সাড়ে সাতশো কিলোমিটার দূরে শিলং-এর আবহাওয়া কোন দিন কেমন থাকবে, তার উপরে নির্ভর করছে অন্ডাল বিমানবন্দরের ভাগ্য।
যে বিমানসংস্থার উপরে ভরসা করে ১৮ মে থেকে অন্ডালে উড়ান চালু করার পরিকল্পনা হয়েছে, সেই অ্যালায়েন্সের হাতে রয়েছে একটি মাত্র বিমান। অন্ডালে যাওয়ার আগে তা যাবে শিলং। বছরের একটা বড় অংশ জুড়ে শিলংয়ে আবহাওয়া এতই খারাপ থাকে যে, বিমান নামতে পারে না। শিলংয়ের সেখানকার আকাশ পরিষ্কার থাকলে তবেই সময় মতো কলকাতা ফিরে অন্ডাল যেতে পারবে বিমানটি।
কলকাতায় ফিরতে দেরি হয়ে গেলে আর অন্ডাল উড়ে যাওয়া সম্ভব নয়। কারণ, ডিরেক্টরেট জেনারেল অব সিভিল অ্যাভিয়েশনের নিয়ম অনুযায়ী এক জন পাইলট বা বিমানসেবিকা প্রতি দিন একটা নির্দিষ্ট সময় অবধি ডিউটি করতে পারেন। তার বেশি নয়। কলকাতায় ফিরতে রাত হয়ে গেলে বিমানসেবিকা ও পাইলটের কাজের সময়সীমা পেরিয়ে যাবে। অন্য বিমানসেবিকা বা পাইলট দিয়ে অন্ডালে বিমান নিয়ে যাওয়ার মতো পর্যাপ্ত কর্মী যে তাঁদের নেই, সে কথা মানছেন অ্যালায়েন্সের অনেকেই।
ঘোষণা অনুযায়ী ১৮ মে, সোমবার থেকে এয়ার ইন্ডিয়ার সহযোগী সংস্থা অ্যালায়েন্স এয়ার অন্ডাল থেকে উড়ান চালাবে। ঠিক হয়েছে, বিকেল ৫টা ৫ মিনিটে কলকাতা থেকে ৪২ আসনের ওই এটিআর বিমানটি উড়ে পৌনে ছ’টায় নামবে অন্ডালে। আবার ৬টা ৫ মিনিটে সেখান থেকে উড়ে ৬টা ৫০ মিনিটে নামবে কলকাতায়। শুক্রবার বাদ দিয়ে সপ্তাহে বাকি সব দিন এই উড়ান চলার কথা। ঘোষণায় বলা হয়েছে, দুপুর-বিকেলে মুম্বই-দিল্লি থেকে আসা যাত্রীরা ওই বিমানে যেমন অন্ডাল যেতে পারবেন, তেমনই অন্ডাল থেকে আসা যাত্রীরা সন্ধ্যা এবং রাতের উড়ান ধরে দিল্লি-মুম্বই যেতে পারবেন।
কিন্তু বিমানসংস্থা সূত্রের খবর, সবই নির্ভর করছে শিলং-এর আবহাওয়ার উপরে। ওই একটি বিমানই সপ্তাহে সাত দিন উড়ে বেড়ায় কলকাতা থেকে উত্তর-পূর্বের বিভিন্ন শহরে। সূচি অনুযায়ী সোম, বুধ, শুক্র এবং রবি— এই চার দিন ভোর ছ’টা নাগাদ কলকাতা থেকে বিমানটি গুয়াহাটি যায়। সেখান থেকে লীলাবাড়ি। আবার গুয়াহাটি হয়ে কলকাতায় ফেরে বেলা বারোটা নাগাদ। আর মঙ্গল, বৃহস্পতি এবং শনিবার ভোরে ওই একই সময়ে কলকাতা থেকে উড়ে শিলচর, তেজপুর ঘুরে আবার এ শহরে ফিরে আসে সাড়ে এগারোটা নাগাদ। তার পরেও বিশ্রাম নেই। শুক্রবার বাদ দিয়ে সপ্তাহে ছ’দিন বিমানটি দুপুর ১২টা ৩০ মিনিটে উড়ে যায় শিলং। ফেরার কথা থাকে সাড়ে তিনটেয়। কিন্তু মাসে গড়ে ১২ দিন তা ফেরে রাত আটটায়।
কেন? কারণ বছরের দীর্ঘ কয়েক মাস আবহাওয়া প্রতিকূল থাকে পাহাড় ঘেরা শিলং-এ। বৃষ্টি, বজ্রগর্ভ মেঘ, কুয়াশা ঘিরে থাকে শিলং বিমানবন্দর। বহু দিনই কলকাতা থেকে উড়ে গিয়ে শিলং-এ নামতে পারে না ছোট বিমানটি। মুখ ঘুরিয়ে চলে যেতে হয় গুয়াহাটি। সেখানে অপেক্ষা করতে হয়। যদি শিলং-এর আকাশ পরিষ্কার হয়, তা হলে আবার উড়ে যেতে হবে। তবে বহু দিনই সে সুযোগ হয় না। তখন শিলং-এ অপেক্ষমান যাত্রীদের গাড়িতে নিয়ে যেতে হয় গুয়াহাটি। যাতে তাঁরা কলকাতায় আসতে পারেন। এক অফিসারের কথায়, ‘‘শিলং থেকে সড়ক পথে গুয়াহাটি চার ঘণ্টা লাগে। ততক্ষণ বিমানটি বসে থাকে গুয়াহাটিতে।’’ ফলে কলকাতায় ফিরতে রাত হয়ে যায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy