Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
Akansha Sharma

বাঁকুড়ার যুবতীকে পুঁতে দেওয়ায় দোষী ‘প্রেমিক’ উদয়ন, সাজা ঘোষণা আজ

বুধবার বাঁকুড়ার ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টের বিচারক সুরেশ বিশ্বকর্মার এজলাসে ওই খুন ও দেহ লোপাটের মামলার শাস্তি ঘোষণা হওয়ার কথা।

আকাঙ্খা শর্মা (বাঁ দিকে)। বাঁকুড়া আদালতে উদয়ন দাস। —ফাইল চিত্র

আকাঙ্খা শর্মা (বাঁ দিকে)। বাঁকুড়া আদালতে উদয়ন দাস। —ফাইল চিত্র

রাজদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ অগস্ট ২০২০ ০৩:৪৯
Share: Save:

বাঁকুড়া: যুবতীর দেহ মিলেছিল ‘প্রেমিকে’র বাড়িতে বানানো সিমেন্টের বেদির নীচে। ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারির সে ঘটনা হইচই ফেলেছিল রাজ্যে। বাঁকুড়ার সেই আকাঙ্ক্ষা শর্মা (২৮) খুনে মঙ্গলবার তাঁর ‘প্রেমিক’ উদয়ন দাসকে দোষী সাব্যস্ত করল আদালত। আজ, বুধবার বাঁকুড়ার ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টের বিচারক সুরেশ বিশ্বকর্মার এজলাসে ওই খুন ও দেহ লোপাটের মামলার শাস্তি ঘোষণা হওয়ার কথা।

আমেরিকায় ইউনিসেফের কাজে যোগ দিতে যাচ্ছেন বলে ২০১৬-র ২৩ জুন বাঁকুড়ার রবীন্দ্রসরণির বাড়ি থেকে বেরোন ব্যাঙ্ক আধিকারিকের মেয়ে আকাঙ্ক্ষা। সঙ্গে ছিল সোশ্যাল মিডিয়ায় আলাপ হওয়া ‘প্রেমিক’ উদয়নের দেওয়া চাকরির ভুয়ো নিয়োগপত্র। ভোপালের সাকেতনগরে উদয়নের বাড়িতে পৌঁছে তাঁর ভুল ভাঙে। অভিযোগ, বচসার মধ্যে ১৫ জুলাই তাঁকে শ্বাসরোধ করে খুন করে উদয়ন। তার পরে বাড়ির মধ্যে তাঁর দেহটি টিনের বাক্সে ভরে সিমেন্টের বেদি গেঁথে দেয়। আকাঙ্ক্ষার ফোন থেকে তাঁর বাড়ির লোকজনকে হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজে উদয়ন জানায়, সে আমেরিকায় পৌঁছেছে। সেখানকার সিম-কার্ড পায়নি বলে ফোন করতে পারছে না। শুধু মেসেজেই যোগাযোগ ছিল পরিবারের সঙ্গে।

ওই বছরের ৫ অক্টোবর উদয়ন বাঁকুড়ায় আকাঙ্ক্ষার বাড়িতে ঘুরে যায়। কিন্তু দীর্ঘ দিন আকাঙ্ক্ষা ফোন না ধরায় ধন্দে পড়ে তাঁর পরিবার। ৫ ডিসেম্বর তারা বাঁকুড়া সদর থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করে। পুলিশ আকাঙ্ক্ষার মোবাইল লোকেশন ‘ট্র্যাক’ করে জানতে পারে, সেটি ভোপালের সাকেতনগরে রয়েছে। আকাঙ্ক্ষার বাবা ও ভাই সেখানে গেলে, উদয়ন বা আকাঙ্ক্ষার দেখা পাননি। ২০১৭ সালের ৫ জানুয়ারি উদয়নের বিরুদ্ধে আকাঙ্ক্ষাকে অপহরণের মামলা করেন তাঁরা।

সে বছরই ১ ফেব্রুয়ারি ভোপালে গিয়ে বাঁকুড়া পুলিশ উদয়নকে গ্রেফতার করে। উদ্ধার হয় আকাঙ্ক্ষার দেহাবশেষ। জেরায় পুলিশ জানতে পারে, বাবা বীরেন্দ্রকুমার দাস ও মা ইন্দ্রাণী দাসকেও ২০১০ সালে খুন করে ছত্তীসগঢ়ের রায়পুরের বাড়ির বাগানে পুঁতে দিয়েছে উদয়ন। ৫ ফেব্রুয়ারি তাঁদের কঙ্কাল উদ্ধার হয়। সেই জোড়া খুনের মামলার তদন্ত করছে ছত্তীসগঢ়ের দীনদয়াল উপাধ্যায়নগর থানা।

আকাঙ্ক্ষা-খুনের চার্জশিট তিন মাসের মাথায় দাখিল করে বাঁকুড়া সদর থানার পুলিশ। শুরু হয় বিচারপর্ব। বাঁকুড়ার মুখ্য সরকারি আইনজীবী অরুণ চট্টোপাধ্যায় জানান, ১৯ জন সাক্ষ্য দেন। অরুণবাবু বলেন, “খুন ও দেহ লোপাটের মামলায় উদয়নকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। দোষীর সর্বোচ্চ সাজার জন্যই আদালতে আবেদন করব।” উদয়নের আইনজীবী অভিষেক বিশ্বাস বলেন, “উদয়নের বয়স কম। তার সর্বনিম্ন সাজার জন্য বিচারকের কাছে আবেদন জানাব।”

আকাঙ্ক্ষার পরিবার বর্তমানে দুর্গাপুরে থাকে। তাঁর ভাই আয়ূষ সত্যম শর্মা বলেন, “এই দিনটার অপেক্ষায় ছিলাম। দিদিকে হারানোর ক্ষত এখনও মেটেনি। উদয়নের চূড়ান্ত শাস্তি চাইছি আমরা।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Akansha Sharma Udayan Das Bankura
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE