Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

যুবতীর নগ্ন ভিডিও পর্নসাইটে আপলোড করে গ্রেফতার বি-টেক ছাত্র

গত জুলাই মাসে ওই যুবতীকে তাঁর সঙ্গে দিঘায় যাওয়ার প্রস্তাব দেয় অভিযুক্ত ওই ছাত্র। রাজি না হওয়ায় নগ্ন ভিডিওগুলি একটি পর্ন সাইটে আপলোড করে দেওয়া হয়।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
পাঁশকুড়া শেষ আপডেট: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ২৩:২৬
Share: Save:

যুবতীর নগ্ন ভিডিও পর্ন সাইটে আপলোড করে দেওয়ার অভিযোগ উঠল এক যুবকের বিরুদ্ধে। মেদিনীপুর জেলার পাঁশকুড়ার ঘটনা। গত দু-তিন বছর আগে একটি সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে অভিযুক্ত অনিমেষ বক্সীর সঙ্গে আলাপ হয় ওই যুবতীর। বিটেক-এর ছাত্র অনিমেষের সঙ্গে ধীরে ধীরে সম্পর্ক ঘণিষ্ঠ হয়ে ওঠে তাঁর। পুলিশকে যুবতী জানিয়েছেন, ইমোশনাল ব্ল্যাকমেল করে বেশ কয়েকবার তাঁর নগ্ন ভিডিও চেয়ে পাঠিয়েছিল ওই ছাত্র। প্রথমটায় না করলে শুরু হয় জোরজার। অবশেষে তাঁর নগ্ন ভিডিও ছেলেটিকে পাঠাতে বাধ্য হয় ওই যুবতী।

আরও পড়ুন: নীল তিমির হানা, খেলা ছাড়তে চাইলে খুনের হুমকি! আতঙ্কে পড়ুয়া

এর পরেই শুরু হয় ব্ল্যাকমেল। যখন তখন সে বিভিন্ন রকম কুপ্রস্তাব দিতে শুরু করে। শারীরিক চাহিদা মেটাতে রাজি না হলে তাঁর নগ্ন ভিডিও পর্ন সাইটে আপলোড করে দেওয়ারও হুমকিও দেওয়া হয় ওই যুবতীকে। গত জুলাই মাসে ওই যুবতীকে তাঁর সঙ্গে দিঘায় যাওয়ার প্রস্তাব দেয় অভিযুক্ত ওই ছাত্র। রাজি না হওয়ায় নগ্ন ভিডিওগুলি একটি পর্নসাইটে আপলোড করে দেওয়া হয়। যার নীচে ওই যুবতীর নাম, তাঁর বাবার নাম ও ঠিকানাও দেওয়া ছিল। ধীরে ধীরে বিভিন্ন পর্ন সাইটে ছড়িয়ে পড়ে ভিডিওগুলি। লোক জানাজানি হতেই তাঁকে পাড়া-প্রতিবেশীর কাছে গঞ্জনার শিকার হতে হয়। এর পর সমাজে কী ভাবে মুখ দেখাবে এই কথা ভেবে আত্মহত্যা করবেন বলে সিদ্ধান্তও নিয়ে ফেলেছিলেন তিনি। তবে পারিবারিক আশ্বাসে অভিযুক্তকে উপযুক্ত শাস্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন ওই যুবতী। পাঁশকুড়া থানায় অনিমেষ বক্সীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়।

অভিযোগ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা গ্রহণ করে পুলিশ। প্রথমে পূর্ব মেদিনীপুর পুলিশ এই মামলাটি তদন্তের দায়িত্বে ছিল। এর পর সিআইডি এই মামলাটি নিজেদের হাতে নেয়। এই মামলার স্পেশ্যাল পাবলিক প্রসিকিউটর বিভাস চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, অভিযোগ দায়ের হওয়ার মাত্র ৫২দিনের মাথায় মঙ্গলবার সিআইডি এই মামলার চার্জশিট গঠন করেছে। আগামী সোমবার থেকে সাক্ষীদের বয়ান শোনা হবে। অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ৩৬৪(এ), ৩৬৪(সি), ৩৬৪(ডি), ভারতীয় দণ্ডবিধির ৫০৯ ধারা এবং তথ্য ও প্রযুক্তি আইনের ৬৬(সি), ৬৬(ই), ৬৭, ৬৭(এ) ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে তার পাঁচ বছরের জেল এবং দশ লক্ষ টাকা জরিমানা হতে পারে। এই মুহূর্তে পুলিশি হেফাজতে রয়েছে ওই ছাত্র।

যুবতীর অভিযোগ জেলের ভিতরে থেকেই গুণ্ডাদের দিয়ে তাঁকে প্রাণে মারার হুমকি দিচ্ছে ওই ছাত্র। এই অভিযোগ পেয়েই স্থানীয় থানা ওই যুবতীকে নিরাপত্তা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। সাইবার অপরাধ বেড়েই চলেছে। এই ধরনের অপরাধ রুখতে এত তাড়াতাড়ি চার্জশিট পেশ করা বেশ উল্লেখযোগ্য ঘটনা। বিভাসবাবু তমলুক আদালতে যে তথ্য দাখিল করেছেন তাতে তিনি জানান, সাইবার অপরাধ সংক্রান্ত মামলা আরও দ্রুত নিষ্পত্তি হওয়া প্রয়োজন। কারণ এই ধরনের ঘটনা যেহেতু অনলাইনে সংঘটিত হয়। যদি তদন্ত প্রক্রিয়া দীর্ঘ সময় নেয়, তবে সেই অনলাইন থেকে সেই সমস্ত প্রামাণ্য তথ্য সরিয়ে নেওয়ার অবকাশ থাকে। এ ক্ষেত্রে দ্রুততার সঙ্গে চার্জশিট গঠন করায় তা অনেকটাই মেটানো সম্ভব হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE