Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

লেকটাউনে উপর্যুপরি হামলা, গাড়ি ভাঙচুর, আক্রান্ত সব্যসাচী

দমকল মন্ত্রী সুজিত বসুর অনুগামীরা হামলা চালিয়েছে বলে বিজেপির অভিযোগ। সব্যসাচী দত্তই গোলমাল পাকিয়েছেন বলে পাল্টা দাবি তৃণমূলের।

ভিড়ের মধ্যে থেকে সব্যসাচীকে উদ্ধার করে নিয়ে যাচ্ছেন নিরাপত্তারক্ষীরা। —নিজস্ব চিত্র।

ভিড়ের মধ্যে থেকে সব্যসাচীকে উদ্ধার করে নিয়ে যাচ্ছেন নিরাপত্তারক্ষীরা। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ জুন ২০২০ ১৭:২১
Share: Save:

প্রথমে আক্রান্ত সব্যসাচী দত্ত, তার পরে শঙ্কুদেব পন্ডা। লেকটাউনে বিজেপি নেতাদের উপরে উপর্যুপরি হামলার অভিযোগ তৃণমূলের বিরুদ্ধে। মারধর, গাড়ি ভাঙচুর তো হলই, রক্তাক্ত হলেন শঙ্কুর নিরাপত্তায় থাকা এক সিআইএসএফ জওয়ানও। রাজ্যের দমকল মন্ত্রী তথা স্থানীয় বিধায়ক সুজিত বসুর অনুগামীরা হামলা চালিয়েছে বলে বিজেপির অভিযোগ। সব্যসাচী দত্তই এলাকায় ঢুকে গোলমাল পাকিয়েছেন বলে তৃণমূলের পাল্টা দাবি।

সোমবার লেকটাউনের দক্ষিণদাঁড়ি এলাকায় গিয়েছিলেন বিধাননগরের প্রাক্তন মেয়র তথা রাজারহাট-নিউটাউনের বিধায়ক সব্যসাচী দত্ত। এক আইনজীবী তথা বিজেপি কর্মীর বাড়ি গিয়েছিলেন তিনি। ওই এলাকাতেই সব্যসাচীকে ঘিরে গোলমাল শুরু হয়ে যায়। বিধায়ক তথা বিজেপি নেতা এবং তাঁর সঙ্গীদের উপরে ঝাঁপিয়ে পড়তে দেখা যায় একদল দুষ্কৃতীকে।

রাজ্য বিজেপির সম্পাদক সব্যসাচী দত্তকে কোনওক্রমে ভিড়ের মধ্যে থেকে উদ্ধার করে গাড়িতে তুলে দেন তাঁর নিরাপত্তারক্ষীরা। তার পরে দ্রুত ওই এলাকা ছেড়ে বেরিয়ে যান বিধাননগর এবং সংলগ্ন এলাকার রাজনীতিতে সুজিত বসুর চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে পরিচিত সব্যসাচী। তবে দক্ষিণদাঁড়ি ছেড়ে বেরলেও লেকটাউন তখনই ছাড়েননি তিনি। স্থানীয় থানায় গিয়ে হামলার অভিযোগ দায়ের করেন সব্যসাচী দত্ত।

বিজেপি নেতার গাড়ির কাচ চূর্ণবিচূর্ণ। —নিজস্ব চিত্র।

আরও পড়ুন: বাজার খুললেও ভবিষ্যৎ‌ ভয়ের, কারণ লকডাউনটা সঙ্কটের শিকড় নয়​

সব্যসাচীর উপরে হামলার খবর পেয়ে লেকটাউনে পৌঁছন আর এক বিজেপি নেতা শঙ্কুদেব পন্ডা। তিনি লেকটাউন থানার সামনে পৌঁছতেই, তাঁর উপরেও হামলা হয়। সব্যসাচী তখন লেকটাউন থানায় ছিলেন না, অভিযোগ দায়ের করে তিনি ততক্ষণে চলে গিয়েছেন। কিন্তু পাল্টা অভিযোগ দায়ের করতে লেকটাউন থানার সামনে তখন তৃণমূল-নেতাকর্মীদের ভিড়। শঙ্কুদেবের গাড়ি ঘিরে ধরে তাদেরই একাংশ হামলা চালায় বলে অভিযোগ। সব্যসাচী যতটা অক্ষত বেরিয়ে যেতে পেরেছিলেন, শঙ্কুর ক্ষেত্রে তা হয়নি। তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রাক্তন সভাপতি তথা অধুনা বিজেপি নেতা শঙ্কু নিজে প্রহৃত হননি। কিন্তু তাঁর গাড়িটি ভেঙেচুরে দেওয়া হয়। শঙ্কুর নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা এক সিআইএসএফ জওয়ান রক্তাক্ত হন। তাঁর মুখ এবং হাত জখম হয়। রক্তাক্ত অবস্থায় ওই সিআইএসএফ জওয়ানকে সল্টলেকের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

সব্যসাচী দত্ত ফোনে আনন্দবাজারকে বলেন, ‘‘আমি দক্ষিণদাঁড়ি গিয়েছিলাম এক দলীয় কর্মীর বাড়িতে। ধ্রুবনীল নামে আমাদের ওই কর্মী পেশায় আইনজীবী এবং আমার ভাইয়ের মতো। কিছু দিন ধরেই ওঁকে হুমকি দেওয়া হচ্ছে, ওঁর বাড়িতে গিয়ে হুমকি দিয়ে আসা হচ্ছে। সেই কারণেই আমি ওঁর বাড়িতে গিয়েছিলাম। কিন্তু সুজিত বসুর অনুগামীদের বক্তব্য, ওখানে সুজিত বসু ছাড়া কেউ কিছু করতে পারবেন না।’’ লেকটাউন থানার সামনে শঙ্কুদেব পন্ডার উপরেও বিনা প্ররোচনাতেই হামলা হয়েছে বলে সব্যসাচীর দাবি। সুজিত বসুর অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত নিতাই দত্তর নেতৃত্বে হামলা হয়েছে বলে তাঁর অভিযোগ।

আরও পড়ুন: এসটিএফের জালে সালাউদ্দিন ঘনিষ্ঠ জেএমবি নেতা​

তৃণমূলের স্থানীয় নেতৃত্ব অবশ্য হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেছে। করোনায় আক্রান্ত হয়ে সুজিত বসু নিজে এখন চিকিৎসাধীন। তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। কিন্তু তাঁর অনুগামীদের দাবি, সব্যসাচী দত্ত এলাকায় ঢুকে ‘গুন্ডামি’ করছিলেন, সব্যসাচীই তৃণমূল কর্মীদের মারধর করেছেন, তাই ‘পাল্টা প্রতিরোধ’ হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE