—প্রতীকী ছবি
হাসপাতালে রক্তের পরিমাণ জানতে গত জুলাই মাসে একটি ‘হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ’ চালু করেছিল বোলপুর মহকুমা হাসপাতাল। বিভিন্ন রক্তদান শিবিরের উদ্যোক্তাদের পাশাপাশি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে সব স্তরের মানুষকে রাখা হয়েছিল। হাসপাতালের ব্লাডব্যাঙ্কে কোন গ্ৰুপের কত ইউনিট রক্ত রয়েছে, ওই গ্রুপে তা জানানো হয় প্রতি দিন। তাতেই ধরা পড়েছিল, সঞ্চিত রক্তের পরিমাণ কমতে শুরু করেছে। এরমধ্যে হাসপাতালের চিকিৎসক থেকে শুরু করে কর্মীদের একাংশ ব্লাডব্যাঙ্কে রক্ত দেন। রক্তদান শিবিরের আয়োজন করেন পুলিশ থেকে শুরু করে কলেজ পড়ুয়া।
মহকুমা হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, রক্ত দেওয়ার ক্ষেত্রে হাসপাতাল চত্বরে একটি দালালচক্র কাজ করছিল। যারা বিভিন্ন সময় টাকার বিনিময়ে রোগীর পরিবারকে রক্তের জোগান দিচ্ছিলেন। কিন্তু সমস্যা তৈরি হয়েছিল অন্য জায়গায়। এই দালালদের যাঁরা রক্ত দিচ্ছিলেন, রক্তদান তাঁদের পেশা হয়ে দাঁড়িয়েছিল।
এ ভাবে রক্ত দেওয়ার ফলে তাঁদের অনেকেই সংক্রামক রোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন। সেই রক্ত রোগীর শরীরে গেলে তাঁরও সংক্রমণের আশঙ্কা ছিল। তাই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ চেয়েছিলেন, ব্লাডব্যাঙ্কেই রক্ত থাকুক, যাতে ‘ইন হাউস ব্লাড কালেকশন’ অর্থাৎ জরুরি পরিস্থিতিতে পরিবারের লোক ছাড়া অচেনা কারও থেকে রক্ত নিতে না হয়।
বোলপুর মহকুমা হাসপাতালের সুপার অমিত মজুমদার জানান, জানুয়ারি মাসে শিবির থেকে পাওয়া রক্তের পরিমাণ ছিল ২৭৩ ইউনিট, ইন হাউসের পরিমাণ ছিল ১২৩ ইউনিট।
অন্য দিকে জুলাই মাসে শিবির থেকে পাওয়া রক্তের পরিমাণ বেড়ে ২৭৮ ইউনিট হয়েছে। ইন হাউস রক্তের পরিমাণ কমে হয়েছে ৭৮ ইউনিট। এ ভাবেই হাসপাতালে দালালচক্র বন্ধ করা সম্ভব হবে বলে আশাবাদী ছিলেন তাঁরা।
সফলও হয়েছিলেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। জুলাই মাসে এই উদ্যোগ নেওয়ার পরেই ব্লাডব্যাঙ্কে সঞ্চিত রক্তের পরিমাণ বাড়তে থাকে। একটা সময় সব ইউনিট মিলে ব্লাড ব্যাঙ্কে রক্ত ছিল ২৫০ ইউনিটেরও বেশি। বোলপুর মহকুমা হাসপাতালের রোগীরা ছাড়াও উপকৃত হয়েছিলেন নার্সিংহোমের রোগীরা।
হাসপাতাল সূত্রে খবর, গত এক মাসে আবার সঞ্চিত রক্তের পরিমাণ কমতে থাকে। ২১ নভেম্বর, নবী দিবসে মহম্মদবাজার সংহতি মহফিলের উদ্যোগে হওয়া রক্তদান শিবির থেকে ৬৪ ইউনিট রক্ত মেলে। এর পর ২২ নভেম্বর শম্ভুনাথ কলেজের শিবির থেকে রক্ত পাওয়ার পরে বৃহস্পতিবার থেকে প্রতিটি ইউনিটের রক্ত মজুত রয়েছে হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কে। শুধুমাত্র ‘এ’ নেগেটিভ এবং ‘এবি’ নেগেটিভ গ্ৰুপের রক্ত রয়েছে এক ইউনিট করে। সব পজিটিভ গ্ৰুপের রক্তই বেশি পরিমাণে আছে।
এ বিষয়ে বোলপুর মহকুমা হাসপাতালের সুপার অমিত মজুমদার বলেন, ‘‘মাঝে কিছুদিন ব্লাডব্যাঙ্কে সঞ্চিত রক্তের পরিমাণ কমে গিয়েছিল। রক্তদানের জন্য তো কাউকে জোর করা যায় না। শেষ পর্যন্ত আবার সব ইউনিটের রক্ত রয়েছে। এটা স্বস্তির বিষয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy