Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

শপথেও জোটে থাকার ইঙ্গিত মান্নান-সুজনের

তাঁর দলের বিধায়ক সংখ্যা ৪৪। তবু দেখে মনে হল ৭৭! আনুষ্ঠানিক ভাবে কংগ্রেসের পরিষদীয় দলনেতা হিসাবে সনিয়া গাঁধী এখনও কাউকে মনোনীত করেননি। বিধানসভায় বিরোধী দলনেতা হিসাবেও কেউ দায়িত্ব পাননি। অথচ শনিবার দুপুরে বিধানসভায় আব্দুল মান্নানকে দেখে মনে হল তিনিই বুঝি অলিখিত বিরোধী দলনেতা! কেন?

ভোটের ফল ঘোষণার পর থেকেই হলদিয়ায় বামেদের উপর হামলা হচ্ছে বলে অভিযোগ। এই কেন্দ্রে জয়ী সিপিএম বিধায়ক তাপসী মণ্ডলের বাড়ির সামনে দু’দিন আগে বোমা ছোড়া হয়। ভাঙচুর করা হয়েছিল গিরিশ মোড়ের সিপিএম কার্যালয়ও। শনিবার সেই কার্যালয় ঘুরে দেখলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী ও সিপিএম নেতা রবীন দেব। হলদিয়ায় এ দিন জোটের মিছিলে নেতৃত্বও দেন তাঁরা। ছবি: পার্থপ্রতিম দাস।

ভোটের ফল ঘোষণার পর থেকেই হলদিয়ায় বামেদের উপর হামলা হচ্ছে বলে অভিযোগ। এই কেন্দ্রে জয়ী সিপিএম বিধায়ক তাপসী মণ্ডলের বাড়ির সামনে দু’দিন আগে বোমা ছোড়া হয়। ভাঙচুর করা হয়েছিল গিরিশ মোড়ের সিপিএম কার্যালয়ও। শনিবার সেই কার্যালয় ঘুরে দেখলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী ও সিপিএম নেতা রবীন দেব। হলদিয়ায় এ দিন জোটের মিছিলে নেতৃত্বও দেন তাঁরা। ছবি: পার্থপ্রতিম দাস।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৯ মে ২০১৬ ০৩:৩০
Share: Save:

তাঁর দলের বিধায়ক সংখ্যা ৪৪। তবু দেখে মনে হল ৭৭! আনুষ্ঠানিক ভাবে কংগ্রেসের পরিষদীয় দলনেতা হিসাবে সনিয়া গাঁধী এখনও কাউকে মনোনীত করেননি। বিধানসভায় বিরোধী দলনেতা হিসাবেও কেউ দায়িত্ব পাননি। অথচ শনিবার দুপুরে বিধানসভায় আব্দুল মান্নানকে দেখে মনে হল তিনিই বুঝি অলিখিত বিরোধী দলনেতা! কেন?

এ দিন থেকে বিধানসভায় নব নির্বাচিত বিধায়কদের শপথ শুরু হয়েছে। দেখা গেল, শুধু নিজের দলের বিধায়কদের শপথের ব্যবস্থা করে থেমে থাকলেন না মান্নান, যৌথ ভাবে শপথ নেওয়ার আগে বাম বিধায়কদেরও কংগ্রেস পরিষদীয় দলের ঘরে ডেকে নিলেন। এমনকী, আপাত দর্শনে ঠাহর করতে অসুবিধা হল, বাম-কংগ্রেস দু’টি পৃথক দল নাকি দুয়ে মিলে একটাই বিরোধী দল।

মান্নান বলেন, ‘‘সনিয়া গাঁধী কাকে বিরোধী দলনেতা পদে মনোনীত করবেন, জানি না। যে হেতু জোট হিসাবে লড়েছি, তাই শপথের ক্ষেত্রেও কংগ্রেস-সিপিএম বিধায়কদের একসঙ্গে যাওয়ার উপরে জোর দিয়েছি। সিপিএম নেতৃত্বও আমার কথা মেনে নিয়েছেন।’’ বিধায়কদের শপথ গ্রহণ পর্বের প্রথম দিনে জোটের ১১ জন বিধায়ক একসঙ্গে শপথ নিয়েছেন। সূত্রের মতে, তার আগে পারস্পরিক সমন্বয় রেখে চলেন মান্নান এবং যাদবপুর থেকে জয়ী সিপিএম বিধায়ক সুজন চক্রবর্তী। কারণ, সুজনকে পরিষদীয় দলনেতা করার সিদ্ধান্ত আগেই নিয়েছে সিপিএম।

বিধানসভার নৌসর আলি কক্ষে এ দিন সাড়ে তিনটে থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ বিধায়কদের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান শুরু হয়। প্রোটেম স্পিকার হিসাবে শপথ-বাক্য পাঠ করান প্রবীণ তৃণমূল বিধায়ক জটু লাহিড়ী। উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, হাওড়া, হুগলি এবং কলকাতার বিধায়কদের শপথ গ্রহণ ছিল এ দিন। এই পাঁচ জেলায় কংগ্রেসের পাঁচ জন এবং সিপিএমের ছ’জন বিধায়ক।

মমতা এবং মন্ত্রিসভার সদস্যরা শপথ নেওয়ার পরে বিরোধী দলের বিধায়করা যাতে একসঙ্গে গিয়ে শপথ নিতে পারেন, তার জন্য মান্নান জটুবাবুকে বলে রেখেছিলেন। তাঁর অনুরোধ মেনে সুজনবাবু সিপিএম বিধায়কদের সঙ্গে নিয়ে হাজির হন কংগ্রেস পরিষদীয় দলের ঘরে। তখন উপস্থিত অসিত মিত্র-সহ কংগ্রেস বিধায়করা। মান্নান-সুজন পরস্পরকে আলিঙ্গন করেন। উত্তর দমদম থেকে জয়ী তন্ময় ভট্টাচার্য এবং কামারহাটি থেকে জয়ী মানস মুখোপাধ্যায়কে অভিনন্দন জানিয়ে মান্নান বলেন, ‘‘আপনারা জায়েন্ট কিলার। সভার মধ্যেও একসঙ্গে লড়তে হবে।’’ পাণ্ডুয়ার বিধায়ক শেখ আমজাদ হোসেন-সহ অন্যরা নিজেদের পরিচয় দেন। এর পরে মান্নান একটি সাদা কাগজে বাগদার দুলাল বর, নোয়াপাড়ার মধুসূদন ঘোষ, বাদুড়িয়ার আব্দুর রহিম কাজি-সহ তাঁদের দলের পাঁচ বিধায়ক এবং সিপিএমের ছয় বিধায়কের নাম লিখে জটুবাবুর কাছে পাঠান। কংগ্রেস এবং সিপিএমের মোট ১১ জন বিধায়ককে সঙ্গে নিয়ে মান্নান শপথ নিতে যান। মুখ্যমন্ত্রী তখন কক্ষ ত্যাগ করেছেন। শাসক দলের বিধায়কদের তখন শপথ গ্রহণ চলছে। হঠাৎ বিরোধী পক্ষের এত জন বিধায়ককে দেখে তৃণমূল বিধায়করাও অবাক হয়ে যান। হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। আগেই মান্নান-সহ অন্য বিধায়কদের নাম ডাকা হয়েছিল। কিন্তু তাঁরা কক্ষে না থাকায় শপথ নিতে পারেননি। জটুবাবু মান্নানকে বলেন, তিনি যেন তৃণমূলের বিধায়কদের সঙ্গেই শপথ নেন। কিন্তু মান্নান রাজি হননি। পরে তিনি নিজের দলের অসিতবাবু এবং সিপিএমের সুজন-তন্ময়ের সঙ্গে শপথ নেন। সিপিএম ও কংগ্রেসের বাকি বিধায়করাও একসঙ্গেই শপথ নেন। সবংয়ের কংগ্রেস বিধায়ক মানস ভুঁইয়াও শপথ নেন। তাঁর সোমবার শপথের দিন ছিল। কিন্তু ব্যক্তিগত কারণে আসতে পারবেন না বলেই মানসবাবু এ দিন শপথ নেন। তবে আলাদা ভাবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE