Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

তিলে তিলে শেষ হচ্ছি, ভাটপাড়ায় ক্ষুব্ধ ব্যবসায়ীরা

ভাটপাড়া-কাঁকিনাড়ায় অশান্তিটা চাইছে কে? শনিবার সকাল থেকে দুই এলাকা চষে ফেলেও সরাসরি উত্তর মিলল না।

অশান্ত ভাটপাড়া। ফাইল চিত্র।

অশান্ত ভাটপাড়া। ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ভাটপাড়া শেষ আপডেট: ২৩ জুন ২০১৯ ০৪:০০
Share: Save:

সকলেই বলছেন, অশান্তি চাই না।

তা হলে ভাটপাড়া-কাঁকিনাড়ায় অশান্তিটা চাইছে কে? শনিবার সকাল থেকে দুই এলাকা চষে ফেলেও সরাসরি উত্তর মিলল না। কাঁকিনাড়া বাজারের কালী মন্দিরের উল্টো দিকের চাতালে কয়েক জন ব্যবসায়ীর জটলা থেকে উত্তর এল, ‘‘অশান্তি হচ্ছে দু’পক্ষের মধ্যে। তা-ও মাত্র ৩০ শতাংশ মানুষ এ সবে যুক্ত। বাকিরা তো শান্তিই চান। কিন্তু তাঁদের কথা শুনছে কে?’’

৭৯ বছরের সুকেশ সাউ কাঁকিনাড়া বাজারে পোশাকের দোকান চালান। তিনি বলেন, “অশান্তি বজায় থাকলে দোকান-বাজার বন্ধ থাকবে। মানুষ রাস্তাঘাটে বেরোতে পারবে না। আর হামলাকারীরা নিশ্চিন্তে বাড়ি-ঘর-দোকান লুট করবে। গত এক মাস ধরে তা-ই চলছে। এমন আগে কোনও দিন দেখিনি।”

বিকাশ প্রসাদ (নাম পরিবর্তিত) মোবাইলের দোকান চালান। তাঁর কথায়, ‘‘এলাকায় বোমাবাজি, খুনোখুনি হলে মানুষ আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। দিনের পর দিন এমন চললে পুলিশ, প্রশাসনের প্রতি ক্ষোভ বাড়ে। প্রমাণ করা যায়, সরকার অপদার্থ। তা হলে কারও কারও সুবিধা হয়।” এর পরেই তাঁর সংযোজন, “কাদের সুবিধা হয়, সেটা আপনারা খুঁজে বের করুন।”

কাঁকিনাড়া বাজার অন্যতম ব্যস্ত এলাকা। বড় রাস্তা থেকে গলি— সর্বত্র সারি সারি দোকান বন্ধ। বেশ কিছু দোকানে লুটপাট, ভাঙচুরের ছাপ স্পষ্ট। শাটার ভাঙা। কোনও দোকানে আবার আগুন লাগানো হয়েছিল। সে দিকে দেখিয়ে ব্যবসায়ীদের প্রশ্ন, “এ সব কারা করবে বলুন? আমরা ব্যবসা করে খাই। এক মাস ধরে এক পয়সা আয় নেই। এ সব আমরা করব? নাকি আম-গেরস্ত করবে?”

তিন দিন ধরে ১৪৪ ধারা জারি রয়েছে কাঁকিনাড়া, ভাটপাড়ায়। কিন্তু জনতার জটলায় কমতি নেই। অশান্তিও পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসেনি। নেতা-মন্ত্রীরা নিহতদের বাড়িতে এলে ভিড় বাড়ছে। সেই ভিড় থেকেও ইতিউতি আওয়াজ উঠছে, ‘বদলা চাই’। কারা বদলা চায়, কীসের বদলা চায়, তা সাধারণ মানুষ জানেন না। তাঁরা শুধু চান শান্তি ফিরুক।

গুলিতে আহত শিক্ষক প্রদীপ সাউ যেমন হাসপাতালের বেডে শুয়ে বললেন, ‘‘ভাটপাড়ায় শান্তি ফিরুক। স্কুলগুলো খুলুক।’’ গত বৃহস্পতিবার কাঁকিনাড়ার কাছারি রোডে মুড়িমুড়কির মতো বোমা পড়েছিল। কাঁকিনাড়া ভারতী বিদ্যাপীঠের শিক্ষক প্রদীপ দেখতে যান, কোনও পড়ুয়া বাইরে রয়েছে কি না।

তখনই বাঁ হাতে গুলি লাগে। ফোনে তিনি বলেন, ‘‘এক মাস ধরে বোমাবাজি চলছে। আমার স্কুলে ৮০-৯০ জন পড়ুয়া। অশান্তির কারণে ১৪-১৫ জন আসত। সকলের কাছে একটাই আবেদন, শান্তি ফিরুক। স্কুলগুলো খুলুক।’’

এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Bhatpara Bhatpara Violence ভাটপাড়া
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE