প্রতীকী ছবি।
স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের নিশানা তো করা হয়েছিলই। রেহাই পায়নি মফস্সলের সম্পন্ন বহু পরিবারও। নোটবন্দির সময়ে অচল নোটের বিনিময়ে পশ্চিম মেদিনীপুরের অনেক ধনী গৃহস্থের বাড়ি থেকেও সোনা কেনা হয়েছিল বলে জানাচ্ছেন সিআইডি-কর্তারা। এই ঘটনায় ওই জেলার বেশ কয়েকটি থানার এক শ্রেণির পুলিশকর্মী জড়িত ছিলেন বলে তদন্তকারীদের দাবি।
সিআইডি সূত্রের খবর, মূলত বেলদা দাসনগর, ডেবরা, খড়্গপুর লোকাল ও খড়গপুর গ্রামীণ থানা এলাকায় স্বর্ণ ব্যবসায়ী ও গৃহস্থ বাড়ি থেকে অচল নোট দিয়ে সোনা কেনা হয়েছিল। সোনা হস্তগত করে সেই সব পরিবারের কর্তা ও ব্যবসায়ীকে বাতিল নোট নিতে বাধ্য করানো হত। নোটবন্দির সময়ে প্রায় এক মাস আইনশৃঙ্খলা রক্ষার কাজ কার্যত শিকেয় তুলে এবং থানার অন্যান্য কাজ ছেড়ে পুলিশকর্মী ও অফিসারদের একাংশ সোনা-শিকারে বেরিয়ে পড়তেন।
অচল নোট-বোঝাই ব্যাগ নিয়ে ওই পুলিশকর্মীরা বেলা ৩টে থেকে পরের দিন ভোর ৪টে পর্যন্ত সোনা কিনতে ব্যস্ত থাকতেন বলে তদন্তে জানা গিয়েছে। সিআইডি-র দাবি, পশ্চিম মেদিনীপুর পুলিশের সেই সময়কার এক শীর্ষ কর্তার নির্দেশে এই কাজ চলত। এক তদন্তকারী অফিসার জানাচ্ছেন, ওই শীর্ষ কর্তার নির্দেশে এক-এক জন পুলিশ অফিসার ২০ থেকে ৩০ কিলোগ্রাম সোনা কিনেছিলেন।
সিআইডি-র এক কর্তার কথায়, সেই সময়ে স্বর্ণ ব্যবসায়ী ছাড়াও অবস্থাপন্ন পরিবারও ওই সব পুলিশকর্মীর নিশানায় চলে আসে। বিভিন্ন থানা এলাকায় শ’দুয়েক পরিবারের কাছ থেকে সোনা কেনা হয় বলে সিআইডি-র কাছে মৌখিক ভাবে অভিযোগ করা হয়েছে। বেশ কয়েকটি পরিবারের
কাছ থেকে সোনা নেওয়ার পরে অচল টাকাও দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে পশ্চিম মেদিনীপুরের অফিসারদের বিরুদ্ধে।
সিআইডি-র এক কর্তার কথায়, ওই সব থানা এলাকার স্বর্ণ ব্যবসায়ীর পাশাপাশি বহু অবস্থাপন্ন পরিবারের কর্তাদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। ওই সব পরিবারের কর্তাদের বয়ান অনুযায়ী সোনা কেনার পরে অচল টাকা ব্যাঙ্ক থেকে নিজেদের নামে বদল করে নিতে বলা হয়েছিল। সিআইডি-র দাবি, জেরায় ধৃত পুলিশ অফিসারেরা জানান, ‘ম্যাডাম’-এর নির্দেশে তাঁরা অচল নোটের বিনিময়ে সোনা কিনেছেন। সেই সময়ে পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার ছিলেন ভারতী ঘোষ। অভিযোগের আঙুল তাঁর দিকেই। সেই জন্য ভারতীর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।
ভারতী অবশ্য সিআইডি-র অভিযোগ উড়িয়ে দিচ্ছেন। তিনি বলেন, ‘‘নানা ভাবে মিথ্যা গল্প ফেঁদে সংবাদমাধ্যমকে বিপথে চালিত করছে সিআইডি। আমিও আইনের পথে সিআইডি-র অভিযোগের মোকাবিলা করার প্রস্তুতি চালাচ্ছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy