প্রতিরোধে উদ্যত পুলিশ কর্মী, সিংমারিতে। —নিজস্ব চিত্র।
দার্জিলিঙের অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতির পিছনে উত্তর-পূর্বের জঙ্গিদের মদতের অভিযোগ শনিবার তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের বক্তব্য, উত্তর-পূর্বের জঙ্গি সংগঠনগুলির সঙ্গে হাত মিলিয়ে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা যে দীর্ঘদিন ধরেই পাহাড়কে অশান্ত করে তোলার ছক কষছিল, অস্ত্র জোগাড় করে পাহাড়ে নিয়ে যাচ্ছিল— সেই খবর দফায় দফায় জানানো হয়েছিল পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে। কিন্তু দু’একটি মামুলি গ্রেফতারি ছাড়া রাজ্য আর কিছুই করেনি।
উত্তর-পূর্বে কর্মরত আইবি-র একাধিক কর্তা জানান, ২০১৪ সালের নভেম্বরে অসমের চিরাং জেলায় গণেশ ছেত্রী ও উমেশ কামি নামে গোর্খা সংগঠনের দুই সদস্য গ্রেফতার হয়। গণেশ এনএসসিএন-খাপলাং শিবিরে অস্ত্র প্রশিক্ষণ নিয়েছিল। কামি গরুবাথানে প্রশিক্ষণ নেওয়া গোর্খাল্যান্ড পার্সোনেল (জিএলপি)-এর ক্যাডার।
তাদের সঙ্গে থাকা গাড়ির গোপন কুঠুরি থেকে উদ্ধার করা হয় একটি মার্কিন এম-১৬ রাইফেল, দু’টি বেরেটা পিস্তল, তিনটি .৩২ বোরের পিস্তল, ৫৬০টি বিভিন্ন বোরের রাইফেল-পিস্তলের গুলি ও ৮০ রাউন্ড একে-সিরিজ রাইফেলের গুলি।
আরও পড়ুন: আরও আধাসেনা কেন, প্রশ্ন কেন্দ্রের
উত্তরবঙ্গ থেকে আইবি-র গোয়েন্দারা অসমে এসে ওই দু’জনকে জেরা করেন। তখনই জানা যায়, আপাতদৃষ্টিতে শান্ত পাহাড়ে তলে তলে অশান্তির প্রস্তুতি চলছে।
অস্ত্র আমদানির মাথা ছিল স্বশাসিত পরিষদের সদস্য সঞ্জয় থুলুং। থুলুংই নেপালি যুবকদের মায়ানমারে অস্ত্র প্রশিক্ষণের জন্য পাঠাত। তারা প্রশিক্ষণ নিয়ে ফিরে এলে তাদের একাংশকে গরুবাথানে জিএলপি ক্যাডারদের প্রশিক্ষণের কাজে ব্যবহার করা হতো। এই থুলুঙের মাধ্যমেই বিমল গুরুঙ্গের সঙ্গে অসম, নাগাল্যান্ড ও ভুটানের একাধিক জঙ্গি সংগঠনের যোগাযোগ গড়ে ওঠে।
পাশাপাশি, খাপলাং গোষ্ঠীর কাছ থেকে অস্ত্র জোগাড় করার ভার দেওয়া হয় গণেশ ও উমেশকে। ধরা পড়ার আগে বহু বার অস্ত্র নিয়ে এসেছে বলে গোয়েন্দাদের কাছে কবুল করে তারা।
গোয়েন্দাদের দাবি, অসম পুলিশের তদন্তের সূত্র ধরে সঞ্জয়ের ভাই বিজয় ও গোর্খা নেতা অম্বর ধোজ ওরফে ভুট্টোকে গ্রেফতার করা ছাড়া পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ আর কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। আইবির বক্তব্য, রাজ্য প্রথম থেকেই সক্রিয় হলে আজকের পরিস্থিতি এড়ানো সম্ভব হতো।
রাজ্য গোয়েন্দাদের অবশ্য পাল্টা দাবি, শুধু আইবি সূত্রে নয়, তাঁরা নিজস্ব সূত্রেই জঙ্গিদের সঙ্গে মোর্চার যোগাযোগের খবর পেয়েছিলেন। এবং সেই মতো গ্রেফতারিও করা হয়েছিল। ফলে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ আদৌ ঠিক নয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy