Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

মিষ্টি হাবের জমি বাছতে মাঠে প্রশাসন

অনিচ্ছুকদের জমি নেওয়া হবে না বলে ‘মিষ্টি বাংলা হাব’ প্রকল্পের জায়গা বদলের কথা বলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। পরদিন, শুক্রবারই জমি খুঁজতে মাঠে নামল বর্ধমান প্রশাসন। প্রাথমিক ভাবে জমি বাছাও হয়েছে।

জমি দেখা হচ্ছে বর্ধমানের কাছে। — নিজস্ব চিত্র

জমি দেখা হচ্ছে বর্ধমানের কাছে। — নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
বর্ধমান শেষ আপডেট: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৩:৪৭
Share: Save:

অনিচ্ছুকদের জমি নেওয়া হবে না বলে ‘মিষ্টি বাংলা হাব’ প্রকল্পের জায়গা বদলের কথা বলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। পরদিন, শুক্রবারই জমি খুঁজতে মাঠে নামল বর্ধমান প্রশাসন। প্রাথমিক ভাবে জমি বাছাও হয়েছে।

জেলাশাসক সৌমিত্র মোহনের সঙ্গে এক প্রস্ত বৈঠকের পরে এ দিন জমি দেখতে বেরোন প্রশাসনের কর্তারা। মিষ্টি ব্যবসায়ীদের প্রতিনিধিরা ছিলেন সঙ্গে। আর ছিলেন বর্ধমান উত্তরের বিধায়ক নিশীথ মালিক। ঘটনাচক্রে এই নিশীথবাবুই বৃহস্পতিবার জমিদাতাদের বিক্ষোভের পিছনে মদত দিয়েছেন বলে দাবি করেছে জেলা তৃণমূলের একটি সূত্র। বিধায়ক অবশ্য সে কথা মানেননি।

‘মিষ্টি বাংলা হাব’ গড়ার জন্য উল্লাস মোড়ের কাছে আলিশা ও বামচাঁদ মৌজায় অধিগৃহীত ১০.৬৭ একর জমি ঘিরতে গিয়ে জমিদাতাদের বাধা ও বিক্ষোভের মুখে পড়ে প্রশাসন। বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে তৃণমূলের পতাকা, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি ছিল। তাঁরা দাবি করেন, সিঙ্গুরে যে-যে কারণে জমি অধিগ্রহণ বেআইনি হয়েছে, প্রায় একই ধরনের কারণ বর্ধমানের ওই জমির জন্যও প্রযোজ্য। তাই সেখানে ‘হাব’ করা যাবে না। পরে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়ে দেন, ‘হাব’-এর জন্য অন্যত্র জমি খোঁজার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে জেলা প্রশাসনকে।

জেলাশাসক বলেন, “আমরা নতুন জমি খুঁজে দেখছি।” তবে ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর সূত্রের

খবর, বর্ধমান শহর থেকে কিছুটা দূরে দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ের ধারে বামচাঁদাইপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালের পিছনে একটি জমি এ দিন বাছাই করা হয়েছে। ওই জমি আগেই দেখেছিলেন মিষ্টি ব্যবসায়ীরা। কিন্তু স্থানীয় কিছু আদিবাসী ওই জমির দখল নেন। দখল তুলতে গিয়ে ব্যর্থ হয় প্রশাসন।

জেলা সভাধিপতি দেবু টুডু বলেন, ‘‘আদিবাসীদের সঙ্গে কথা হয়েছে। এ বার ওঁরা জমি ছাড়তে রাজি হয়েছেন।’’ বামচাঁদাইপুরের জমি লাগোয়া এলাকাতেই আরও কিছু খাস জমি চিহ্নিত করা হয়েছে। এ ছা়ড়া, এক্সপ্রেসওয়ের ধারে আমড়া এলাকাতেও আর একটি জমি দেখা হয়েছে। সব মিলিয়ে ‘হাব’ গড়তে আর জমির অসুবিধে হবে না বলে প্রশাসনের কর্তাদের ধারণা। এক কর্তা জানাচ্ছেন, সব কিছু খুঁটিয়ে দেখার পরে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হলে আগামী সপ্তাহ থেকেই কাজ শুরু হতে পারে। তবে আলিশা মৌজার জমির কী হবে, তা নিয়ে ধন্দ এ দিনও কাটেনি। প্রশাসন কিছু বলেনি। জমিদাতারা এ দিনও ওই জমিতে গিয়ে উচ্ছ্বাস দেখিয়েছেন। দাবি করেছেন, জমি ফেরত চেয়ে আদালতে যাওয়ার চিন্তা-ভাবনা করছেন।

বর্ধমানের ওই জমির সমস্যা নিয়ে দলীয় স্তরে খোঁজ নিয়েছে তৃণমূলও। তৃণমূল সূত্রের খবর, জমিদাতারা তাঁদের জানিয়েছেন, জমি দেওয়া নিয়ে নানা আপত্তির কথা এলাকার বিধায়ক নিশীথবাবুকে জানিয়ে বিক্ষোভের রাস্তায় হাঁটেন তাঁরা। নিশীথবাবুর দাবি, জমিদাতাদের চিঠি তিনি পেয়েছেন। তবে তা খুলে দেখার সময় পাননি। তিনি বলেন, ‘‘ঘটনার সঙ্গে আমার সম্পর্ক নেই। তবে এটা ঠিক, মিষ্টি হাবের জন্য জমি বাছার সময় প্রশাসন আমাদের দলের সাহায্য নিলে সমস্যা দেখা দিত না।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

mishti hub Administration
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE