Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

ট্রেন, গাড়ি একসঙ্গে ছুটলেই কাঁপে সেতু

সম্প্রতি দেখা গেল, ওই সেতুর কলকাতামুখী দক্ষিণেশ্বর প্রান্তের শুরুতেই এক ফুটেরও বেশি জায়গা জুড়ে ফাটল।

বিপজ্জনক: বালি ব্রিজের বিভিন্ন জায়গায় রয়েছে এ রকম ফাটল। ছবি: সজল চট্টোপাধ্যায়

বিপজ্জনক: বালি ব্রিজের বিভিন্ন জায়গায় রয়েছে এ রকম ফাটল। ছবি: সজল চট্টোপাধ্যায়

সুপ্রকাশ মণ্ডল
কলকাতা শেষ আপডেট: ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৩:৩৭
Share: Save:

মাঝেরহাটে সেতুভঙ্গের কারণ কী? চলছে কাটাছেঁড়া। উদ্বেগ ছড়িয়েছে অনেক সেতু নিয়েই। উঠছে রক্ষণাবেক্ষণ নিয়ে অভিযোগ। এ রাজ্যে গঙ্গার উপরে সেতুগুলির বেশির ভাগই বেশ পুরনো। সেগুলির হাল কেমন? খোঁজ নিল আনন্দবাজার। আজ, বালি ব্রিজ বা বিবেকানন্দ সেতু।

চকচকে পিচের রাস্তা। ছুটছে গাড়ি। পাশ দিয়ে দৌড়চ্ছে ট্রেন।

আর ১৪ বছর হলেই ১০০ বছরে পড়বে রাজ্যের এই ‘রেল কাম রোড’ সেতু। পোশাকি নাম ‘বিবেকানন্দ সেতু’। সকলে চেনেন ‘বালি ব্রিজ’ নামে। সরকারি হিসেব বলছে, ওই সেতু দিয়ে রোজ অন্তত ২৪ হাজার গাড়ি চলে। কিন্তু নিরাপত্তা?

সম্প্রতি দেখা গেল, ওই সেতুর কলকাতামুখী দক্ষিণেশ্বর প্রান্তের শুরুতেই এক ফুটেরও বেশি জায়গা জুড়ে ফাটল। এ ছাড়াও ওই প্রান্তেরই প্রথম স্তম্ভের উপরের দিকের চিড় দূর থেকেও দেখা যাচ্ছে খালি চোখে। দক্ষিণেশ্বর থেকে বালির দিকে সেতুর সঙ্গে রেললাইনের সংযোগকারী অনেক ইস্পাতের প্লেট উধাও।

শুধু কি এই? ট্রেন এবং গাড়ি যখন এক সঙ্গে ছুটছে, বিপজ্জনক ভাবে সেতুটি দুলছে। তখন সেতুর রেলিং ধরে দাঁড়িয়ে পড়ছেন পথচারীরা। গত মঙ্গলবার মাঝেরহাটে সেতু ভাঙার পরে আতঙ্ক এতটাই! এক পথচারী বলেন, ‘‘মাঝেরহাট ব্রিজের মতো এটাও ভেঙে পড়বে না তো!’’

শুধু সাধারণ মানুষই নন, সেতু নিয়ে উদ্বেগে রয়েছেন পূর্ত দফতরের ইঞ্জিনিয়ারদের একাংশও। মঙ্গলবারের পরে সেই উদ্বেগ আরও বেড়েছে। তাঁদের বক্তব্য, গার্ডারের উপরের যে ইস্পাতের প্লেটের উপরে সেতুটির ভার রয়েছে, সেগুলির অবস্থা ভাল নয়।

১৯২৬ সালে সেতুটি তৈরি শুরু হয়। শেষ হয় ১৯৩১ সালে। চালু হয় তার পরের বছর। ৮৮০ মিটার লম্বা সেতুটি হাওড়ার সঙ্গে কলকাতার সংযোগ ঘটিয়েছে। এই সেতুর মাঝখান দিয়ে গিয়েছে রেললাইন। পূর্ত দফতরের বিশেষজ্ঞেরা জানিয়েছেন, কংক্রিটের স্তম্ভ-গার্ডার আর ইস্পাতের প্লেটের উপরে দাঁড়িয়ে রয়েছে পুরো সেতুটি। বছর কয়েক আগে সেতুটি বেহাল হওয়ায় গাড়ি চলাচল বন্ধ করে মেরামতির কাজ হয়। সম্প্রতি সেতুতে পিচ ঢালা হয়েছে। কিন্তু ফাটল বা চিড় মেরামত হয়নি কেন?

সেতুটি রক্ষণাবেক্ষণের ভার পূর্ত দফতর এবং রেলের। রাস্তার অংশ দেখভাল করে পূর্ত দফতরের উত্তর শহরতলি বিভাগ। সেতুর কাঠামো দেখভালের দায়িত্ব রেলের।পূর্ত দফতরের উত্তর শহরতলি বিভাগের এগ্‌জিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার চন্দন মণ্ডল অবশ্য বলেন, ‘‘আপাতদৃষ্টিতে সেতুতে কোনও সমস্যা নেই বলেই জানি। দক্ষিণেশ্বর প্রান্তের ফাটলটি সম্ভবত দু’প্রান্তের জোড়া দেওয়ার জন্য হতে পারে। আমরা দেখব।’’ পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক রবি মহাপাত্রের দাবি, ‘‘সেতুর কাঠামোর দেখভাল নিয়মিত হয়। তবে, ইস্পাতের প্লেটের বিষয় খোঁজ নিয়ে দেখতে হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Bali Bridge Train Car
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE