Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

ভোট অশান্তির অনেকটাই তৃণমূল বনাম নির্দলের

ভোটের দিন রাজ্য জুড়ে অশান্তি, গোলমালে অনেক ক্ষেত্রেই অন্যতম অনুঘটক হয়ে দাঁড়ালেন নির্দল প্রার্থীরা। যার বেশিরভাগই শাসক দলের টিকিট না পেয়ে ‘বিক্ষুব্ধ’ হয়ে লড়াইয়ে নেমেছিলেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৬ মে ২০১৮ ০৫:০১
Share: Save:

ভোটের দিন রাজ্য জুড়ে অশান্তি, গোলমালে অনেক ক্ষেত্রেই অন্যতম অনুঘটক হয়ে দাঁড়ালেন নির্দল প্রার্থীরা। যার বেশিরভাগই শাসক দলের টিকিট না পেয়ে ‘বিক্ষুব্ধ’ হয়ে লড়াইয়ে নেমেছিলেন।

টিকিট-প্রত্যাশী নির্দলরা যে ভোটে গোলমাল করতে পারে, সে আশঙ্কা আগে থেকেই ছিল শাসক দলের। সে জন্য ‘নির্দল-কাঁটা’ নিকেশ করার চেষ্টাও কম করেনি তারা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত যেখানে যেখানে নির্দল রয়ে গিয়েছিল, তার বহু জায়গায় অশান্তি গড়িয়েছে বুথ পর্যন্ত। কারণ বেশ কিছু জায়গায় ‘প্রতিরোধ’ এসেছে নির্দলদের থেকে। আর সেই প্রতিরোধে কোনও কোনও বিরোধী দলও নির্দলদের পাশে দাঁড়িয়ে দল ভারী করেছে বলে অভিযোগ তুলছে শাসক শিবির।

শাসক আর নির্দলের সংঘর্ষে দক্ষিণ ২৪ পরগনায় প্রাণহানি হয়েছে বলে অভিযোগ। কুলতলিতে নিহত তৃণমূল সমর্থক আরিফ আলি গাজিকে নির্দল সমর্থকেরা খুন করেছে বলে শাসক শিবিরের অভিযোগ। সেখানেই তৃণমূলের সুবিদ আলি মোল্লাকে নির্দলেরা কুপিয়ে খুন করেছে বলে অভিযোগ। উল্টোদিকে, মন্দিরবাজারে নির্দল সমর্থককে তৃণমূল খুন করেছে বলে পাল্টা অভিযোগ।

হুগলিতে আবার জেলার নির্দলদের মদত দেওয়ার অভিযোগ তুলে পঞ্চায়েত সমিতিতে দলের প্রার্থী আচ্ছালাল যাদবের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করলেন উত্তরপাড়ার তৃণমূল বিধায়ক প্রবীর ঘোষাল। পাল্টা তাঁর বাড়ির সামনে গুলি চালানো হয়েছে বলে প্রবীরবাবুর বিরুদ্ধে আচ্ছালাল পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন।

উত্তর ২৪ পরগনায় ত্রিস্তর পঞ্চায়েতে মোট ৪২৯৬টি আসনের মধ্যে ১২২৫টি আসনেই নির্দল প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ছিলেন। ভোট মিটে যাওয়ার পরেও চলেছে দু’পক্ষের লড়াই। ভোটবাক্স লুঠ করে আগুন লাগানোর ঘটনা ঘটেছে দেগঙ্গার ঝিকরা ১ নম্বর পঞ্চায়েতে। শাসক দলের দুষ্কৃতীরাই ভোট-বাক্স নিয়ে চম্পট দিয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছেন সেখানকার এক নির্দল প্রার্থী। যদিও তৃণমূলের দাবি, ‘‘ভোট চায় না বলেই কেউ কেউ মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নিতে চেয়েছে। ভোটবাক্স লুঠ তো তারাই করেছে।’’

দিনভর শাসক-নির্দলের এই চাপানউতরে তৃণমূলের অন্তর্দ্বন্দ্বই প্রকট হয়েছে। ব্যারাকপুরে যেমন নব্য তৃণমূল বনাম আদি তৃণমূলের দ্বন্দ্বে ভোটের দিনে দেখাই গেল না তৃণমূলের পুরনো নেতাদের। অন্যদিকে, তৃণমূলের অন্তর্দ্বন্দ্বকে তাঁরা যে ‘সদ্ব্যবহার’ করতে চান, তা দিন কয়েক ধরেই প্রকাশ্যে মন্তব্য করছিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। ভোটের দিন অনেক জায়গাতেই নির্দলদের বিজেপি ‘মদত’ দিয়েছে বলে শাসক শিবির অভিযোগ তোলে। যদিও জবাবে দিলীপবাবুর বক্তব্য, ‘‘তৃণমূলের এ-টিম, বি-টিম মারপিট করেছে, সেখানে আমাদের কী করণীয়!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE