Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪
State News

নিরঙ্কুশ জয় তৃণমূলের, ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তায় বিরোধীরা

অতীতের সব নজির ভেঙে এ বার রাজ্যের অন্তত ৯টি জেলা পরিষদ বিরোধীশূন্য। বাকি জেলা পরিষদগুলিতে বিরোধীদের অস্তিত্ব টিমটিম করছে। পঞ্চায়েত সমিতি ও গ্রাম পঞ্চায়েতেও বিরোধীদের হাল তথৈবচ। পঞ্চায়েত ভোটে এমন ফলাফলের পরে তাদের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে বিরোধীরা চিন্তিত বটেই। চিন্তা থাকছে শাসক দলের জন্যও।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৯ মে ২০১৮ ০৩:৪৭
Share: Save:

অতীতের সব নজির ভেঙে এ বার রাজ্যের অন্তত ৯টি জেলা পরিষদ বিরোধীশূন্য। বাকি জেলা পরিষদগুলিতে বিরোধীদের অস্তিত্ব টিমটিম করছে। পঞ্চায়েত সমিতি ও গ্রাম পঞ্চায়েতেও বিরোধীদের হাল তথৈবচ। পঞ্চায়েত ভোটে এমন ফলাফলের পরে তাদের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে বিরোধীরা চিন্তিত বটেই। চিন্তা থাকছে শাসক দলের জন্যও।

নিরঙ্কুশ জয়ের পরে এ বার তৃণমূলের সামনে চ্যালেঞ্জ নির্বিঘ্নে বোর্ড গঠন করা। বিরোধীদের দুরমুশ করার পরে নতুন বোর্ডে কারা জায়গা পাবেন, তা নিয়ে শুক্রবার থেকেই কিছু জেলায় টানাপড়েন শুরু হয়েছে। বিরাট সংখ্যায় যে নির্দল প্রার্থীরা জিতেছেন, তাঁদের জন্যও দরজা খোলা রাখার কথা বলছেন তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব। কিন্তু ‘সরকারি’ তৃণমূলের সঙ্গে ‘বিক্ষুব্ধ’দের সহাবস্থান কতটা মসৃণ হবে, তা নিয়ে শাসক দলের অন্দরেই চর্চা আছে।

এরই পাশাপাশি এ দিন থেকেই কিছু এলাকায় হামলার মুখে পড়তে হচ্ছে শাসক দলকে। রাজনৈতিক শিবিরের একাংশের বক্তব্য, স্থানীয় প্রশাসনের কোনও স্তরেই এ বার বিরোধীদের বলার মতো অস্তিত্ব নেই। তাই ক্ষোভ বা প্রতিবাদ জানানোর জায়গাও থাকছে না। এমতাবস্থায় হতাশা এবং ক্ষোভ সহজেই হিংসাত্মক হয়ে ওঠার আশঙ্কা থাকছে। যার প্রতিফলন এ দিনই খানিকটা দেখা গিয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুর, পূর্ব বর্ধমান বা দক্ষিণ ২৪ পরগনার কোনও কোনও জায়গায়। সন্ত্রাসের অভিযোগে কেশিয়াড়িতে বন্‌ধেরও ডাক দিয়েছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ।

গোপীবল্লভপুরের হাতিবাড়ি মোড় এলাকায় বৃহস্পতিবার গভীর রাতে তৃণমূলের একটি দলীয় কার্যালয়ে দরজা ভেঙে ভাঙচুর চালানো হয় বলে অভিযোগ। পুড়িয়ে দেওয়া হয় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি। পুলিশের দাবি, সিসিটিভি ফুটেজ দেখে ওই ঘটনায় বিজেপি-র ব্লক সহ-সভাপতি ভগীরথ সেনাপতি-সহ ৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়। তৃণমূলের অভিযোগ, শুক্রবার সকালে আবার আমরদা গ্রামে তাদের সমর্থক দিব্যকান্ত ভুঁইয়ার বাড়িতে চ়়ড়াও হয়ে বিজেপির লোকেরা তাঁকে ও বাড়ির মহিলাদেরও মারধর করে। গোপীবল্লভপুর থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে দু’জন বিজেপি কর্মীকে আটক করে। ধৃতদের পুলিশের গাড়িতে তোলার সময় বাধা দেন বিজেপির লোকজন। পুলিশের তিনটি গাড়িতে ভাঙচুর করা হয় বলে অভিযোগ। মারধর করা হয় পুলিশকর্মীদের। জখম হন ৬ পুলিশ কর্মী। বিজেপির অভিযোগ, তাদের ফাঁসানো হচ্ছে। ঝাড়গ্রামের পুলিশ সুপার অমিতকুমার ভরত রাঠৌর বলেন, “মোট ১৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।”

ভোট গণনার পরেই তৃণমূলের পিংবনি অঞ্চলের নেতা কংকন মুখোপাধ্যায়-সহ আরও কয়েক জনকে পঞ্চায়েত অফিসে ঢুকিয়ে চাবি দিয়ে আটকে রাখে বিজেপির কর্মীরা। বিজেপির দাবি, পঞ্চায়েতে হারার পর তৃণমূলের নেতারা গোপন নথি পাচারের চেষ্টা করছিলেন, গ্রামবাসীরা তাঁদের আটকে পুলিশে খবর দেয়।

বামফ্রন্ট এ দিন বিবৃতি দিয়ে বলেছে, ‘এই প্রথম বাংলার মানুষ দেখল, ভোটগণনার দিনও তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা ব্যালট বার করে তার উপরে ছাপ মারছে। গণনায় চূড়ান্ত কারচুপি করা হয়েছে, জয়ী প্রার্থীদের পরাজিত বলে ঘোষণা করা হয়েছে। চূড়ান্ত দখলদারির মনোভাবের দ্বারা শাসক দল এ বার পঞ্চায়েত ভোট করে সব জেলা পরিষদ দখল করেছে’। নরেন্দ্র মোদী সরকারের চার বছর পূর্তিতে ‘দুঃশাসনে’র প্রতিবাদ জানাতে ২৩ মে মৌলালির রামলীলা ময়দানের সমাবেশে বাম গণসংগঠনগুলি রাজ্যের পরিস্থিতি নিয়েও সরব হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE