Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

বালি মাফিয়ার দৌরাত্ম্য, শুনে চটলেন অনুব্রত

সোমবার সিউড়ি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে বিধানসভা ভিত্তিক কর্মী সম্মেলন ছিল তৃণমূলের। সেই কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন অনুব্রত মণ্ডল, তৃণমূলের দুই জেলা সহ-সভাপতি অভিজিৎ সিংহ ও মলয় মুখোপাধ্যায়, জেলা পরিষদের সভাধিপতি বিকাশ রায়চৌধুরী।

কর্মী সম্মেলনে। নিজস্ব চিত্র

কর্মী সম্মেলনে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা 
সিউড়ি শেষ আপডেট: ১৯ নভেম্বর ২০১৯ ০৩:০৪
Share: Save:

মাসখানেক আগে এই অঞ্চলেরই বালিঘাটে গিয়ে মজুত বালির পাহাড় দেখে অবাক হয়েছিলেন জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বসু। এ বার জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলকে কাছে পেয়ে সিউড়ির সেই খটঙ্গা এলাকায় ‘বালি মাফিয়া’-দের দৌরাত্ম্যের অভিযোগ করলেন এলাকার তৃণমূল কর্মীরা। পাল্টা পুলিশকে অভিযোগ জানিয়ে বালিঘাট বন্ধের নির্দেশ দিলেন অনুব্রত।

সোমবার সিউড়ি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে বিধানসভা ভিত্তিক কর্মী সম্মেলন ছিল তৃণমূলের। সেই কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন অনুব্রত মণ্ডল, তৃণমূলের দুই জেলা সহ-সভাপতি অভিজিৎ সিংহ ও মলয় মুখোপাধ্যায়, জেলা পরিষদের সভাধিপতি বিকাশ রায়চৌধুরী। এ ছাড়াও ছিলেন সিউড়ি বিধানসভা কেন্দ্রের অন্তর্ভুক্ত সমস্ত ব্লক সভাপতি, পঞ্চায়েতের প্রধান, পুরসভার চেয়ারম্যান-সহ দলের অন্য নেতা-কর্মীরা। অন্য দিনের মতো এ দিনও প্রতিটি অঞ্চল সভাপতিকে ডেকে শুরু হয় প্রশ্ন-উত্তর পর্ব।

লোকসভার ফলের নিরিখে সিউড়ি বিধানসভা এলাকার অনেক অঞ্চলেই শাসকদল বিজেপির থেকে পিছিয়ে ছিল। এ দিন তাই জেলা সভাপতির কড়া প্রশ্নের মুখে পড়তে হয় অধিকাংশ অঞ্চল ও বুথ সভাপতিকে। প্রশ্নবাণের মুখে অনেকে পারস্পরিক চাপানউতোরেও জড়িয়ে পড়েন। সে-সব দেখে মেজাজ হারান অনুব্রত। সংগঠন ঠিক ভাবে পরিচালনার জন্য মল্লিকপুর, কড়িধ্যা, গোহালিয়াড়া, তাঁতিপাড়ার অঞ্চল সভাপতিকে সরিয়ে সেখানে পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠনের জন্য নির্দেশ দেন। একই ভাবে এর আগে সাঁইথিয়া, মহম্মদবাজার, দুবরাজপুর, খয়রাশোলেও ‘ফাইভ ম্যান কমিটি’ গড়া হয়েছে।

এ দিন খটঙ্গা অঞ্চলের সভাপতিকে ডেকে অনুব্রত প্রশ্ন করেন, ভোটে হারলাম কেন? সেই উত্তর দিতে গিয়ে ‘আমতা আমতা’ করতে থাকেন ওই অঞ্চল সভাপতি। তখন ওই এলাকা থেকে আসা কর্মীদের কাছে ভোটে পিছিয়ে থাকার কারণ জানতে চান অনুব্রত। তারই উত্তরে এক কর্মী বলেন, ‘‘বালিঘাটের জন্য ভোট পাইনি। দাদা, ওই এলাকায় বালি মাফিয়াদের রাজত্ব চলছে। সেই জন্য মানুষ ক্ষুব্ধ।’’ এ কথা শুনে বেজায় চটে যান জেলা সভাপতি। তিনি কর্মীদের উদ্দেশে বলেন, ‘‘বালিঘাট বন্ধ করে দিন! পুলিশকে অভিযোগ জানিয়ে বালিঘাট বন্ধ করে দিন।’’ সাংবাদিকের মুখোমুখি হলে ফের বলেন, ‘‘খটঙ্গার মানুষ না চাইলে বালিঘাট বন্ধ হবে। আমার তো বালিঘাট নিয়ে কাজ নেই। মানুষ যেটা চাইবে সেটাই হবে!’’

এ দিন অনুব্রত সিউড়ির পুরপ্রধান উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায়কে সামনে ডেকে শহরের ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের এক যুবকের নাম করে অভিযোগ করেন, বাড়ি তৈরির নাম করে টাকা নিচ্ছেন ওই যুবক। সে ব্যাপারে পুরপ্রধান কিছু জানেন না দেখে অনুব্রতর মন্তব্য, ‘‘তোমার কাছে খবর নেই। কিন্তু আমার কাছে আছে। খবর নিয়ে দেখ, ব্যবস্থা নাও।’’ পুরপ্রধান জবাব দেন, ‘‘ব্যবস্থা নেব দাদা।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Anubrata Mandal Birbhum Sand Mafia
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE