রাজ্যে তথ্যের অধিকার থাকলেও সেই অধিকার অর্জন করতে হয়রান হতে হচ্ছে বলে অভিযোগ আবেদনকারীদের। মুখ্য তথ্য কমিশনার বাসুদেব বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রকাশ করা রাজ্য তথ্য কমিশনের ২০১৬-এর বার্ষিক রিপোর্ট বলছে, কমিশনে অভিযোগ ও আপিল মিলে ২০১৬ ’তে ৮১৭৮ টি আবেদন জমা ছিল। সে বছর নিষ্পত্তি করা গিয়েছে ১১১৮টির।
কেন এমন অবস্থা?
বার্ষিক রিপোর্টে কমিশন লিখেছে, ২০১৬ সালের জুলাই মাস পর্যন্ত জিএমপি রেড্ডি একমাত্র কমিশনার কর্মরত ছিলেন। হাইকোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী, এক জন তথ্য কমিশনার কোনও অভিযোগ বা আবেদনের নিষ্পত্তি করতে পারেন না। ফলে জিএমপি রেড্ডি কোনও শুনানি করতে পারেন নি। জমে থাকা অভিযোগের বহর বেড়েছে।
বর্তমান মুখ্য তথ্য কমিশনার বাসুদেব বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য বলেন,‘‘২০১৭-১৮’এ পরিস্থিতি অনেকটাই বদলে গিয়েছে। অনেক অভিযোগের নিস্পত্তি হয়েছে। এখন রাজ কানোজিয়াও তথ্য কমিশনার হিসাবে যোগ দিয়েছেন। ফলে আরও দ্রুত অভিযোগের নিষ্পত্তি সম্ভব হবে।’’
২০১৬ সালের বার্ষিক রিপোর্ট বলছে, রাজ্যের বিভিন্ন দফতরে তথ্য না পেয়ে ৩৭০৮টি অভিযোগ কমিশনে জমা পড়েছিল। তার মধ্যে মাত্র ৪৫৯টির নিষ্পত্তি হয়েছিল। ওই বছর রাজ্যের বিভিন্ন দফতরের দেওয়া উত্তরে সন্তুষ্ট না হয়ে কমিশনে আপিল জমা পড়েছিল ৪৪৭৯টি। নিষ্পত্তি করা গিয়েছিল ৬৫৯টি। এ রাজ্যে ২০০৫ সালে তথ্য জানার অধিকার আইন কার্যকর হয়েছে। তার পর থেকে ২০১৭ পর্যন্ত এ রাজ্যে সমস্ত দফতর মিলিয়ে মোট আবেদন জমা পড়েছে ৭৬ হাজার ১৬৫টি। কিন্তু তার মধ্যে কতগুলির উত্তর দেওয়া হয়েছে, তার কোনও নির্দিষ্ট তথ্য কমিশনের হাতে নেই।
জাতীয় স্তরে তথ্য জানার অধিকার নিয়ে সচেতনতার কাজ করে কমনওয়েলথ হিউম্যান রাইটস ইনিশয়েটিভ(সিএইচআরআই)। তাদের অন্যতম কর্তা ভেঙ্কটেশ নায়ক বলেন,‘‘তথ্য জানার অধিকার আইন বলবত করার ক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গের উদ্যোগ মোটেই আশাব্যঞ্জক নয়।’’
সরকারি তথ্য বলছে, ২০০৫-১৭ পর্যন্ত ১২ বছরে দেশে ২ কোটি ১৪ লক্ষ তথ্য জানতে চেয়ে আবেদন জমা পড়েছে। তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি আবেদন জমা পড়েছে নয়াদিল্লির কেন্দ্রীয় তথ্য কমিশনে। কমিশন ৫৭ লক্ষ ৪৩ হাজার ৪৭৭ আবেদনের সিংহভাগ নিষ্পত্তি করে দিয়েছে। সেখানে পড়ে রয়েছে মাত্র ২৩ হাজার ৯৮৯টি আবেদন। মহারাষ্ট্রে জমা পড়েছে ৫৪ লক্ষ ৯৫ হাজার ৭৮৮টি আবেদন। যার মধ্যে ৪১ হাজার ৫৩৭টি আবেদনের এখনও নিষ্পত্তি হয়নি। সেই তুলনায় এ রাজ্যে গত ১২ বছরে ১ লক্ষ আবেদনও জমা পড়েনি। অভিযোগ নিষ্পত্তি হওয়া তো অনেক দূরের কথা!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy