Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

রাত ১২টায় মদের সঙ্গে খাবারও বন্ধ পানশালায়

কলকাতা-সহ রাজ্যের বেশির ভাগ পানশালার সঙ্গেই রেস্তরাঁ রয়েছে। নতুন নির্দেশিকায় তারা তো সমস্যায় পড়েছেই। টানাপড়েন আছে আবগারি দফতরেও। সেখানে প্রশ্ন উঠছে, আবগারি দফতর সুরা পান ও বিক্রি নিয়ন্ত্রণ করতে পারে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৮ জানুয়ারি ২০১৯ ০২:৩৮
Share: Save:

লাইসেন্সপ্রাপ্ত পানশালায় রাত ১২টা পর্যন্ত সুরা পান করা যাবে। এটাই ছিল এত দিনের নিয়ম। তার পরে আর নয়। এ বার নতুন নির্দেশিকা জারি করে রাজ্যের আবগারি দফতর জানিয়ে দিয়েছে, যে-সব পানশালার সঙ্গে রেস্তরাঁ রয়েছে, তারা রাত ১২টার পরে খাবারও দিতে পারবে না। তার আগে নেওয়া খাবার শেষ করতে হবে ওই ১২টার মধ্যেই।

কলকাতা-সহ রাজ্যের বেশির ভাগ পানশালার সঙ্গেই রেস্তরাঁ রয়েছে। নতুন নির্দেশিকায় তারা তো সমস্যায় পড়েছেই। টানাপড়েন আছে আবগারি দফতরেও। সেখানে প্রশ্ন উঠছে, আবগারি দফতর সুরা পান ও বিক্রি নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। কিন্তু রেস্তরাঁয় কত ক্ষণ খাওয়া যাবে, তা ঠিক করে দেওয়ার আবগারি দফতর কে?

বিভিন্ন রেস্তরাঁ-কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, এত দিন যাঁরা রাত সাড়ে ১১টার পরে সুরা চাইতেন, তাঁদের বলা হত, ১২টার মধ্যে সেই সুরা পান শেষ করতে হবে। তাঁদের অনেকেই রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ খাবার চাইলে তা দিয়ে দেওয়া হত। তাঁরা মাঝরাতের পরে বসেও সেই খাবার শেষ করতেন। নতুন নিয়মে এ বার রাত ১২টার মধ্যে খাওয়াও শেষ করতে হবে। ‘‘সুরা ১৫-২০ মিনিটে শেষ করা যায়। কিন্তু গ্রাহক এত তাড়াতাড়ি খাওয়া শেষ করবেন কী ভাবে,’’ প্রশ্ন এক পানশালা-মালিকের।

ক্ষোভ থাকলেও পানশালার মালিকদের কেউই প্রকাশ্যে আসতে চাইছেন না। তবে ‘হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্ট অ্যাসোসিয়েশন অব ইস্টার্ন ইন্ডিয়া’র সাম্প্রতিক বোর্ড মিটিংয়ে এই বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। কলকাতার এক পানশালার মালিক জানান, হাইওয়ের পাশে বড় বড় ধাবার বেশির ভাগেরই পানশালা চালানোর লাইসেন্স রয়েছে। রাত ১২টা পর্যন্ত সেখানে সুরা পান করা যায়। বাকি রাত খাবারের জন্য ধাবা খোলা থাকে। নতুন নিয়মে সেই ধাবাগুলিকে রাত ১২টার মধ্যে ঝাঁপ ফেলে দিতে হবে। তাতে সমস্যায় পড়বেন পথচলতি সাধারণ মানুষ।

রাত ১২টার পরে পানশালা চালু রাখতে চাইলে সরকারকে অতিরিক্ত টাকা দিয়ে তা রাখা যায়। সে-ক্ষেত্রে রাত ১২টার পরে অতিরিক্ত দু’ঘণ্টা পানশালা খুলে রাখার জন্য দিনে অতিরিক্ত প্রায় ৩০ হাজার টাকা দিতে হয়। পানশালার মালিকদের একাংশের অভিযোগ, খাবারের উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করে সরকার তাঁদের অতিরিক্ত টাকা দিয়ে গভীর রাত পর্যন্ত পানশালা খুলে রাখার পথে হাঁটতে বাধ্য করাচ্ছে।

আবগারি দফতরের এক কর্তা জানান, প্রতিটি পানশালার ভিতরে একটি নির্দিষ্ট এলাকা (ব্লু প্রিন্ট জ়োন) রয়েছে। শুধু সেখানেই রাত ১২টা পর্যন্ত সুরা সরবরাহ করা যায়। অন্যত্র যায় না। শুধু সেই ব্লু প্রিন্ট জ়োনকেই রাত ১২টার পরে পুরোপুরি বন্ধ করতে বলা হয়েছে। তার বাইরে রেস্তরাঁর অন্য অংশে যদি খাবার সরবরাহ করা হয়, তা হলে আবগারি দফতর আপত্তি করবে না। তাঁর কথায়, ‘‘আমাদের কাছে অভিযোগ আসছিল, রাত ১২টার পরেও সাদা রাম ও ভদকা সরবরাহ করা হচ্ছিল। তা জলের মতো দেখতে। ফলে বাইরে থেকে দেখে বোঝার উপায় থাকে না। ফলে ‘জল’-এর গ্লাস ও খাবার নিয়ে রাত ১২টার পরেও চলছিল নেশা।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Bar Restaurants Liquor West Bengal Excise
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE