Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
State News

রাজ্যের রিপোর্টে হতাশ কমিশন, এখনও কাটেনি নিরাপত্তার জট

এই পরিস্থিতিতে, বুথের চরিত্র (ভালনারেবিলিটি রিপোর্ট) সম্পর্কে সাম্প্রতিক এবং পূর্ণাঙ্গ তথ্য এখনও সব জেলা থেকে কমিশনের হাতে আসেনি। অন্য দিকে নবান্নের দাবি, কমিশনের তরফে এই বিষয়ে নির্দিষ্ট কোনও নির্দেশিকাই নেই।

অমরেন্দ্রকুমার সিংহ ও সুরজিৎ কর পুরকায়স্থ

অমরেন্দ্রকুমার সিংহ ও সুরজিৎ কর পুরকায়স্থ

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ মে ২০১৮ ১৯:১৩
Share: Save:

কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে আজ, শুক্রবার পঞ্চায়েত মামলার শুনানি। ভোটের নিরাপত্তা সংক্রান্ত পরিকল্পনা এ দিন আদালতকে জানানোর কথা রাজ্য সরকার এবং রাজ্য নির্বাচন কমিশনের। তবে নিরাপত্তা পরিকল্পনা কী হতে পারে, তা নিয়ে বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত কমিশন এবং রাজ্যের মধ্যে টানাপড়েন চলেছে বলে খবর। এই পরিস্থিতিতে, বুথের চরিত্র (ভালনারেবিলিটি রিপোর্ট) সম্পর্কে সাম্প্রতিক এবং পূর্ণাঙ্গ তথ্য এখনও সব জেলা থেকে কমিশনের হাতে আসেনি। অন্য দিকে নবান্নের দাবি, কমিশনের তরফে এই বিষয়ে নির্দিষ্ট কোনও নির্দেশিকাই নেই।

অভিজ্ঞ আধিকারিকদের অনেকে জানাচ্ছেন, কোনও নির্বাচনের আগে বুথের চরিত্র নির্ধারণ করা অন্যতম প্রধান কাজ। সেই তথ্যের উপরে নির্ভর করেই অতি স্পর্শকাতর, স্পর্শকাতর এবং সাধারণ বুথ চিহ্নিত হয়। আবার এই তথ্য অনুযায়ীই নিরাপত্তাকর্মী মোতায়েনের নকশা তৈরি করে কমিশন। কিন্তু এখনও বুথের চরিত্র সংক্রান্ত পূর্ণাঙ্গ কোনও তথ্য না থাকায় বিস্মিত আধিকারিকদের অনেকেই।

জেলাশাসকদের কেউ কেউ জানাচ্ছেন, ভোটপর্বের শুরুতে বুথগুলির চরিত্র অনুযায়ী প্রাথমিক একটা রিপোর্ট তৈরি করা হয়েছিল। কিন্তু তা চূড়ান্ত রূপ পায়নি এখনও। কারণ, কোন কোন মাপকাঠির উপরে ভিত্তি করে বুথের চরিত্র বিশ্লেষণ করতে হবে, তা নিয়ে নির্দিষ্ট ভাবে কোনও নির্দেশিকা এখনও দেওয়া হয়নি কমিশনের তরফে। তবে কমিশন সূত্রের খবর, যে সব এলাকায় পঞ্চায়েত নির্বাচন হবে, সেখানকার বুথগুলি সম্পর্কে ৭ মে-র মধ্যে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে। প্রশ্ন উঠছে, আজ, শুক্রবার নির্বাচনের নিরাপত্তা নিয়েই হাইকোর্টে শুনানি হবে। সে ক্ষেত্রে অত দেরিতে বুথ-চরিত্রের হিসেব তৈরি করা কতটা যুক্তিযুক্ত?

হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চ ১৪ মে, পঞ্চায়েত ভোটের দিনকে ‘প্রস্তাবিত’ বলেছিল। আদালত জানিয়েছিল, এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে প্রধান বিচারপতি জ্যোতির্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ। ফলে এই বিষয়েও আদালতের মনোভাব কী হবে সে দিকে তাকিয়ে রয়েছে সব পক্ষই।

সূত্রের দাবি, বুধবার রাতে প্রশাসন এবং কমিশনের মধ্যে এক প্রস্ত কথা হয়েছে। ভোটের নিরাপত্তা নিয়ে কমিশনকে ফের ‘নিশ্চিত’ করেছে রাজ্য। আধিকারিকদের একাংশের অনুমান, আগে ভোটকেন্দ্র-পিছু (প্রেমিসেস) নিরাপত্তার বন্দোবস্ত করতে চাইলেও এখন বুথভিত্তিক ভাবেই নিরাপত্তারক্ষী নিয়োগ করতে চাইছে রাজ্য। তাঁদের ধারণা, রাজ্যের হিসেবে ২৪ হাজার অতি স্পর্শকাতর বুথ রয়েছে। সেই চরিত্রের বুথপিছু দু’জন করে সশস্ত্র এবং লাঠিধারী মোট চার জন পুলিশ দেওয়া হতে পারে। স্পর্শকাতর ১৪ হাজার বুথের এক একটিতে এক জন সশস্ত্র এবং দু’জন করে লাঠিধারী পুলিশ দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। সাধারণ ২১ হাজার বুথের এক একটির জন্য এক জন করে সশস্ত্র এবং লাঠিধারী, মোট দু’জন পুলিশকর্মী দেওয়া হতে পারে। এই হিসেবে সব বুথে ৫৯ হাজার সশস্ত্র পুলিশ মোতায়েন হতে পারে।

কিন্তু এই কাজ ছাড়াও পর্যবেক্ষক ও ভোটকর্মীদের নিরাপত্তা, ব্যালট বাক্স, ভোটের উপকরণের সুরক্ষা, হঠাৎ কোথাও আইনশৃঙ্খলার সমস্যা হলে তা সামলানো-সহ একাধিক কাজে অতিরিক্ত বাহিনী প্রয়োজন। সে ক্ষেত্রে ভিন্‌ রাজ্য থেকে আসা বাহিনী ব্যবহার করা হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে কোন রাজ্য থেকে কবে, কত বাহিনী আসবে, তা এখনও স্পষ্ট নয়। এই পরিকল্পনার কথা জেনে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ফের বৈঠকে বসেন কমিশনের কর্তারা। রাতে তাঁদের একাংশ জানান, রাজ্যের রিপোর্টে তাঁরা হতাশ।

এ দিকে, আদর্শ আচরণবিধি ভঙ্গ করা নিয়ে বিভিন্ন দলের একাধিক নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ জমা পড়েছে। সেই বিষয়ে পদক্ষেপ করার আগে আদালতের রায় দেখে নিতে চাইছে কমিশন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE