Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
Team PK

‘টিম পিকে’-র পরামর্শে কাজ, বাগান শ্রমিকের ঘরে ঘরে জল

জলপাইগুড়িতে পিকে (প্রশান্ত কিশোর) টিমের সমীক্ষা রিপোর্টে অন্যতম স্থান পেয়েছিল চা বাগানগুলিতে পানীয় জলের সমস্যা।

প্রশান্ত কিশোর। —ফাইল চিত্র

প্রশান্ত কিশোর। —ফাইল চিত্র

অনির্বাণ রায়
জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ১৬ জানুয়ারি ২০২০ ০২:১৫
Share: Save:

রাজ্যে বিগত লোকসভা ভোটে উত্তরবঙ্গে তৃণমূলের শোচনীয় হারের পরে জলপাইগুড়িতে পিকে (প্রশান্ত কিশোর) টিমের সমীক্ষা রিপোর্টে অন্যতম স্থান পেয়েছিল চা বাগানগুলিতে পানীয় জলের সমস্যা। সেই সমস্যার সমাধানেই এবার পদক্ষেপ করল জলপাইগুড়ি জেলা প্রশাসন।

জলপাইগুড়ি জেলা সদর হোক অথবা ডুয়ার্সের পাহাড়ি জমি, সর্বত্র চা বাগানে পানীয় জলের সরবরাহ অব্যবস্থা নিয়ে বিস্তর অভিযোগ ছিল অনেকদিন ধরে। এখনও রয়েছে। জলপাইগুড়ি জেলা প্রশাসন এবং একসঙ্গে সব চা বাগানে পানীয় জলের সমস্যা সমাধানে পদক্ষেপ করল। জেলার প্রায় সব পঞ্চায়েতেই একটা না একটা চা বাগান রয়েছেই। ওইসব চা বাগানে কী ভাবে পানীয় জল সরবরাহ করা যায়, তা নিয়ে গ্রাম পঞ্চায়েতগুলির কাছ থেকে প্রস্তাব চেয়েছে জেলা প্রশাসন। প্রশাসনের সিদ্ধান্ত, গ্রাম পঞ্চায়েতই এই প্রকল্প রূপায়িত করবে। পঞ্চায়েতের কাছে চতুর্দশ অর্থ কমিশনের বরাদ্দ রয়েছে। সেখান থেকে এই প্রকল্পে ব্যয় করা যেতে পারে। অথবা একশো দিনের কাজের প্রকল্প থেকেও খরচ করা যেতে পারে বলে জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর।

জলপাইগুড়ির জেলাশাসক অভিষেক তিওয়ারি বুধবার বলেন, “চা বাগানে পানীয় জল সরবরাহ আপাতত আমাদের অগ্রাধিকার। সব চা বাগানেই জলের পর্যাপ্ত সরবরাহ হবে। গ্রাম পঞ্চায়েতগুলিকে প্রকল্প তৈরি করতে বলা হয়েছে। কিছু জায়গায় কাজও শুরু হয়েছে।”

ইতিমধ্যে এই প্রকল্প রূপায়ণের জন্য একটি মডেলও বেছেছে প্রশাসন। মেটেলিতে একশো দিনের কাজে ঝোরা থেকে জল এনে পাইপ লাইনে পৌঁছনো হচ্ছে। সেই মডেলকে কাজে লাগিয়ে চা বাগানের বাড়ি বাডিও জল পৌঁছনো সম্ভব বলে দাবি। কোনও কোনও ক্ষেত্রে বাড়িতে না হলেও প্রতিটি শ্রমিক মহল্লায় অন্তত জলের পাইপটা নিয়ে যাওয়া যাবে। জেলা প্রশাসন আরও জানিয়েছে, সমতল এলাকায় যেখানে ঝোরা নেই, সেখানে অন্য উপায় খুঁজবে পঞ্চায়েত। নাগরাকাটা ব্লকে জলের সমস্যা সবচাইতে বেশি। সেখানে ঝোরা থেকে জল আনার মডেল সফল হবে বলে প্রশাসন মনে করছে।

শীতকালের মধ্যেই প্রশাসন কাজ সেরে ফেলতে চাইছে। আগামী গ্রীষ্মের আগেই চা বাগানে পাইপের মাধ্যমে জল পাঠানোর লক্ষ্য স্থির করে রেখেছে প্রশাসন। সাংসদ ও বিধায়কদের এলাকা উন্নয়ন তহবিলে কিছু চা বাগানে জল সরবরাহের প্রকল্প অনুমোদন পেয়েছে। তবে তা বিক্ষিপ্ত।

প্রশাসনিক সূত্রের খবর, সব বাগানের জন্য নতুন করে জল দেওয়া নিয়ে ভাবা হচ্ছে। বাগানে পানীয় জলের সমস্যা নতুন কিছু ব্যাপার নয়। শ্রমিকদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে এই সমস্যা চললেও কোনও সরকারই সমাধান করতে পারেনি। এ নিয়ে তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের একাংশের মধ্যেও ক্ষোভ রয়েছে।

নাগরাকাটার এক তৃণমূল শ্রমিক নেতার কথায়, “জলই তো প্রথম প্রয়োজন। সেটাই তো এত দিন ধরে চা বাগানের শ্রমিকেরা পাননি। এই সব কারণেই বিজেপি ভুলভাল বুঝিয়ে শ্রমিকদের নিজেদের দিকে টানার চেষ্টা করে চলেছে।” গত লোকসভা ভোটে চা বলয়ে ব্যাপক ভোট পেয়েছিল বিজেপি। ভোটের পরে তৃণমূল নেতা ও মন্ত্রীরাও দাবি করেছিলেন, চা বাগানে বিশেষ নজর দিচ্ছে প্রশাসন।

বিজেপির জেলা সভাপতি বাপি গোস্বামীর মন্তব্য, “ভোটে হারার পরে জল দিয়ে লাভ কী! আমাদের সাংসদও বিভিন্ন চা বাগানে জলের প্রকল্প করতে নিজের এলাকা উন্নয়ন তহবিল থেকে টাকা দিচ্ছেন।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE