ২,৬২৯ কোটি টাকা মঞ্জুরও করেছে। ধসপ্রবণ এলাকার বাসিন্দাদের পুনর্বাসন দেওয়ার জন্য জামুড়িয়া, সালানপুর ও বারাবনিতে বহুতল আবাসন নির্মাণের কাজ শুরু করা হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy