Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪

তথ্য ফাঁসের অভিযোগ, ধৃত বিজ্ঞানী

তদন্তকারীরা জানান, কিছু দিন আগে একটি সংবাদপত্রে সিএমইআরআই সংক্রান্ত খবর প্রকাশিত হয়। তার পরে গত বছরের ৯ নভেম্বর সিএমইআরআই কর্তৃপক্ষ এক জনের নামে গোপন তথ্য চুরির অভিযোগ করেন। ওই অভিযোগের তদন্তে নেমে রবিবার রুদ্রবাবুকে দমদমের বাড়ি থেকে আটক করে পুলিশ।

দুর্গাপুর আদালতের পথে রুদ্র চট্টোপাধ্যায়। নিজস্ব চিত্র

দুর্গাপুর আদালতের পথে রুদ্র চট্টোপাধ্যায়। নিজস্ব চিত্র

সুব্রত সীট
দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০১:০১
Share: Save:

তথ্য ফাঁসের অভিযোগে দুর্গাপুরের ‘সেন্ট্রাল মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউট’-এর (সিএমইআরআই) এক বিজ্ঞানীকে গ্রেফতার করল দুর্গাপুর থানার পুলিশ। পুলিশ জানায়, ধৃত বিজ্ঞানী রুদ্র চট্টোপাধ্যায় দমদমের বাসিন্দা।

তদন্তকারীরা জানান, কিছু দিন আগে একটি সংবাদপত্রে সিএমইআরআই সংক্রান্ত খবর প্রকাশিত হয়। তার পরে গত বছরের ৯ নভেম্বর সিএমইআরআই কর্তৃপক্ষ এক জনের নামে গোপন তথ্য চুরির অভিযোগ করেন। ওই অভিযোগের তদন্তে নেমে রবিবার রুদ্রবাবুকে দমদমের বাড়ি থেকে আটক করে পুলিশ। সোমবার তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশ জানায়, প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষের সন্দেহ, সংশ্লিষ্ট তথ্য ফাঁস করেছেন রুদ্রবাবুই। রুদ্রবাবুর অবশ্য দাবি, ‘‘কোনও গোপন তথ্য ফাঁস করিনি।’’

এ দিন দুর্গাপুর আদালতের পথে রুদ্রবাবু অভিযোগ করেন, ‘‘গাছ কাটা, আর্থিক তছরুপ, নিয়োগ সংক্রান্ত দুর্নীতি, ডিরেক্টর পদে নিয়োগে অনিয়ম-সহ নানা বিষয়ে তদন্ত চেয়েছি। ডিরেক্টর হরিশ হিরানির বিরুদ্ধে সিবিআই-এর কাছে অভিযোগ করেছি। এ সবের জন্য আমাকে বেআইনি ভাবে লুধিয়ানায় বদলি করেছেন ডিরেক্টর। আমি তাঁর বিরুদ্ধে হাইকোর্টে মামলা করেছি। তাই তিনি মিথ্যা অভিযোগে আমাকে ফাঁসিয়েছেন।’’

ডিরেক্টর হরিশবাবু অবশ্য যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি জানান, প্রতিষ্ঠানের লুধিয়ানা শাখায় রুদ্রবাবুকে বদলি করা হয়েছে। কিন্তু তিনি যেতে রাজি না হয়ে মামলা করেছেন। ডিরেক্টরের বক্তব্য, ‘‘মামলার কী অবস্থা, জানা নেই। প্রতিষ্ঠান থেকে বেশ কিছু গোপন কাগজপত্র চুরি গিয়েছে। সেই অভিযোগ থানায় জানিয়েছি। রুদ্রবাবুকে পুলিশ কেন গ্রেফতার করেছে, তা জানা নেই।’’ তাঁর আরও দাবি, গাছ কাটার আগে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমতি নেওয়া হয়েছে। আর্থিক তছরুপ বা নিয়োগ সংক্রান্ত কোনও দুর্নীতির অভিযোগ কেউ জানাননি। এমনকি, রুদ্রবাবুও অভিযোগ করেননি।

পুলিশের ভূমিকা নিয়েও অভিযোগ করেছেন রুদ্রবাবু। তাঁর দাবি, তাঁর নামে কোনও অভিযোগ নেই। তাঁকে সাক্ষী হিসেবে দুর্গাপুরে এনে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। হাইকোর্টে তাঁর মামলার শুনানি রয়েছে। তা জানার পরেও তাঁকে জোর করে দমদম থেকে দুর্গাপুর থানায় এনে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশের অবশ্য দাবি, প্রাথমিক তদন্তে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতেই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের ডিসি (পূর্ব) অভিষেক মোদী বলেন, ‘‘অভিযুক্তের বিরুদ্ধে চুরি, বিশ্বাসভঙ্গ, পরিচয় গোপন রেখে প্রতারণা, অনধিকার প্রবেশ, গুরুত্বপূর্ণ কাগজ জাল করা, ভয় দেখানো এবং ‘অফিসিয়াল সিক্রেসি অ্যাক্ট ১৯২৩’-এর ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।’’ এ দিন ধৃতকে আদালতে তোলা হলে অভিযুক্ত বিজ্ঞানীর পাঁচ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Durgapur Scientist Crime
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE