রাজ্যে তৃণমূলকে হারাতে কংগ্রেস-সহ অন্যান্য ধর্মনিরপেক্ষ শক্তির সঙ্গে বৃহত্তর জোট হবে কি না সে ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে শুক্রবার থেকে শুরু হচ্ছে সিপিএমের রাজ্য কমিটির দু’দিনের বৈঠক। তার ঠিক আগের সন্ধ্যায় কংগ্রেসের সঙ্গে সমঝোতার পক্ষেই পরোক্ষে সওয়াল করলেন রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। একই মঞ্চ থেকে দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য গৌতম দেব অবশ্য সরাসরি কংগ্রেসের সঙ্গে যাওয়ার পক্ষে ইঙ্গিত দিলেন। তাঁর সাফ কথা: ‘‘বামেরা একা লড়বে আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জিতে যাবেন, এটা হতে দেওয়া যাবে না।
ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলে শিল্পের পুনরুজ্জীবনের দাবিতে উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সিপিএমের মহামিছিল ছিল বৃহস্পতিবার। বরাহনগর ও কাঁচরাপাড়া থেকে বিপুল লোক নিয়ে দু’টি মিছিল এসে শেষ হয় ব্যারাকপুরে। তার পরে ব্যারাকপুরে দলের এক সমাবেশ থেকে তৃণমূল সরকারকে তুলোধোনা করেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর অভিযোগ, কৃষকেরা ফসলের দাম পাচ্ছেন না, শিক্ষায় নৈরাজ্য চলছে, উপাচার্যেরা বিশ্ববিদ্যালয় ছেড়ে পালিয়ে বাঁচতে চাইছেন। রাজ্যে শিল্প নেই, তরুণ প্রজন্ম কর্মসংস্থানের অভাবে ভুগছে, রাজ্য সরকার খালি দেদার টাকা বিলোচ্ছে আর উৎসব করছে। এই অবস্থা পরিবর্তনের জন্যই এ বার বিধানসভা ভোটে লড়াই হবে বলে জানিয়ে বুদ্ধবাবু বলেন, ‘‘জোট নিয়ে অনেক কথা হচ্ছে। কিছু মানুষ বলছেন, তোমরা সব এক হয়ে যাও। ব্যক্তির মতের পার্থক্য হতে পারে, দলগুলোর মতেরও পার্থক্য থাকতে পারে। কিন্তু আমরা বলছি, একটা বিষয়ে তো একমত হওয়াই যায় যে, এই সরকারটাকে সরাতে হবে। তার জন্য দ্বিধা-দ্বন্দ্ব কাটিয়ে সব মানুষের কাছে যেতে হবে।’’
প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর কথায়: যদি কংগ্রেসের প্রতি প্রচ্ছন্ন বার্তা থেকে থাকে তা হলে সিপিএমের উত্তর ২৪ পরগনার জেলা সম্পাদক গৌতমবাবু ছিলেন আরও চাঁচাছোলা। দলের অন্দরে তিনি কংগ্রেসের সঙ্গে বোঝাপড়া তত্ত্বের প্রবল প্রবক্তা। বৃহস্পতিবারেও তিনি বলেন, ‘‘কংগ্রেসের সঙ্গে জোট হবে কি না তা আর দু’-এক দিনের মধ্যে ঠিক হয়ে যাবে। দিল্লিতেও আলোচনা হবে। আমরা একা লড়ব আর মমতা জিতে যাবেন, এটা হতে দেওয়া যাবে না।’’
আলিমুদ্দিনে এ দিনই বামফ্রন্টের বৈঠকে বাম শরিকেরা মত দিয়েছে, কংগ্রেসের দিক থেকে প্রস্তাব এলে তারা তা নিয়ে আলোচনায় রাজি। নীতিগত আপত্তির দোহাই দিয়ে আলোচনার দরজা বামফ্রন্ট বন্ধ করতে চায় না। তার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই বুদ্ধ-গৌতমের বার্তা জোট জল্পনা আরও জোরালো করল। এবং সেই সঙ্গে সীতারাম ইয়েচুরি, প্রকাশ কারাটেরা কলকাতায় পা দেওয়ার আগের রাতে বঙ্গ ব্রিগেডের মনোভাব আরও এক বার পরিষ্কার করে রাখল!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy