Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
জেলাশাসকের নির্দেশের পরেও জমে আবর্জনা

ধমক খেয়েও হাল ফেরেনি হাসপাতালের

রোগী ও রোগীর আত্মীয়দের অভিযোগ, হাসপাতালের সব আলো জ্বলে না। প্রয়োজনে মেলে না সরকারি অ্যাম্বুল্যান্স। বেসরকারি সংস্থা পরিচালিত অনেক অ্যাম্বুল্যান্স হাসপাতাল চত্বরেই দাঁড়িয়ে থাকে।

অপরিচ্ছন্ন: হাসপাতাল চত্বরে ঘুরে বেড়াচ্ছে শুয়োর। ছবি: দীপঙ্কর দে।

অপরিচ্ছন্ন: হাসপাতাল চত্বরে ঘুরে বেড়াচ্ছে শুয়োর। ছবি: দীপঙ্কর দে।

গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায়
উত্তরপাড়া শেষ আপডেট: ০২ ডিসেম্বর ২০১৭ ০২:৩২
Share: Save:

সপ্তাহখানেক আগে উত্তরপাড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতাল পরিদর্শনে এসেছিলেন হুগলির জেলাশাসক সঞ্জয় বনশল। হাসপাতালে ঢোকার মুখে জমে থাকা আবর্জনা, দেওয়ালের সর্বত্র পানের পিক, কফ দেখে বিরক্তি প্রকাশ করেছিলেন তিনি। অপরিচ্ছন্ন হাসপাতালের পাশাপাশি কেন হাসপাতাল চত্বরে বাইরের গাড়ি ভিড় করে দাঁড়িয়ে রয়েছে, তাও হাসপাতাল সুপারের কাছে জানতে চেয়েছিলেন। খতিয়ে দেখেছিলেন হাসপাতালে সরকারি সুলভ মূল্যের ওষুধের দোকানের হাল-হকিকত। তার পর কিছু দিনের জন্য ছবিটি বদলেছিল। কিন্তু তারপর সে কে সেই!

জেলাশাসকের ধমকের পরেও পরিস্থিতি বিন্দুমাত্র বদলায়নি বলে অভিযোগ রোগী ও তাঁদের পরিজনদের। হাসপাতালে বাইরের লোক এবং রোগীর বাড়ির পরিজন মিলিয়ে প্রচুর মানুষের যাতায়াত করেন উত্তরপাড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে। তাই হাসপাতালের মধ্যেই হোটেল, চায়ের দোকান খুলে ফেলেছেন কয়েকজন। হাসপাতাল চত্বরে গরু এবং শুয়োর ঘুরে বেরাতে দেখা গিয়েছে। অভিযোগ, এক শ্রেণির গাড়ি চালক আবার হাসপাতালের একাংশে গ্যারাজ বানিয়ে ফেলেছেন।

রোগী ও রোগীর আত্মীয়দের অভিযোগ, হাসপাতালের সব আলো জ্বলে না। প্রয়োজনে মেলে না সরকারি অ্যাম্বুল্যান্স। বেসরকারি সংস্থা পরিচালিত অনেক অ্যাম্বুল্যান্স হাসপাতাল চত্বরেই দাঁড়িয়ে থাকে। ফলে রোগীদের হাসপাতালে ঢোকা এবং বেরোনোয় অসুবিধা হয়। অভিযোগ, আঁধার নামলেই এই হাসপাতাল চত্বরে বসে যায় মদের আসর। বহিরাগত লোকজনে ভরে থাকে হাসপাতাল চত্বর।

হাসপাতাল চত্বরের বিভিন্ন জায়গায় অল্প বৃষ্টিতেই জল জমে। হাসপাতালের রান্নাঘর লাগোয়া নিচু জায়গায় জল জমে ছোটখাটো ডোবার চেহারা নেয়। রাজ্য জুড়ে ডেঙ্গি নিয়ে প্রশাসনিক তৎপরতা শুরু হলেও এই হাসপাতাল চত্বরই কার্যত মশার বাসা হয়ে দাঁড়িয়েছে। হাসপাতাল পরিদর্শনে গিয়ে কয়েকজন রোগীর সঙ্গে কথা বলেছিলেন জেলাশাসক। সুলভ মূল্যর ওষুধের দোকানে প্রয়োজনীয় ওষুধ রয়েছে কি না সেটাও খোঁজ নিয়েছিলেন। তখন খাবারের মান, রোগীদের পোশাক, বিছানার অপরিচ্ছন্ন চাদর নিয়ে নানা অভিযোগ উঠেছিল। দোকানের বাইরে ডাঁই করে ফেলে রাখা খালি ওষুধের প্যাকেট দেখেও ক্ষোভপ্রকাশ করেছিলেন তিনি।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলাশাসক বলেছিলেন হাসপাতাল চত্বর থেকে গাড়ি এবং বেসরকারি অ্যাম্বুল্যান্স সরানোর জন্য প্রয়োজনে পুলিশের সাহায্য নিতে। কিন্তু তার পরেও সে বিষয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ গা করেনি বলে অভিযোগ।

বিষয়টি জানার পরে জেলাশাসক সঞ্জয় বনশল বলেন, ‘‘আমি প্রয়োজনে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ফের কথা বলব।’’ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বক্তব্য মেলেনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Insufficient Infrastructure Healthcare Hospital
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE