ইসলামপুরের পথে রাজ্যের পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। —নিজস্ব চিত্র।
মিটিং হওয়ার কথা ছিল ঠিক বেলা ১২টায়। ইসলামপুর বাসস্ট্যান্ডের মোড়ে। কিন্তু, বিজেপি-র বিক্ষোভের জেরে শেষ পর্যন্ত দুপুর আড়াইটেয় সভামঞ্চে পৌঁছলেন রাজ্যের পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। তবে অভিযোগ উঠেছে, পুলিশের ভরসায় নয়, এলেন তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকদের ‘তাণ্ডব’-এর ভরসায়! তাণ্ডব ছাড়া ইসলামপুরে তৃণমূলের বিরুদ্ধে গুলিচালনার অভিযোগও ওঠে। তবে স্থানীয় তথা রাজ্য প্রশাসনের তরফে তা অস্বীকার করা হয়েছে।
বুধবার রাজ্য জুড়ে বিজেপি-র ডাকা ১২ ঘণ্টার বন্ধের মাঝেই ইসলামপুরে সভা করার কথা ছিল শুভেন্দুর। তবে এ দিন সকাল থেকেই উত্তর দিনাজপুর জুড়ে দফায় দফায় বিক্ষোভের জেরে দীর্ঘায়িত হয় তাঁর যাত্রাপথ।
শুভেন্দুর সভামঞ্চের আগে প্রায় তিন কিলোমিটার রাস্তা জুড়ে এ দিন দেখা গেল তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকদের একাংশের তাণ্ডব। অভিযোগ উঠেছে, শুভেন্দুর জন্য রাস্তা ‘পরিষ্কার’ করলেন তাঁরা। তাঁদের কেউ মোটরবাইকে চড়ে, কেউ বা আবার দলীয় পতাকা নিয়ে বাঁশ-লাঠিসোটা হাতে। সে সব নিয়েই রীতিমতো তাণ্ডব চালিয়ে ইসলামপুর বাসস্ট্যান্ডে পৌঁছন তাঁরা।
আরও পড়ুন
অগ্নিগর্ভ ইসলামপুর, চলছে দফায় দফায় সংঘর্ষ
বন্ধে অশান্তির জেরে বা অন্য কোনও কারণে যে সমস্ত ব্যবসায়ী তাঁদের দোকান বন্ধ রেখেছিলেন, এ দিন তাঁদের প্রায় সকলকে তৃণমূলের রোষের মুখে পড়তে হয়েছে। তিন কিলোমিটার রাস্তা জুড়ে যাওয়ার পথে তাঁদেরকে দোকান থেকে বার করে শাসানো হয় বলে অভিযোগ। এমনকি, দোকানের মধ্যে ঢুকে অনেককে বাঁশ-লাঠিসোটা নিয়ে পেটানোও হয়। ইসলামপুরের স্থানীয়দের দাবি, ওই সময় যে কোনও বড়সড় সংঘর্ষ বেঁধে যাওয়ার আশঙ্কা ছিল।
আরও পড়ুন
বন্ধ লাইভ: অশোকনগরে ওসি আক্রান্ত, ইসলামপুরে বাসে আগুন, নানা জেলায় অশান্তি
ইসলামপুরের সভামঞ্চে এ ভাবেই উঠতে হল শুভেন্দুকে। সভার শেষে দাড়িভিটে নিহতদের বাড়িও পৌঁছতে পারলেন না তিনি। তাঁকে উঠতে হল সার্কিট হাউসে। সভায় বিজেপির চ্যালেঞ্জ নেওয়ার কথা ঘোষণা করলেও শুভেন্দুকে কার্যক্ষেত্রে ইসলামপুরে ঢুকতে হল তৃণমূলের বাহিনীর আড়ালে থেকে।
আরও পড়ুন
লাইভ: রাস্তা ফাঁকা, দোকান খোলা, যান কম, কিন্তু মোটের উপর সচল কলকাতা
শেষ পর্যন্ত নিহতদের বাড়ি যেতে না পারলেও শুভেন্দু বলেন, “আমি খোঁজখবর রাখছি। ঠিক সময়ে তাঁদের বাড়িতে গিয়ে দেখা করব।”
নিজের বক্তৃতায় বিজেপি-র ছোড়া চ্যালেঞ্জকে স্বীকার করে নেন শুভেন্দু। পাশাপাশি, বিজেপি-কে লক্ষ্য করে তাঁর হুঙ্কার: “আমি বিজেপি-র চ্যালেঞ্জ অ্যাকসেপ্ট করলাম। জঙ্গলমহল-নন্দীগ্রাম শান্ত করেছি। ইসলামপুরও ঠান্ডা করে দেব।”
বিজেপি-কে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে শুভেন্দু জানিয়েছেন, আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে এখান থেকে ৩০-৪০ হাজার ভোটের লিড নেবে তৃণমূল। তাঁর কথায়, “বিজেপি পার্টি দাঙ্গাবাজ পার্টি, পরিযায়ী পাখি। ওরা বিহার থেকে এখানে দুষ্কৃতীদের এসেছে। আমি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সৈনিক। চ্যালেঞ্জ করছি, লোকসভা ভোটে এখানে ৩০-৪০ হাজার ভোটের লিড নেব।”
আরও পড়ুন
‘আমরা তো ভাড়া দিই, তা হলে রেল দায়িত্ব নেবে না কেন?’
যে ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিজেপি রাজ্য জুড়ে বন্ধের ডাক দিয়েছে, সেই দাড়িভিট-কাণ্ডে শুভেন্দুর মন্তব্য: “পুলিশ গুলি চালায়নি। যারা গুলি চালিয়েছে, শীঘ্রই তাদের অ্যারেস্ট করা হবে।” এই ঘটনার তদন্ত করা হবে বলেও জানিয়েছেন শুভেন্দু। এ দিন সভার শেষে প্রথমে সার্কিট হাউসে ফিরে কলকাতার উদ্দেশে রওনা দেন তিনি।
শুভেন্দুর সভার আগে রাস্তা ‘পরিষ্কার’ করার জন্য তৃণমূলের তাণ্ডবের পাশাপাশি ইসলামপুরে গুলিচালনার অভিযোগ ওঠে। যদিও এমন কোনও ঘটনা ঘটেনি বলে জানিয়েছে স্থানীয় তথা রাজ্য প্রশাসন। এ দিন ইসলামপুরে গুলিচালনার অভিযোগ নিয়ে নবান্নে এডিজি (আইনশৃঙ্খলা) অনুজ শর্মা বলেন, “এ রকম কোনও অভিযোগ পাইনি। এ রকম কোনও ঘটনার কথা জানি না।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy