Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

নিজের ছবি না থাকলেই দৃশ্যদূষণ, সব্যসাচীকে নিয়ে প্রশ্ন উঠছে তৃণমূলেই

ঘটনা সোমবার সকালের। এ দিন বিধাননগরের সিজিও কমপ্লেক্সে সিবিআই অফিস ঘেরাওয়ের কর্মসূচি ছিল সিপিএমের। সে জন্যই সল্টলেকের রাস্তায় রাস্তায় লাল ঝান্ডা লাগিয়েছিল দল।

বিধাননগর পুরনিগমের উদ্যোগে সরানো হচ্ছে সিপিএমের পতাকা। সোমবারের সভার জন্য লাগানো হয় পতাকাগুলি। কিন্তু সেই সভার আগেই বেশির ভাগ পতাকা সরিয়ে দেওয়া হয়। ছবি: স্নেহাশিস ভট্টাচার্য

বিধাননগর পুরনিগমের উদ্যোগে সরানো হচ্ছে সিপিএমের পতাকা। সোমবারের সভার জন্য লাগানো হয় পতাকাগুলি। কিন্তু সেই সভার আগেই বেশির ভাগ পতাকা সরিয়ে দেওয়া হয়। ছবি: স্নেহাশিস ভট্টাচার্য

স্যমন্তক ঘোষ
শেষ আপডেট: ৩০ অক্টোবর ২০১৮ ০৩:৫৫
Share: Save:

পতাকা কার? সিপিএমের।

খুলল কে? বিধাননগর পুরনিগম।

পুরনিগম কার? তৃণমূলের।

মেয়র কে? সব্যসাচী দত্ত।

এমনই এক আবহে তৈরি হয়েছে বিতর্ক। উঠছে নানা প্রশ্ন। এমনকি, তৃণমূলের অন্দরেও। সব্যসাচীর ‘আত্মপ্রচার’-এর প্রবণতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন স্বয়ং দলের মহা সচিব।

ঘটনা সোমবার সকালের। এ দিন বিধাননগরের সিজিও কমপ্লেক্সে সিবিআই অফিস ঘেরাওয়ের কর্মসূচি ছিল সিপিএমের। সে জন্যই সল্টলেকের রাস্তায় রাস্তায় লাল ঝান্ডা লাগিয়েছিল দল। অভিযোগ, এ দিন কর্মসূচি শুরু হওয়ার আগেই পুরকর্মী বলে পরিচয় দিয়ে একদল লোক রাতারাতি সেই ঝান্ডা খুলে নেয়। এবং ময়লা ফেলার ঠেলা গাড়িতে ভরে সে গুলি সরিয়ে ফেলা হয়। এ বিষয়ে বিধাননগরের মেয়র সব্যসাচী দত্তকে প্রশ্ন করা হলে তাঁর সাফ উত্তর, ‘‘বিধাননগর ক্লিন অ্যান্ড গ্রিন সিটি। শুধু বামেদের নয়, সমস্ত রাজনৈতিক দলের ঝান্ডাই খুলে নেওয়া হয়েছে।’’

এটা কি বাঞ্ছনীয়? শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের উত্তর, ‘‘কী ঘটেছে জানি না। খবর নেব। তবে ওখানে মেয়রের ছবি দেওয়া হোর্ডিং তো আছে? সেগুলো কি দৃশ্যদূষণ ঘটায় না? নিজের ছবি না থাকায় তৃণমূলেরও বহু হোর্ডিং উনি অতীতে খুলে দিয়েছেন।’’ সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্রের বক্তব্য, ‘‘ষাঁড় এবং বিজেপির মতো তৃণমূলও লাল রং ভয় পায়। বামপন্থীরা ওদের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাবে।’’

আরও পড়ুন: জ্বলন্ত গ্যাসে মুখ ঠেসে ধরতে যাচ্ছেন পুলিশকর্তা স্বামী, অভিযোগ ঢাকুরিয়ায়

সিপিএমের উত্তর ২৪ পরগনার জেলা সম্পাদক মৃণাল চক্রবর্তীর প্রশ্ন— ‘‘ওখানে তো মেয়রের কাট আউট-হোর্ডিংও আছে। সেগুলোয় দৃশ্য দূষণ হয় না? যত অসুবিধা কেবল বিরোধীদের পতাকায়?’’ তাঁর আরও প্রশ্ন, ‘‘আমাদের বিক্ষোভ কর্মসূচি মোদী সরকারের বিরুদ্ধে। আমাদের ঝান্ডা খুলে দিয়ে তৃণমূলের প্রশাসন কেন্দ্রীয় শাসক দলকে কী বার্তা দিতে চাইছে?’’ প্রশ্ন এড়িয়ে সব্যসাচীবাবুর জবাব, ‘‘ওই হোর্ডিংয়ের সঙ্গে রাজনীতির কোনও যোগ নেই।’’

তবে রাজনৈতিক মহলের একাংশ বিরোধীদের অভিযোগকে সমর্থন করছে। তাদের বক্তব্য, সিবিআই অফিস ঘেরাও নিয়ে তৃণমূলের ‘গাত্রদাহ’ হওয়ার কারণ নেই। বরং ‘খুশি’ হওয়ার কথা। কিন্তু সব্যসাচীবাবু কি তা হলে কেন্দ্রের শাসক দলকেই নিজের ‘অতিসক্রিয়তা’ দেখালেন? দলের ভিতরে এবং বাইরে বহুবার তাঁর রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। উঠেছে বিজেপি ‘ঘনিষ্ঠতা’র অভিযোগও। যদিও বিধাননগরের মেয়র বরাবরই এ ধরনের অভিযোগ উড়িয়ে দেন। এ বারও দিয়েছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE