সাড়ে তিন বছর পরে ফিরে পাহাড়ে প্রথম সভায় বিমল গুরুং। রবিবার দার্জিলিংয়ের চকবাজারে। ছবি: স্বরূপ সরকার
দক্ষিণবঙ্গ সফররত কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে উত্তরবঙ্গ থেকে আক্রমণ করলেন বিমল গুরুং। সাড়ে তিন বছর পর পাহাড়ে নিজের খাসতালুক দার্জিলিংয়ে দাঁড়িয়ে রবিবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বিরুদ্ধে ‘বিশ্বাসভঙ্গে’র অভিযোগ আনলেন গুরুং। বললেন, বিজেপি গোর্খা জাতিকে ‘ধোঁকা’ দিয়েছে। একই সঙ্গে, এ দিন তাঁর প্রতিপক্ষ শিবিরের দুই নেতা বিনয় তামাং ও অনীত থাপাকে ১৫ দিনের মধ্যে পাহাড় ছাড়তে বলেছেন। এতদিন পর পাহাড়ে ফেরা বিমলকে যেন খানিকটা পুরনো মেজাজেই পাওয়া গেল বলে মনে করছেন রাজনৈতিক মহলের অনেকে।
এ দিন ভোরে শিলিগুড়ি থেকে গাড়ি নিয়ে দুপুরে দার্জিলিং পৌঁছন গুরুং। চকবাজার এলাকার মোটর স্ট্যান্ডে এ দিন সভায় ভালই ভিড় হয়। মঞ্চে উঠে তিনি বলেন, ‘‘অমিত শাহ আশ্বাস ছাড়া কিছুই দেননি। বিশ্বাসভঙ্গ করেছেন। কেন্দ্র ও রাজ্যের বাকি বিজেপি নেতারাও তাই।’’ বিমল আরও জানান, বিজেপি শুধু গুরুংকে নয়, গোটা গোর্খা জাতিকে ১২ বছর ধরে ধোঁকা দিয়েছে। রাজ্যের নজর থেকে পালিয়ে থাকার সময় অমিত শাহ, কৈলাস বিজয়বর্গীয়রা আশ্বাস দেওয়া ছাড়া কোনও সাহায্য করেননি। তিনি বলেন, ‘‘ওদের অন্ধ ভক্ত ছিলাম। আমাকে শুধু ব্যবহার করেছে। তৃণমূলের হাত ধরেছি, বিজেপিকে শিক্ষা দেব। সাড়ে তিন বছরের খারাপ সময় ওরা দেখেনি। আমার সঙ্গে থাকা লোকজনকে দিল্লিতে চৌকিদারি, পাহারাদারের কাজ করতে হয়েছে। এ বার পাহাড় হাসবে।’’
সেই সঙ্গে বিনয় তামাং, অনীত থাপাদের পাহাড় ছাড়ার জন্য ১৫ দিন সময় দিয়েছেন বিমল। বিমলের এই হুমকিতে আগামী দিনে পাহাড়ে কতদিন আর শান্তি থাকবে, তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। তবে পাল্টা আইনশৃঙ্খলা রক্ষার কথা বলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্য ‘ঢাল’ হয়ে আসন্ন বিধানসভা ভোটে অন্তত ১৮টি আসন তৃণমূলকে জেতানোর ব্যবস্থা করছেন বলেও জানিয়েছেন বিমল। দলের সাধারণ সম্পাদক রোশন গিরিরও অভিযোগ, নিজেদের ক্ষমতা আর দলের বিস্তার ছাড়া বিজেপি আর কিছুই করে না।
যা শুনে বিজেপি সাংসদ রাজু বিস্তা বলেছেন, ‘‘পাহাড়-ছাড়ারা বাড়ি ফিরেছেন। ভাল কথা। আর গুরুং-তৃণমূল জোটটা তো ব্যক্তিগত জোট। গোর্খারা তৃণমূলকে কোনওদিন ভোট দেবে না। আর মনে রাখতে হবে, আমরা আমাদের প্রতিশ্রুতি থেকে পিছিয়ে আসিনি।’’ এ দিন পাহাড় ছাড়ার হুমকি নিয়ে ক্ষমতাসীন মোর্চার সভাপতি বিনয় তামাং বলেছেন, ‘‘এই হুমকি, হিংসার রাজনীতির জন্যই আমরা আলাদা হয়েছিলাম। রাজ্য সরকার দেখুক, এরা কী বলছে, করছে। আমি পাহাড়ে আছি, থাকব। গুরুং খুন করতে এলেও পাহাড় ছাড়ব না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy