নিজস্ব চিত্র
কারও শুরুটা ছোটবেলায় গানের সঙ্গে নাচার অভ্যেস থেকে। কেউ লুকিয়ে দেখতেন নাচের ক্লাস। কেউ আবার স্কুলের অনুষ্ঠানে দিদিমণিদের উৎসাহে নাচ শুরু করেন। তারপরে ধীরে ধীরে সেটাই হয়ে গিয়েছে ভালবাসা। ইচ্ছে থাকলেও জীবন সংগ্রামে, পড়াশোনার ব্যস্ততায় সেটা অনেকসময়ই ঢাকা পড়ে যাচ্ছিল। তাঁদের সেই ইচ্ছেটাকেই ডানা মেলার সুযোগ করে দিয়েছে পিসি চন্দ্র মুগ্ধা নিবেদিত আনন্দবাজার পত্রিকার ‘অদ্বিতীয়া’। গত শনিবার শিলিগুড়ি সিটি সেন্টারে হয়েছে সেই অনুষ্ঠান।
ওই দিন ‘অদ্বিতীয়া’র শিলিগুড়ি আঞ্চলিক পর্বে নাচের বিভাগে প্রথম হয়েছেন শিলিগুড়ির সুকান্তপল্লির বাসিন্দা বীণাশ্রী ঘোষ। বাড়িতে নাচের চর্চা কখনও ছিল না। কিন্তু ওয়ার্ড উৎসবে, স্কুলের অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছিলেন নাচে। সেইসময় অনেকে নাচের তারিফ করায় বীণাশ্রীকে নাচের স্কুলে ভর্তি করে দিয়েছিলেন তাঁর মা মিতাশ্রী। তখন থেকেই শুরু নাচের প্রথাগত তালিম। এখন উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজিতে এমএ করছেন বীণাশ্রী। এটাই ‘ফাইনাল ইয়ার’। অদ্বিতীয়া’র জন্য আবেদন করতে বলেছিলেন তাঁর নাচের শিক্ষিকা সঞ্চিতা চক্রবর্তী। বীণাশ্রী বলছেন, ‘‘ডাক পাই তখনও ভাবিনি এ ভাবে সম্মান পাব। তবে মাথায় রাখতাম। ছোট-বড় যে কোনও জায়গাতেই নাচের ক্ষেত্রে যেন সেরা পারফরম্যান্স করতে পারি। এমএ পরীক্ষার মধ্যেও সেই চেষ্টা করেছি।’’ মা আর বাবা নারায়ণ ঘোষের উৎসাহেই এতদূর আসতে পেরেছেন বলে জানাচ্ছেন বীণাশ্রী। অদ্বিতীয়ার মূল পর্বে অংশ নেবেন তিনি।
আঞ্চলিক পর্বে দ্বিতীয় হয়েছেন শ্রেয়সী চক্রবর্তী। শিলিগুড়ির ডাবগ্রামের বাসিন্দা শ্রেয়সী স্কুলস্তর পর্যন্ত পড়েছেন শিলিগুড়ির বিভিন্ন স্কুলে। তারপরে কলকাতার গোখেল মেমোরিয়াল গার্লস কলেজ থেকে ইংরেজি নিয়ে পড়াশোনা। তারপরে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজিতে এমএ। নাচের প্রতি আগ্রহের জন্য পাঁচ বছর বয়সেই সঙ্গীতা চাকির নাচের স্কুলে ভর্তি করানো হয় তাঁকে। কিন্তু পড়াশোনার জন্য কলকাতা গেলে নাচ বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। আবার ২০১৩-তে কলকাতায় নাচের শিক্ষিকা পল্লবী দে’র কাছে তালিম শুরু হয়। শ্রেয়সী জানান, ডোভার লেন নাচের প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছিলেন বছর পাঁচেক আগে। পদাতিক সেন্টারে বীরজু মহারাজের ওয়ার্কশপেও অংশ নিয়েছেন তিনি। শ্রেয়সী বলেন, ‘‘নাচকেই এবার পেশা হিসাবে বেছে নিতে চাইছি।’’
প্রতিযোগিতায় তৃতীয় মৌসুমী সেন এনজেপি মেন রোডে থাকেন। সূর্যসেন কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের ছাত্রী তিনি। বাড়ির কাছেই অগ্রণী সঙ্ঘে নাচের ক্লাস হত। তা দেখে আগ্রহ বাড়ে। তবে বাড়ির লোককে তা বলতে পারেননি। টিভিতে নাচ দেখে বাড়িতে লুকিয়ে অনুশীলন করতেন। পরে নবম শ্রেণিতে উঠে মা শিপ্রাদেবীকে বললে তাঁকে ভর্তি করা হয় মাখন শীলের নাচের ক্লাসে। উৎসাহ দিয়েছেন বাবা সঞ্জীব সেনও। মৌসুমীর কথায়, ‘‘সবার সামনে এ ভাবে নিজের নাচের অনুশীলন তুলে ধরতে পারব কখনও ভাবিনি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy