Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

সভায় ভাবী প্রধানদের সতর্ক করলেন অনুব্রত

প্রথম বছরে কাজ কেমন করেছেন, কোনও অভিযোগ নেই তো— দু’টি প্রশ্নের উত্তর ইতিবাচক হলে তবেই মিলবে দ্বিতীয় বছরেও পঞ্চায়েত প্রধান পদে থেকে যাওয়ার সুযোগ। রবিবার বোলপুরের জেলা তৃণমূল কার্যালয়ে বৈঠক থেকে ভাবী প্রধানদের জন্য এ ভাবেই সতর্কবার্তা দিয়ে রাখলেন জেলা তৃণমূলের সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল।

বোলপুরের বৈঠকে। নিজস্ব চিত্র

বোলপুরের বৈঠকে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
বোলপুর শেষ আপডেট: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৩:৩৩
Share: Save:

প্রথম বছরে কাজ কেমন করেছেন, কোনও অভিযোগ নেই তো— দু’টি প্রশ্নের উত্তর ইতিবাচক হলে তবেই মিলবে দ্বিতীয় বছরেও পঞ্চায়েত প্রধান পদে থেকে যাওয়ার সুযোগ। রবিবার বোলপুরের জেলা তৃণমূল কার্যালয়ে বৈঠক থেকে ভাবী প্রধানদের জন্য এ ভাবেই সতর্কবার্তা দিয়ে রাখলেন জেলা তৃণমূলের সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল।

অনুব্রতর কথায়, ‘‘আমি কোনও প্রধানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির খবর পেলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জানাব, দলের সভাপতি সুব্রত বক্সীকে জানাব কিংবা জেলা পর্যবেক্ষক ফিরহাদ হাকিমকে জানাব। দুর্নীতির যোগ মিললে এক বছর পরে তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হবে। দলকে জানিয়েই সব করা হবে। এ বিষয়ে প্রত্যেক প্রধান ও উপপ্রধানকে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে।’’

এক বছরের মাথায় প্রধানের কাজের মূল্যায়ন করার ঘোষণায় চর্চা শুরু হয়েছে জেলার রাজনৈতিক মহলে। এ বারের পঞ্চায়েত ভোটে জেলার ত্রি-স্তরেই বিপুল প্রাধান্য থেকেছে শাসকদল তৃণমূলের। জেলা পরিষদের ৪২টি আসনের প্রতিটি, ১৯টি পঞ্চায়েত সমিতির সব ক’টি এবং ১৬৭টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে ১৬৪টি গ্রাম পঞ্চায়েতে বোর্ড গড়ার পথে এগিয়ে রয়েছে তৃণমূল। জেলা তৃণমূলের একটি শিবিরের কথায়, এই পরিসংখ্যান দেখে শুধু আনন্দ পেলে হবে না। সতর্কও হতে হবে। কেন?

ওই শিবিরের ব্যাখ্যা: কার্যত বিনা লড়াইয়ে যুদ্ধ জিতে যাওয়ায় দলের নীচুস্তরে নিয়ন্ত্রণ আলগা হতে পারে। বাড়তে পারে কোন্দলের সম্ভাবনা। সেখানে এক বছরের মাথায় মূল্যায়নের তাগিদ থাকায় কাজে গতি আসতে পারে। আবার উল্টোটা হলে সরানোর পথ তো খোলা থাকছেই। সিপিএম, বিজেপির মতো বিরোধী দলের নেতাদের দাবি, গোষ্ঠীকোন্দলে রাশ টানতেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন জেলা তৃণমূলের নেতারা।
বিজেপির বীরভূম জেলা সভাপতি রামকৃষ্ণ রায়ের প্রতিক্রিয়া, ‘‘কে কতটা টাকা তুলতে পারবেন, তার উপরে ভিত্তি করে পঞ্চায়েতের দায়িত্ব দেওয়া হয়। এই পদ্ধতি অনেকটা এ রকম, ভাই এক বছরের মধ্যে তোমাকে দায়িত্ব দিলাম, ঠিক করে টাকা তুলতে না পারলেই সরিয়ে অন্য কাউকে আনা হবে। এ ছাড়াও তৃণমূলে এত কোন্দল, সমস্যা। সেখানেও রাশ টানার কৌশল ছাড়া আর কিছুই নয়।’’ সিপিএমের বীরভূম জেলা সম্পাদক মনসা হাঁসদার কথায়, ‘‘তৃণমূল দলটাই দুর্নীতির প্রতিষ্ঠান। সেখানে এক বছরের জন্য প্রধানকে রেখে, পরে প্রয়োজনে সরিয়ে দেওয়া অর্থ আত্মসাতের নতুন কৌশল ছাড়া আর কিছুই নয়। এতে সাধারণ মানুষের কোনও স্বার্থ রক্ষিত হবে না।’’

বিরোধীদের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন জেলার তৃণমূল নেতারা। জেলা তৃণমূলের মতে, পঞ্চায়েতে উন্নয়ন করতে, প্রতিযোগিতার মনোভাব তৈরি করতেই এই কৌশল নেওয়া হয়েছে। এ দিনের বৈঠকেই বীরভূমের ১৯টি ব্লক এবং মঙ্গলকোট, কেতুগ্রাম, আউশগ্রামের পাঁচটি ব্লক সহ মোট ২৪টি ব্লকের প্রধান ও উপপ্রধান কারা হচ্ছেন সে বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এর পর প্রতিটি ব্লকের পর্যবেক্ষকরা নব নির্বাচিতদের গিয়ে জানিয়ে দেবেন কে প্রধান এবং কে উপপ্রধান হয়েছেন। অনুব্রতর কথায়, ‘‘এ বছর বেশির ভাগই নতুন মুখ।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE