Advertisement
১৭ এপ্রিল ২০২৪

গুলিবিদ্ধ বিজেপি কর্মীর নামেই খুনের অভিযোগ

সোমবার রাতেই শ্যামসুন্দরের বিরুদ্ধেই অভিযোগ করেন নিহত দিলদারের বাবা তহিদ খান। মঙ্গলবার তার ভিত্তিতে মামলা রুজু করেছে পুলিশ। তহিদের অভিযোগ, ‘‘শ্যামসুন্দরের নেতৃত্বেই ছেলের উপরে হামলা হয়।’’ তবে এখনও কাউকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে কোনও খবর নেই।

নিজস্ব সংবাদদাতা
সিউড়ি শেষ আপডেট: ২৫ জুন ২০১৮ ০১:০৯
Share: Save:

আগের দিনই গুলিবিদ্ধ হয়ে প্রাণ গিয়েছে এক যুবকের। মঙ্গলবার জেলা সদর সিউড়ি ছিল মোটের উপরে স্বাভাবিক। কিন্তু, জেলার প্রশাসন ভবনের সামনে থেকে শুরু করে চায়ের দোকান— ঘুরে ফিরে এসেছে আগের দিনের ‘তাণ্ডব’-এর কথা। সোমবার মনোনয়ন জমা দিতে এসে সদর শহর থেকে মাত্র দু’কিলোমিটার দূরে কড়িধ্যার নিহত হন দিলদার খান। গত বছর এই কড়িধ্যাই অস্ত্রমিছিলের সাক্ষী থেকেছে। রামনবমী থেকে হনুমানজয়ন্তী কিংবা জেলা সদরে বড়সড় মিছিল— সবেতেই কড়িধ্যার ভূমিকা যথেষ্ট। বীরভূমে যে ক’টি জায়গায় বিজেপি-র শক্তি রয়েছে, তার অন্যতম এই অঞ্চল।

কিন্তু, কড়িধ্যায় এত অস্ত্র এল কোথা থেকে? জেলা পুলিশ সূত্রের খবর, ময়ূরাক্ষীর বালিঘাট দখলকে ঘিরে প্রায়ই অশান্ত হয় এই অঞ্চল। অস্ত্র হাতে দুষ্কৃতীদের লড়াই এখানে নতুন নয়। পুলিশ সব জেনেও সক্রিয় হয় না বলে এলাকাবাসীর একাংশের অভিযোগ। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুপুর সওয়া ১২টা নাগাদ কড়িধ্যায়, সিউড়ি ১ ব্লক অফিসের দুশো মিটারের মধ্যে শুরু হয় বোমাবাজি। যুযুধান বিজেপি এবং তৃণমূল। আগের দফায় মনোনয়ন জমা করতে না পেরে সোমবার প্রার্থী দিতে মরিয়া ছিল বিজেপি। সেই মতো গ্রাম পঞ্চায়েত এবং পঞ্চায়েত সমিতির একাধিক আসনে মনোনয়ন জমা করতে যাচ্ছিলেন বিজেপির প্রার্থী ও প্রস্তাবকেরা। বিজেপির অভিযোগ ছিল, তা দেখে মুড়ি-মুড়কির মতো বোমা ফেলতে শুরু করে কিছু দুষ্কৃতী। চলে গুলিও। তৃণমূলের বিরুদ্ধেই অভিযোগ বিজেপি-র। তৃণমূলের পাল্টা দাবি, এলাকা অশান্ত করতে ঝাড়খণ্ডের বহিরাগতদের ভাড়া করে এনে তাদের হাতে বোমা-গুলি তুলে দিয়েছে বিজেপি-ই।

বিজেপি-র আরও অভিযোগ, প্রথমে শ্যামসুন্দর গড়াই নামে তাদের এক কর্মীর বাঁ-হাতে গুলি লাগে। তার মধ্যেই ব্লক অফিসের দিক থেকে ছুটে আসতে থাকে সশস্ত্র দুষ্কৃতীরা। তখনই গুলিবিদ্ধ হয় মৃত্যু হয় দিলদারের। পুলিশকে ধারেপাশে দেখা যায়নি বলেও অভিযোগ। এর আগে সিউড়িতে জেলা প্রশাসনিক ভবনের কাছে থাকা বিজেপির জেলা অফিসেও দুষ্কৃতীরা হামলা চালায় বলে অভিযোগ।

সোমবার রাতেই শ্যামসুন্দরের বিরুদ্ধেই অভিযোগ করেন নিহত দিলদারের বাবা তহিদ খান। মঙ্গলবার তার ভিত্তিতে মামলা রুজু করেছে পুলিশ। তহিদের অভিযোগ, ‘‘শ্যামসুন্দরের নেতৃত্বেই ছেলের উপরে হামলা হয়।’’ তবে এখনও কাউকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে কোনও খবর নেই। জেলা বিজেপির সভাপতি রামকৃষ্ণ রায়, সিপিএমের জেলা সম্পাদক মনসা হাঁসদার দাবি করেছিলেন, ‘‘গণতন্ত্রকে তৃণমূল যে প্রহসনে পরিণত করেছে, সেটা ফের প্রমাণ হয়েছে সোমবার।’’ অনুব্রত মণ্ডলের প্রতিক্রিয়া ছিল, ‘‘আমরা কী করলাম? ঝাড়খণ্ড থেকে সশস্ত্র লোক এনে বিজেপিই যা করার করেছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE