ছবি: সংগৃহীত।
চোদ্দো বছর ধরে আদালতে ঘুরে শেষ পর্যন্ত চাকরি ফিরে পেলেন প্রতিবন্ধী শিক্ষক।
বুধবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি শম্পা সরকার পূর্ব মেদিনীপুরের ডিআই-কে নির্দেশ দিয়েছেন আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ওই শিক্ষককে নিয়োগ করতে হবে এবং তাঁর যাবতীয় বকেয়া মিটিয়ে দিতে হবে।
২০০৫ সালে স্কুল সার্ভিস কমিশনের পরীক্ষায় পাশ করার পর পূর্ব মেদিনীপুর রামনগর এলাকায় করঞ্জি বিদ্যাসাগর হাইস্কুলে বিজ্ঞান শিক্ষক হিসাবে নিয়োগপত্র পান সজল কুমার মাইতি। স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছে নিজের নিয়োগপত্রের সঙ্গে প্রতিবন্ধী শংসাপত্রও দেন। কিন্তু অভিযোগ, তৎকালীন স্কুলের পরিচালন কমিটি তাঁর প্রতিবন্ধী শংসাপত্র জাল বলে জানান। ওই শিক্ষকের দাবি, এই নিয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তাঁর বিবাদ বাধে। তার জরে তাঁকে স্কুলে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়। এর পর তিনি সমস্যার কথা জেলা স্কুল পরিদর্শককে জানান। কিন্তু সেখানে কোনও সুরাহা না হওয়ায় শেষ পর্যন্ত তিনি হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। সেই সময় বিচারপতি শুভ্রকমল মুখোপাধ্যয়ের ডিভিশন বেঞ্চ সজলবাবুকে স্কুলে ঢুকতে দিতে নির্দেশ দিলেও স্কুল পরিচালন কমিটির সদস্যরা সেই নিদের্শ মানেননি। তাঁরা সজলবাবুকে শর্ত দেন, মামলা প্রত্যাহার করলে তবেই তাঁরা তাঁকে স্কুলে ঢুকতে দেবেন। ২০০৮ সালে মামলা প্রত্যাহার করে নেন ওই শিক্ষক। কিন্তু তার পরেও তাঁকে স্কুলে ঢুকতে বাধা দেওয়া হত। এমনকী ছাত্রদের সামনে হেনস্থা করা হত বলে অভিযোগ। তাঁর বেতনও আটকে দেওয়া হয়েছিল। নিরুপায় সজলবাবু গত বছর ফের হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন এবং সমস্ত ঘটনা জানান। বুধবার মামলার শুনানিতে মামলাকারীর আইনজীবী আশীষ কুমার চৌধুরী আদালতে জানান, সজল কুমার মাইতি এসএসসি পরীক্ষায় পাশ করে ওই স্কুলে শিক্ষকতার চাকরি পেয়েছেন। সে ক্ষেত্রে স্কুলের পরিচালন কমিটির কোনও অধিকার নেই এসএসসির নিয়োগ নিয়ে প্রশ্ন তোলার। রাজ্যের শিক্ষা দফতর যেখানে নিয়োগের সুপারিশ করছে সেখানে তাঁকে স্কুলে ঢুকতে কেউ বাধা দিতে পারেন না। সব শুনে বিচারপতি শম্পা সরকার পূর্ব মেদিনীপুরের ডি আই কে নির্দেশ দেন ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে শিক্ষককে নিয়োগ করতে হবে। সেই সঙ্গে তাঁর এ যাবৎ সমস্ত বকেয়া মিটিয়ে দিতে হবে।
এব্যাপারে স্কুলের প্রধান শিক্ষক ওঙ্কারনাথ মান্নার দাবি, ‘‘ওই শিক্ষক নিজেই স্কুল থেকে সরে গিয়েছিলেন। প্রতিবন্ধকতা নিয়ে উনি যে শংসাপত্র জমা দেন তা নিয়ে আপত্তি ছিল। হাইকোর্টে এখনও সেই মামলার রায় হয়নি। তবে এ দিন ওই শিক্ষক কাজে যোগ দিয়েছেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy