Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

আদিবাসী ভোটে চোখ অমিতের

শুধু গাজল থেকেই নয়, হবিবপুর, পুরাতন মালদহ, বামনগোলা ব্লক থেকেও প্রচুর আদিবাসী কার্যত উৎসবের মেজাজে যোগ দেন সভায়।

মঞ্চে: অমিত শাহ। —নিজস্ব চিত্র।

মঞ্চে: অমিত শাহ। —নিজস্ব চিত্র।

অভিজিৎ সাহা
পুরাতন মালদহ শেষ আপডেট: ২৩ জানুয়ারি ২০১৯ ০১:২৮
Share: Save:

পরনে লাল সাদা শাড়ি। মাথায় বিভিন্ন রঙে রাঙানো মাটির কলসী। মঙ্গলবার দুপুরে রঙিন পোশাকে ধামসা, মাদলের তালে কোমর দুলিয়ে পুরাতন মালদহের সাহাপুরে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহের জনসভায় যোগ দিলেন গাজলের দেওতলা থেকে আসা একদল আদিবাসী মহিলা সমর্থক। শুধু গাজল থেকেই নয়, হবিবপুর, পুরাতন মালদহ, বামনগোলা ব্লক থেকেও প্রচুর আদিবাসী কার্যত উৎসবের মেজাজে যোগ দেন সভায়।

পঞ্চায়েত ভোটের সময় থেকেই মালদহ, উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুরে বিজেপির সঙ্গে আদিবাসীদের সখ্যের প্রমাণ মিলেছে। অনেক বিজেপি প্রার্থীই আদিবাসীদের সঙ্গে নিয়ে মনোনয়ন পত্র জমা দিতে গিয়েছিলেন। সেই রেশই ধরা রইল এ দিনের সভায়। দক্ষিণ দিনাজপুরের তপন, কুশমণ্ডি এবং উত্তর দিনাজপুরের করণদিঘি, ইটাহার, হেমতাবাদ, কালিয়াগঞ্জ ব্লক থেকেও প্রচুর আদিবাসী সমর্থক জনসভা যোগ দিয়েছেন বলে দাবি বিজেপির জেলা নেতৃত্বের। এ দিন সাহাপুরে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের বাইপাসের ধারে ওই সভায় আদিবাসী সমর্থকদের ভিড়ও ছিল চোখে পড়ার মতোই।

পঞ্চায়েত নির্বাচনে মালদহে জেলা পরিষদের ৩৭টির মধ্যে ৬টি দখল করেছে বিজেপি। ৬টি আসনই আদিবাসী অধ্যুষিত পুরাতন মালদহ, হবিবপুর এবং বামনগোলা ব্লকে। ওই তিনটি ব্লকের মধ্যে দু’টি পঞ্চায়েত সমিতি একক ভাবে বিজেপি পেয়েছে। মালদহের জেলা সভাপতি সঞ্জিত মিশ্র বলেন, “আদিবাসীরা নিজেদের ভাল মন্দ বুঝতে পারছেন। তাই বিজেপির দিকে ঝুঁকছেন।”

বসে নেই শাসক দল তৃণমূলও। আদিবাসীদের টানতে ইতিমধ্যেই উৎসব করা হয়েছে ব্লকে ব্লকে। এ বার আদিবাসী সম্প্রদায়ের মন জয় করতে তাদের পুজোর জন্য ‘থান’ তৈরির কথাও ঘোষণা করা হয়েছে। লোকসভা ভোটের আগেই তা করে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ৩৭ হাজার টাকা করে বরাদ্দ করা হচ্ছে থান তৈরির জন্য। থানের জন্য জমি না থাকলে পাট্টার ব্যবস্থাও করা হচ্ছে। উত্তর দিনাজপুরের গোয়ালপোখরের বিডিও রাজু শেরপা বলেন, ‘‘এই ব্লকে ৫০টি থান তৈরি করা হবে।’’ সূত্রের খবর, ইতিমধ্যে থান করার জমিও চিহ্নিত হয়েছে। আদিবাসী গাওতার উত্তর দিনাজপুর জেলা সংগঠনের সদস্য মাটরু হাঁসদা বলেন, ‘‘থানের জন্য জমি না পেয়ে আমরা জঙ্গলে পুজো করতাম দেবতাকে। সেই জমিতে নিজস্ব অধিকার না থাকায়, পরের বার পুজো করার জন্য অন্য জায়গা খুঁজতে হত। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নজরে আসার পর তিনি উদ্যোগী হয়ে থান তৈরি করার বিষয়ে নির্দেশ দেন।’’

কংগ্রেসের মালদহ জেলা সভানেত্রী তথা সাংসদ মৌসম নুর বলেন, “বিজেপি সাম্প্রদায়িক দল। নিরীহ আদিবাসীদের ধর্মের নামে উস্কে দিয়ে রাজনীতি করেছে বিজেপি।” একই সুরে বিজেপিকে কটাক্ষ করেছেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেনও। তবে বিজেপি নেতৃত্বর দাবি, আদিবাসীরা তাদের দিকে আসছে দেখে তৃণমূল বিচলিত। তৃণমূলের দাবি, আদিবাসীদের হারিয়ে যাওয়া সংস্কৃতিকে রক্ষা করতেই উদ্যোগী মুখ্যমন্ত্রী। এর সঙ্গে ভোটের কোনও সম্পর্ক নেই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE