Advertisement
১৭ এপ্রিল ২০২৪

সব হাসপাতালে আতঙ্ক-বোতাম, চালু সুরক্ষা নম্বর

সরকারি হাসপাতালগুলির নিরাপত্তায় নোডাল অফিসার পদে নিয়োগ করা হয়েছে কলকাতা পুলিশের ডেপুটি কমিশনার (কমব্যাট) নভেন্দর সিংহ পালকে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ জুন ২০১৯ ০২:১৩
Share: Save:

জুনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গে বসে নিরাপত্তার আশ্বাস দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই অনুযায়ী কলকাতার সরকারি হাসপাতালের নিরাপত্তার জন্য ২৪ ঘণ্টার জন্য টোল-ফ্রি নম্বর চালু করে দিল লালবাজার। সেই নম্বর হল ১৮০০৩৪৫৮২৪৬। এই নম্বরে শুধু নিরাপত্তা সংক্রান্ত অভিযোগ করা যাবে। স্বাস্থ্য-শিক্ষা অধিকর্তা প্রদীপ মিত্র মঙ্গলবার ফোন করে নম্বরটি পরখ করে নেন।

সরকারি হাসপাতালগুলির নিরাপত্তায় নোডাল অফিসার পদে নিয়োগ করা হয়েছে কলকাতা পুলিশের ডেপুটি কমিশনার (কমব্যাট) নভেন্দর সিংহ পালকে। তাঁর অধীনে থাকছেন ছ’জন অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার (এসি)। এক-একটি হাসপাতালের ভার এক জন এসি-র। তবে বিধানচন্দ্র রায় শিশু হাসপাতাল এবং বেলেঘাটা আইডি-র জন্য এসি থাকছেন এক জনই।

লালবাজার সূত্রের খবর, প্রতিটি মেডিক্যাল কলেজে নিরাপত্তা এবং আইনশৃঙ্খলা দেখার জন্য আছেন এক জন ইনস্পেক্টর। তাঁদের উপরে বসানো হল এসি-কে। হাসপাতালের ফাঁড়িতে পুলিশকর্মী বাড়ানো হচ্ছে। মঙ্গলবার লালবাজারে পুলিশ কমিশনার অনুজ শর্মার বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হয়েছে।

সোমবার নবান্নে নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজের জুনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গে বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেছিলেন, প্রতিটি সরকারি হাসপাতালের পরিস্থিতি এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থা খতিয়ে দেখার জন্য এক জন নোডাল অফিসার নিয়োগ করা হবে। এ ছাড়াও হাসপাতালের জন্য এক গুচ্ছ নিরাপত্তা ব্যবস্থার কথা ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।

আরও পড়ুন: জাত তুলে নিগ্রহ প্রমাণিত হলেই কড়া শাস্তি: পার্থ

এ দিনের বৈঠকে ঠিক হয়েছে, প্রতিটি হাসপাতালের তিনটি করে প্যানিক বোতাম বা অ্যালার্ম থাকবে। যার সঙ্গে যুক্ত থাকবে হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ি, স্থানীয় থানা এবং ডিভিশনাল কন্ট্রোল রুম। কোনও রকম অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে ওই বোতামে চাপ দিলেই বার্তা পৌঁছে যাবে পুলিশ ফাঁড়ি, স্থানীয়
থানা এবং‌ কন্ট্রোল রুমে। লালবাজারের এক কর্তা জানান, ইতিমধ্যেই হাসপাতালগুলিতে বেশ কিছু সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। আরও কিছু সিসি ক্যামেরা লাগানো প্রয়োজন। হাসপাতালগুলিকে সেই সব জায়গা চিহ্নিত করে সিসি ক্যামেরা বাড়াতে বলা হয়েছে। সেগুলিও যুক্ত থাকবে পুলিশ ফাঁড়ি, স্থানীয় থানা এবং‌ কন্ট্রোল রুমের সঙ্গে।

এ দিনের বৈঠকে আরও ঠিক হয়েছে, জরুরি বিভাগে রোগী নিয়ে এলে পরিচয়পত্র দেখিয়ে ঢুকতে হবে। রোগী-পিছু দু’টি পরিচয়পত্র দেওয়া হবে। পুলিশি সূত্রে জানানো হয়েছে, প্রতিটি হাসপাতালেই বহিরাগত এব‌ং বেআইনি পার্কিং ঠেকাতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পুরো বিষয়টির তদারক করবেন নোডাল অফিসার তথা ডিসি (কমব্যাট)। তিনি বৈঠক করবেন হাসপাতালের প্রশাসনিক কর্তাদের সঙ্গে। সেই বৈঠকেই হাসপাতালের নিরাপত্তা ব্যবস্থা চূড়ান্ত করা হবে।

এ দিনের বৈঠকের পরেই ডিসি (কমব্যাট) সোজা চলে যান নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। তাঁর সঙ্গে ছিলেন ডিসি (ইএসডি) দেবস্মিতা দাস, এন্টালি থানার ওসি দেবাশিস দত্ত। তাঁরা বৈঠক করেন এনআরএসের ডেপুটি সুপার দ্বৈপায়ন বিশ্বাস, এমএসভিপি সৌরভ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে।

প্রতিটি হাসপাতালেই একটি করে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ তৈরি করা হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ। সেই গ্রুপের সঙ্গে হাসপাতালের শীর্ষ কর্তা থেকে শুরু করে স্থানীয় পুলিশকর্তারা যুক্ত থাকবেন। কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে ওই গ্রুপে তা জানানো হবে। সংশ্লিষ্ট সকলে তা জানতে পারবেন এবং ব্যবস্থা নেবেন দ্রুত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE