Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

কালিম্পঙে গরম টের পেলেন বিনয়

আধ ঘণ্টার মাথায় কালিম্পঙের এক শুভার্থী ‘হাফ জ্যাকেট’ এনে দিলে হাঁফ ছাড়লেন বিনয়। ততক্ষণে ইতিউতি দর্শকাসনে লোকজন বসায় কিছুটা হলেও স্বস্তির ছাপ দেখা গেল আলোচনাপন্থী মোর্চা নেতার চোখেমুখে।

—ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

কিশোর সাহা
কালিম্পং শেষ আপডেট: ৩০ ডিসেম্বর ২০১৭ ০৩:০০
Share: Save:

দার্জিলিং ও কালিম্পংয়ের আবহাওয়ার মধ্যে যে আকাশ-পাতাল ফারাক তা গোড়ায় বুঝতে পারেননি জিটিএ-র কেয়ারটেকার বোর্ডের চেয়ারম্যান বিনয় তামাঙ্গ।

তাই সকালে তিস্তা রঙ্গিত ফেস্টিভ্যালের দার্জিলিং পর্বের সমাপ্তিতে যে ভারী জ্যাকেট গায়ে হেঁটেছিলেন, তা গায়েই পৌঁছেছিলেন কালিম্পঙের মেলার মাঠে। সেখানে তখন মাঠের বেশির ভাগ চেয়ারই ফাঁকা। খাবার কিংবা প্রদর্শনীর স্টলেও লোকজন তেমন নেই। তারই মধ্যে মেলা ঘুরে মঞ্চের সামনের খোলা আকাশের নীচে গনগনে রোদে বসে ঘামছেন পুলিশ সুপার অজিত যাদব, জেলাশাসক ডক্টর বিশ্বনাথ সহ অতিথিরা। বিনয় সেখানে কিছুক্ষণ বসার পরে ঘেমেনেয়ে জ্যাকেট খুলেই ফেললেন। ফাঁকা দর্শকাসনের দিকে তাকিয়ে কি যেন বিড়বিড় করলেন। আধ ঘণ্টার মাথায় কালিম্পঙের এক শুভার্থী ‘হাফ জ্যাকেট’ এনে দিলে হাঁফ ছাড়লেন বিনয়। ততক্ষণে ইতিউতি দর্শকাসনে লোকজন বসায় কিছুটা হলেও স্বস্তির ছাপ দেখা গেল আলোচনাপন্থী মোর্চা নেতার চোখেমুখে।

বস্তুত, দার্জিলিং-কালিম্পঙের সামগ্রিক পরিস্থিতির মধ্যে যে ফারাক অনেকটাই তা খোলাখুলিই মানছেন বিনয়পন্থীরা। তাঁরা অনেকেই জানান, দার্জিলিঙে উৎসবে যোগ দিতে ম্যালে যেমন ভিড় হয়েছে, পর্যটকেরাও সেখানে তুলনামূলক ভাবে বেশি রয়েছেন। কালিম্পঙে পর্যটক প্রায় নেই। পুরসভা বিমল গুরুঙ্গের অনুগামীদের হাত থেকে দখল করার পরেও পাহাড়ি শহরের সিংহভাগ বাসিন্দাকে এখনও যে পাশে মেলেনি সেটাও স্বীকার করেছেন তাঁরা। মঞ্চে উঠে বিনয় নিজেও মৃদু হেসে বলেছেন, ‘‘দর্জিলিঙের সঙ্গে কালিম্পঙের আবহাওয়ার এতটা পার্থক্য তা বুঝতে পারিনি। সকালে ওখানে ভারী জ্যাকেট পরে অনুষ্ঠানে হেঁটেছি। এখানে এত গরম ভাবিইনি।’’ তার পরেই তাঁর সংযোজন, ‘‘ফারাকটা বুঝেছি বলেই সেই মতো হাফ জ্যাকেট পরেছি। অবস্থা বুঝেই ব্যবস্থা করতে হয়।’’

ঘটনা হল, দার্জিলিঙের মতো কালিম্পংয়ের গুরুঙ্গ অনুগামীদের বেশির ভাগকে এখনও পাশে পাননি বিনয় তামাঙ্গ-অনীত থাপারা। তবে পুরসভা দখলের পরে সেই অবস্থার কিছুটা উন্নতি হয়েছে বলে তামাঙ্গ-থাপা পন্থীদের দাবি। যদিও জন আন্দোলন পার্টির হরকাবাহাদুর ছেত্রী ও তাঁর দলের লোকজন এখনও আলোচনাপন্থী মোর্চার শিবিরের বিরোধিতা চালিয়ে যাচ্ছে। জাপের নেতারা উৎসবের ধারেকাছে যাননি। বিনয় অনুগামীদের দাবি, জাপের অনেক সমর্থক-কর্মীই মেলার মাঠে এসেছেন। কারণ, তাঁরাও জানেন ও বোঝেন, পাহাড় যে শান্ত রয়েছে তা দেশ-বিদেশের পর্যটন মহলে বোঝানোর জন্য এ ধরনের মেলার গুরুত্ব অনেক।

মেলার মাঠে মোমোর স্টল খুলেছেন মেনকা সেরপা, লাডেন শেরপা, আয়ুষী শেরপারা। বিক্রি হচ্ছে খুচখাচ। কলেজ পড়ুয়া আয়ুষী বললেন, ‘‘প্রথম দিন বলে হয়তো তেমংন ভিড় হয়নি। পরে হবেই।’’ মেনকা, লাডেনরা বললেন, ‘‘আশা করি, উৎসবের সৌজন্যে আমাদের ‘নিউ ইয়ারটা’ সত্যিই ‘হ্যাপি’ হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE