Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

গুরুঙ্গকে টেক্কা দেওয়াই এখন পরীক্ষা বিনয়ের

জিটিএ গড়ার পরে রোহিণী থেকে দার্জিলিং অবধি অন্তত ২৫টি তোরণ বানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে স্বাগত জানিয়েছিলেন বিমল গুরুঙ্গ। বিনয় তামাঙ্গ এ বার সুকনা থেকে দার্জিলিং অবধি রাস্তার ধারে অন্তত ৫০টি জায়গায় মুখ্যমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে কোমর বেঁধেছেন।

কিশোর সাহা
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০৩:১১
Share: Save:

জিটিএ গড়ার পরে রোহিণী থেকে দার্জিলিং অবধি অন্তত ২৫টি তোরণ বানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে স্বাগত জানিয়েছিলেন বিমল গুরুঙ্গ। বিনয় তামাঙ্গ এ বার সুকনা থেকে দার্জিলিং অবধি রাস্তার ধারে অন্তত ৫০টি জায়গায় মুখ্যমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে কোমর বেঁধেছেন।

গত বছর ৮ জুন দার্জিলিঙে মন্ত্রিসভার বৈঠক করেন মমতা। সে দিনই গুরুঙ্গের নেতৃত্বে গোলমাল শুরু হয়ে যায়। মুখ্যমন্ত্রী পাহাড় ছাড়েন পরদিন সন্ধ্যায়। তার পরে আট মাস বাদে তিনি দার্জিলিঙে যাচ্ছেন। এ দিন শিলিগুড়ির ছাত্র-যুব সমাবেশের মঞ্চ থেকে তিনি বলেন, ‘‘দীর্ঘদিন পরে পাহাড়ে যাচ্ছি। যাঁরা শান্তি ফিরিয়ে উন্নয়ন করছেন, সেই বিনয় তামাঙ্গ, মন ঘিসিঙ্গদের সকলকে ধন্যবাদ।’’

মমতা যখন এই কথা বলছেন, ততক্ষণে পাহাড়ে যাওয়ার পথে বিনয়দের প্রস্তুতি প্রায় শেষ। প্রথমে ঠিক ছিল মুখ্যমন্ত্রী দার্জিলিঙে যাবেন হেলিকপ্টারে। কিন্তু আবহাওয়া বাদ সেধেছে। তা ছাড়া রোহিণী রোডের নাম বদলে সুবাস ঘিসিঙ্গের নামে করবেন মমতা। সেই অনুষ্ঠানেরও প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। এই সুযোগে বিনয়রা অভ্যর্থনার রাজকীয় ব্যবস্থা করতে চাইছেন। এর বড় কারণ, পাহাড়ে বিমলকে যে তিনি ছাপিয়ে গিয়েছেন, সেটা দেখানোর তাগিদ রয়েছে বিনয়ের। তাই জমকালো অভ্যর্থনার ব্যবস্থা থাকাটাই স্বাভাবিক। দ্বিতীয়ত, বিনয়কে দেখাতে হবে, পাহাড়ে বিমলের আর কোনও অস্তিত্ব নেই। মুখ্যমন্ত্রীর সফরে সেই সুযোগটাও পেয়ে গেলেন তিনি। মমতা যদি নির্ঝঞ্ঝাটে পাহাড়ে পৌঁছন এবং তাঁকে ঘিরে যদি সেখানে বড় মাপের অনুষ্ঠান করা সম্ভব হয়, তা হলে বিনয় বলতে পারবেন, বিমলের প্রভাব এখন আসলে ‘মিথ’।

সেই ক্ষেত্রে বিনয়ের বড় সহায় হল বিমলের ব্যাকফুটে চলে যাওয়া। ইউএপিএ-সহ নানা মামলায় ফেঁসে থাকা বিমল এখন নতুন কোনও গোলমালে জড়াতে চাইছেন না। তিনি তাই তাঁর অনুগামীদের বার্তা দিয়েছেন, মমতার সফরের সময়ে যেন কোনও হাঙ্গামা না হয়। তা হলেই নতুন করে তাঁকে জড়িয়ে মামলা হতে পারে। ফলে তাঁর পাহাড়ে ফেরাও পিছিয়ে যাওয়ার যথেষ্ট সম্ভাবনা।

এই সুযোগ শুধু বিনয়ই নন, মন ঘিসিঙ্গ থেকে শুরু করে ১৫টি উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যানরাও কাজে লাগাতে চান। স্বাগত জানানোর বেলায় তাঁরাও থাকবেন মুখ্যমন্ত্রীর যাত্রাপথের ধারে। সুকনা থেকেই অভ্যর্থনা জানানোর ব্যবস্থা করে বিনয় নিজের ক্ষেত্রটিও বড় করে দেখাতে চেয়েছেন। বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী সরকারি সফরে আসছেন। তাঁকে জিটিএ-র তরফে সুকনা থেকে দার্জিলিং অবধি তাঁকে স্বাগত জানাব। শান্তিপ্রিয় সব পাহাড়বাসীই তাতে সামিল হবেন।’’ মঙ্গলবার এই সব অভ্যর্থনা পেরিয়ে মমতা এই প্রথম গুরুঙ্গহীন দার্জিলিঙে উঠবেন। এবং যাওয়ার পথে প্রতিষ্ঠা করে যাবেন সুবাস ঘিসিঙ্গের নামফলকটি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE