বিজেপির রথযাত্রায় অনুমতি দিল না রাজ্য।
রথযাত্রা আটকে যাওয়ার পরে বিজেপির কর্মসূচি আপাতত দ্বিমুখী। এক দিকে, তারা আইনের আশ্রয় নিচ্ছে। আবার একই সঙ্গে আইন অমান্য কর্মসূচিও রেখেছে তারা। যা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে, তা হলে কি আইনের কাছ থেকে ‘ইতিবাচক’ রায় না পাওয়ার আগাম আশঙ্কায় ভুগছে বিজেপি?
দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ অবশ্য বলেন, ‘‘একেবারেই তা নয়। আমরা কলকাতা হাইকোর্টে যাব রাজ্য সরকারের অগণতান্ত্রিক আচরণের বিরুদ্ধে। রাজ্য সরকার চিঠিতে লিখেছে, যাত্রা হলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে বলে জেলাশাসকরা রিপোর্ট দিয়েছেন। তাই জেলায় জেলায় প্রতিবাদসভা করব। সেখানে অনুমতি না দিলে আইন অমান্য হবে।’’ তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের কটাক্ষ, ‘‘ওদের সঙ্গে জনগণ নেই। রাস্তায় নেমে সংগ্রাম করার ক্ষমতাও ওদের নেই। তাই যে কোনও বিষয়কেই ওরা আদালতে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। এ ভাবে জনগণকে সঙ্গে পাওয়া যায় না।’’
রাজ্য সরকার ‘গণতন্ত্র বাঁচাও’ যাত্রার অনুমতি না দেওয়ায় পরবর্তী পদক্ষেপ ঠিক করতে দলের সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহের নির্দেশে রবিবার কলকাতায় আসেন সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা সাংসদ ভূপেন্দ্র যাদব। দিলীপবাবু, সর্বভারতীয় সম্পাদক রাহুল সিংহ, কেন্দ্রীয় সহ পর্যবেক্ষক অরবিন্দ মেনন-সহ রাজ্য নেতৃত্ব এবং আইনজীবীদের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি। সেখানেই সিদ্ধান্ত হয়, আজ, সোমবার ফের কলকাতা হাইকোর্টে যাওয়া হবে। সেখানে নতুন করে যাত্রার তিনটি তারিখের কথা জানানো হবে। আবেদনে প্রশ্ন তোলা হবে, রাজ্য সরকার আইনশৃঙ্খলার অবনতির আশঙ্কা করলে কেন্দ্রীয় বাহিনী এনে রথযাত্রার ব্যবস্থা করা হবে না কেন? বস্তুত, বিজেপি নেতাদের আরও প্রশ্ন, তাঁদের কর্মসূচি ‘গণতন্ত্র বাঁচানো’র ডাক দিয়ে। কোনও ধর্মীয় কর্মসূচি তাঁদের নেই। তা হলে রাজ্যের এত আশঙ্কার কারণ কী? আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির কথা ভেবে যদি কোনও রাজনৈতিক দলকে তার কর্মসূচিতে বাধা দেওয়া হয়, তা হলে এ রাজ্যে কেন্দ্রীয় হস্তক্ষেপই বা হবে না কেন? অন্য দিকে, আজ থেকেই রাজ্যের সব জেলায় জেলাশাসক বা মহকুমাশাসকের দফতরের সামনে বিক্ষোভ দেখাবে দল। সেই কর্মসূচির অনুমতি না মিললে আইন অমান্য করা হবে।
আরও পড়ুন: জয়নগর, আদ্রার পরে এ বার আরামবাগ, পিটিয়ে খুন তৃণমূল নেতাকে
ওই বৈঠকেই আরও ঠিক হয়েছে, তথ্যের অধিকার আইনে রাজ্য সরকারের কাছে জানতে চাওয়া হবে, বিভিন্ন সংখ্যালঘু সংগঠন সভা-মিছিল ইত্যাদি করার অনুমতি পায় কী ভাবে? শেষ পর্যন্ত যাত্রার অনুমতি না মিললে বিকল্প পথ হিসাবে জানুয়ারি মাস জুড়ে রাজ্যের সব জেলায় পদযাত্রা এবং শাহ, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী-সহ এক ঝাঁক কেন্দ্রীয় নেতাকে এনে সভা করার কথাও ভেবে রেখেছে বিজেপি। কাল, মঙ্গলবার দিল্লিতে দিলীপবাবু, রাহুলবাবু-সহ পাঁচ নেতাকে বৈঠকে ডেকেছেন শাহ। পশ্চিমবঙ্গের সামগ্রিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং যাত্রা সংক্রান্ত জট নিয়ে সেখানে আলোচনা হওয়ার কথা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy