Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

কোর্টে স্বস্তি, মিছিলে রক্তাক্ত বাম

পঞ্চায়েত ভোটের প্রক্রিয়া স্থগিত রাখতে বলে কলকাতা হাইকোর্টের রায়কে স্বাগত জানাল সব বিরোধী দলই। একই দিনে রাজ্য নির্বাচন কমিশনারকে ‘মেরুদণ্ড’ উপহার দিতে যাওয়া বাম ছাত্র-যুব মিছিলের উপরে চলল পুলিশের লাঠি।

প্রতিবাদ: বিক্ষোভের সময় ধৃত বাম যুব সংগঠনের কর্মী। বৃহস্পতিবার কলকাতায় নির্বাচন কমিশনের দফতরের সামনে। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী।

প্রতিবাদ: বিক্ষোভের সময় ধৃত বাম যুব সংগঠনের কর্মী। বৃহস্পতিবার কলকাতায় নির্বাচন কমিশনের দফতরের সামনে। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ এপ্রিল ২০১৮ ০৪:০০
Share: Save:

পঞ্চায়েত ভোটের প্রক্রিয়া স্থগিত রাখতে বলে কলকাতা হাইকোর্টের রায়কে স্বাগত জানাল সব বিরোধী দলই। একই দিনে রাজ্য নির্বাচন কমিশনারকে ‘মেরুদণ্ড’ উপহার দিতে যাওয়া বাম ছাত্র-যুব মিছিলের উপরে চলল পুলিশের লাঠি। আর রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠীর কাছে গিয়ে বাংলায় ‘সন্ত্রাসের রাজত্ব’ ঠেকাতে কেন্দ্রীয় দল পাঠানোর দাবি তুললেন কংগ্রেসের অধীর চৌধুরী, প্রদীপ ভট্টাচার্য, আব্দুল মান্নানেরা।

কমিশন যে ভাবে শাসক দলের ‘চাপে’ নতিস্বীকার করছে, তার প্রেক্ষিতে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিল বিজেপি এবং বাম দলগুলি। হাইকোর্টের রায়কে স্বাগত জানিয়েও সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্রের মন্তব্য, ‘‘আত্মসন্তুষ্টির কোনও কারণ নেই। গত সাত বছরে আদালতের কোনও নির্দেশকেই এই সরকার মান্যতা দেয়নি। তাই লড়াই চলবে।’’ বিজেপি-বিরোধী দলগুলির ‘অগণতান্ত্রিক’ কাজকর্মের প্রতিবাদে দেশ জোড়া কর্মসূচির অঙ্গ হিসেবে গাঁধীমূর্তির তলায় এ দিন ধর্নার ফাঁকে দলের কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়ের দাবি, ‘‘হাইকোর্টের আদেশ তৃণমূলের গালে থাপ্পড় এবং গণতন্ত্রের জয়।’’ রাজভবন থেকে বেরিয়ে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীরবাবু বলেন, ‘‘নির্বাচন স্থগিত করা আমাদের উদ্দেশ্য নয়। তবে আদালত বিরোধীদের বক্তব্যকে মান্যতা দিয়েছে।’’

শাসক দলের তরফে মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় অবশ্য বলেছেন, ‘‘বিচারব্যবস্থায় আস্থা আছে। তবে এখন যারা উল্লসিত, তাদের দুঃখের দিন আসবে! জগাই-মাধাইদের উল্লাস থেকে সরে আসতে হবে।’’

প্রতীকী মৃতদেহ এবং গণতন্ত্রের ‘শহিদ বেদি’ নিয়ে কমিশনের দফতরের সামনে এ দিন গিয়েছিলেন বাম ছাত্র-যুবেরা। বেদিতে মালা দেওয়ার সময়ে পুলিশের দিকে ফুল ছোড়া হয়। কিছুক্ষণ পরে পুলিশ তাঁদের সরিয়ে দিতে গেলে ধস্তাধস্তি বাধে। পুলিশ লাঠিও চালায় বলে বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ। ঘটনায় আহত হন এসএফআইয়ের রাজ্য সভাপতি-সহ ১২ জন। পুলিশের হাতে আটক কর্মী-সমর্থকদের ছেড়ে দেওয়ার দাবিতে পার্ক স্ট্রিট, মল্লিকবাজার ও এজেসি বোস রো়ডে কিছুক্ষণ করে অবস্থান করে বামেরা।

বিজেপির ধর্নায় যোগ দিয়েছিলেন বিজয়বর্গীয়, দিলীপ ঘোষ, বাবুল সুপ্রিয়, রূপা গঙ্গোপাধ্যায়, জর্জ বেকার, রাহুল সিংহ, মুকুল রায়েরা। অন্য দিকে, ফিরোজা বেগম, সফিউজ্জামানদের মতো আক্রান্ত বিধায়কদের নিয়ে রাজ্যপালের কাছে গিয়েছিলেন অধীরবাবুরা। যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো থাকলেও বর্তমান পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে কেন্দ্রীয় দল পাঠানোর দাবি করেছেন তাঁরা। সাংসদ প্রদীপবাবু বলেন, ‘‘আগে রাজনৈতিক দলগুলোর সংঘর্ষ হ’ত। এখন সংবাদমাধ্যম থেকে সাধারণ মানুষ, সকলেই আক্রান্ত।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE