শোকার্ত: শুকদেব পোল্যের পরিজনরা। —নিজস্ব চিত্র।
এজেন্ট হিসেবে বেআইনি লগ্নি সংস্থায় টাকা রাখার জন্য এক সময় এলাকার বাসিন্দাদের উৎসাহিত করেছিলেন তিনি। কিন্তু সারদা-কাণ্ডের পরে রাজ্যের যে সব বেআইনি লগ্নি সংস্থা ঝাঁপ বন্ধ করে, সেই তালিকায় ছিল তাঁর সংস্থাও।
ফলে, গ্রাহকদের টাকা মেটাতে পারেননি তিনি। টাকা না-পেয়ে তেমনই এক গ্রাহক লোকজন নিয়ে এসে বুধবার রাতে তাঁর মেয়েকে অপহরণের হুমকি দেন বলে অভিযোগ। তার পর কীটনাশক খেয়ে আত্মঘাতী হলেন উলুবেড়িয়ার বড় আমসা গ্রামের শুকদেব পোল্যে (৫০) নামে ওই এজেন্ট।
এই নিয়ে সারদা-কাণ্ড সামনে আসার পরে এ রাজ্যে বেআইনি লগ্নি সংস্থার শতাধিক এজেন্ট আত্মঘাতী হলেন। শুকদেববাবু এক সময়ে গৃহশিক্ষকতা এবং চাষবাস করতেন। বন্ধ হওয়ার আগে ‘মাতৃভূমি প্রাইভেট লিমিটেড’, ‘এনভিডি সোলার’ এবং ‘পালস লিমিটেড’ নামে তিনটি বেআইনি লগ্নি সংস্থার এজেন্ট ছিলেন তিনি।
বছরখানেক আগে কাঠা দশেক জমি কিনে পান বরজ তৈরি করেন শুকদেববাবু। জমি ঠিকা নিয়ে ধান চাষও করতেন। টালির চালের এক কামরার ঘরেই ছিল তাঁর সংসার।
রেবতীর দাবি, তাঁর স্বামী জমি বিক্রি করে গ্রাহকদের জমা দেওয়া আসল টাকা ফেরতের কথা দিয়েছিলেন। কিন্তু বুধবার রাতে যিনি হুমকি দিয়ে যান, তিনি তা মানতে চাননি। তিনি ‘মাতৃভূমি’তে ১৪ হাজার ৩০০ টাকা রেখেছিলেন। ‘পলিসি’র মেয়াদ ফুরনোয় লভ্যাংশ ২৬ হাজার ৬০০ টাকা দাবি করতে থাকেন ওই গ্রাহক।
বুধবার রাত ৮টায় স্ত্রী ও দশম শ্রেণির পড়ুয়া মেয়ে অদিতির সঙ্গে বারান্দায় বসেছিলেন শুকদেববাবু। সেই সময় ওই গ্রাহক জনাসাতেক যুবককে নিয়ে এসে ফের টাকার দাবি করতে থাকেন। গ্রাহকের সঙ্গে আসা যুবকেরা অবশ্য শুকদেববাবুর মাধ্যমে টাকা জমা করেননি। রেবতী বলেন, ‘‘ওই গ্রাহক কোনও কথা শুনতে চাননি। ওঁরা হুমকি দেন। ভাসুর ওই গ্রাহকের পায়ে পড়েন। তখনই ওই গ্রাহক মেয়েকে স্কুলে যাওয়ার পথে অপহরণের হুমকি দেন। এই অপমান স্বামী সহ্য করতে পারেননি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy