Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
State News

বাংলায় ৩৫৬ ধারা ঘিরে ফিরল বিতর্ক

বিজেপি বা কংগ্রেস দাবি করলেও লোকসভার প্রাক্তন স্পিকার সোমনাথ চট্টোপাধ্যায় অবশ্য রাষ্ট্রপতির শাসন জারি নিয়ে সরাসরি মন্তব্যে নারাজ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৯ মে ২০১৮ ০৪:০০
Share: Save:

বাম আমলে সন্ত্রাসের অভিযোগে রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসন জারির দাবিতে বহু বার সরব হয়েছিলেন তৎকালীন বিরোধী নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর সরকারের আমলে দ্বিতীয় পঞ্চায়েত নির্বাচনকে ঘিরে ঘটনাবলির প্রেক্ষিতে ফের সেই ৩৫৬ ধারা সংক্রান্ত বিতর্ক ফিরে এল বাংলায়।

এ বার পঞ্চায়েত ভোটের দিনই রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠীর সঙ্গে দেখা করে রাজ্য জুড়ে শাসক দলের ‘তাণ্ডবে’র বিবরণ দিয়ে রাজ্য বিজেপি দাবি করেছিল, বাংলার পরিস্থিতি ৩৫৬ ধারা জারি করার মতোই। বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপবাবুর মতে, ন্যূনতম গণতান্ত্রিক অধিকারও এখানে সুরক্ষিত নয়, আইনশৃঙ্খলাও বেহাল। পঞ্চায়েতের ফলঘোষণার দিন রাজভবনে গিয়ে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী, সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্য, অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়েরা লিখিত ভাবে দাবি জানিয়েছেন, রাজ্যে ৩৫৫ বা ৩৫৬ ধারা জারি করলে তবেই স্বাভাবিক রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের পরিবেশ পাওয়া যাবে। বিরোধীদের মধ্যে সিপিএম নীতিগত ভাবে ৩৫৬ ধারা জারির বিরুদ্ধে। তবে পঞ্চায়েত নির্বাচন ও গণনার নামে ‘প্রহসন’ দেখিয়ে দলের একাংশ বলতে শুরু করেছে, কেন্দ্রীয় হস্তক্ষেপ চাওয়া ছাড়া আর পথ খোলা নেই।

বিজেপি বা কংগ্রেস দাবি করলেও লোকসভার প্রাক্তন স্পিকার সোমনাথ চট্টোপাধ্যায় অবশ্য রাষ্ট্রপতির শাসন জারি নিয়ে সরাসরি মন্তব্যে নারাজ। তাঁর মতে, ‘‘গণতান্ত্রিক ভাবে নির্বাচিত কোনও সরকারের বিরুদ্ধে ৩৫৬ ধারা হল একটি চরম পদক্ষেপ। আইনশৃঙ্খলা একেবারে ভেঙে পড়লে বা প্রশাসনিক ব্যবস্থা কিছু না থাকলে তখন এমন ব্যবস্থা নেওয়া যায়। বিরোধী দলগুলো দাবি করতে পারে। কিন্তু বাংলার পরিস্থিতি ঠিক কেমন, তা নিয়ে প্রত্যক্ষ ভাবে তথ্য আমার হাতে নেই। তাই এই নিয়ে মন্তব্য করা কঠিন।’’ শাসক দলের তরফে মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় প্রত্যাশিত ভাবেই কটাক্ষ করছেন, ‘‘পায়ের তলার মাটি হারিয়ে বিরোধীরা এই সব দাবি তুলছে!’’

প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীরবাবুর যুক্তি, ‘‘পঞ্চায়েত ভোটে মনোনয়ন, ভোটগ্রহণ, গণনা— সব কিছুতেই গা-জোয়ারি হয়েছে। মনে হচ্ছে, বাংলায় বিরোধী মানে আমরা যেন নিষিদ্ধ দল করি! শাসক দলের অন্যায়ে পুলিশ-প্রশাসন প্রত্যক্ষ ভাবে মদত দিচ্ছে। এর পরে কেন্দ্রীয় সরকারের হস্তক্ষেপ ছাড়া স্বাভাবিক রাজনীতি সম্ভব নয়।’’

এমতাবস্থায় সিপিএম পড়েছে উভয় সঙ্কটে। বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু বলেছেন, রাজ্য প্রশাসনের কাছে নির্বাচনে বা কোনও ক্ষেত্রেই সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ব্যবস্থা আশা করা সম্ভব নয়। তবে ৩৫৬ ধারার দাবি তাঁরা করছেন না। কিন্তু গৌতম দেবের মতো সিপিএম নেতারা বলছেন, ক্ষমতা দখলের জন্য বামেরা কোনও নির্বাচিত সরকারকে জোর করে ফেলে দেওয়ার অবশ্যই বিরোধী। কিন্তু পঞ্চায়েত ভোটকে ঘিরে গণতন্ত্র যে ভাবে ভূলুণ্ঠিত হয়েছে, তার পরে কেন্দ্রীয় হস্তক্ষেপের দাবি তোলা ছাড়া পথ নেই বলে তাঁরা মনে করেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE