আর্জি: পঙ্কজ বন্দ্যোপাধ্যায়।
সক্রিয় রাজনীতি থেকে সরে গিয়েছেন অনেক দিন। তাঁরই আবেদনের প্রেক্ষিতে প্রাক্তন বিধায়কদের স্বাস্থ্য নিয়ে স্বাস্থ্যকর নজির তৈরি হতে চলেছে বিধানসভায়!
চিকিৎসার খরচ জোগাড় করতে হিমশিম খেতে হয় বহু প্রাক্তন বিধায়ককে। বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে চিঠি পাঠিয়ে রাজ্যের প্রাক্তন বিরোধী দলনেতা পঙ্কজ বন্দ্যোপাধ্যায় আর্জি জানিয়েছিলেন, প্রাক্তন বিধায়কদের চিকিৎসার খরচে সহায়তা বাড়ানোর কথা বিবেচনা করা হোক। শেষ পর্যন্ত বৃহস্পতিবার বিধানসভার এনটাইটেলমেন্ট কমিটি সর্বসম্মত হয়ে প্রাক্তন বিধায়কদের চিকিৎসা ও যাতায়াত ভাতা বাড়ানোর সুপারিশ করার সিদ্ধান্ত নিল। পঙ্কজবাবুর পুরনো দল তৃণমূল এবং তাদের বিরোধী কংগ্রেস ও বামফ্রন্ট বিধায়কেরা এই মর্মে সহমত।
টালিগঞ্জের প্রাক্তন বিধায়ক পঙ্কজবাবু নিজেও অসুস্থতায় ভুগছেন। সম্প্রতি স্পিকারকে চিঠিতে তিনি লেখেন, ‘চিকিৎসার পিছনে বিপুল খরচ চালাতে প্রাক্তন বিধায়কদের অনেকেই গভীর সমস্যায় পড়ছেন। এঁদের অধিকাংশই রাজনীতি করতে এসেছিলেন সমাজের কাজ হিসাবে। এখন চিকিৎসার টাকা জোগাড় করতে গিয়ে কাউকে কাউকে কার্যত অনাহারেও কাটাতে হয়! এমনই কিছু প্রবীণ, অশক্ত প্রাক্তন বিধায়ক আমার কাছে এসে অনুরোধ করেছিলেন, তাঁদের আর্থিক সমস্যার বিষয়টি বিধানসভাকে জানাতে। আমারও মনে হয়েছে, সাধারণ মানুষের সেবায় যাঁদের জীবনের অধিকাংশ সময় কেটেছে, তাঁদের পাশে দাঁড়ানো উচিত’। পঙ্কজবাবুর ওই চিঠিকে সরকারি ভাবে আলোচনার সূচিতে রেখেই এনটাইটেলমেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান হিসাবে বৈঠক ডেকেছিলেন স্পিকার।
বিধানসভা সূত্রের খবর, পঙ্কজবাবুর যুক্তিতে এক কথায় সম্মতি দিয়েছেন তৃণমূলের মিহির গোস্বামী, যোগরঞ্জন হালদার, কংগ্রেসের মনোজ চক্রবর্তী, সিপিএমের সুজন চক্রবর্তীরা। বস্তুত, প্রাক্তন বিধায়কদের দুর্দশা নিয়ে অনেক দিন ধরেই সরব বামেরা। বৈঠকে তৃণমূলের মিহিরবাবুও বলেন, অনেক ক্ষেত্রে প্রাক্তন বিধায়ককে টাকা-পয়সা জোগাড় করে চিকিৎসা করতে পাঠানোর বন্দোবস্ত তাঁদের করতে হয়। ঠিক হয়েছে, প্রাক্তন বিধায়কদের চিকিৎসা ভাতা মাসে ৬ হাজার থেকে বাড়িয়ে সাড়ে ৭ হাজার এবং যাতায়াতের ভাতা বছরে ১৯ হাজার থেকে বাড়িয়ে ৫০ হাজার টাকা করার সুপারিশ হবে। স্পিকারের কথায়, ‘‘আমরা কমিটির তরফে বিষয়টি দেখছি। সরকারও সহানুভূতির সঙ্গে বিবেচনা করছে।’’
বিধায়কদের একাংশ এর পাশাপাশিই দাবি করছেন, মন্ত্রীরা এখন যেখানে বেতন ও ভাতা মিলে মাসে প্রায় ৮৪ হাজার টাকা পান, বিধায়কদের বেতন বেড়েও ২১ হাজার। তাঁদের প্রশ্ন, এত বৈষম্য কেন? বিধায়কেরা যে যার কেন্দ্র থেকে বিধানসভায় এসে প্রতি সপ্তাহে একটি করে কমিটির বৈঠকে হাজিরা দিলে মাসে আরও ৩০ হাজার টাকা পান ভাতা হিসাবে। মন্ত্রীদের কমিটি বৈঠকে উপস্থিতি বাধ্যতামূলক নয়। মনোজবাবুর দাবি, ‘‘আমি ৭ হাজার টাকায় মন্ত্রিত্ব করেছি, স্কুলের বেতন ছেড়ে দিয়েছি। এখন বিধায়কদের বেতন নিয়ে অনেক কথা বলা হলেও লাভ তো হয়েছে মন্ত্রীদের!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy