তীব্র যানজটে ফেঁসে গোটা রাস্তা। দিন-রাত বিটি রোডের এই চেনা ছবিটাই এ বার বদলানোর পরিকল্পনা নিয়েছে রাজ্য সরকার। রাজ্য পূর্ত দফতরের কর্তাদের মতে, পরিকল্পনা মতো বাস বে তৈরি হলে আর যানজটে ফাঁসতে হবে না সদা ব্যস্ত বিটি রোডে। বরং আরও গতি বাড়বে ব্যারাকপুর ট্রাঙ্ক রোডের।
কলকাতা থেকে উত্তর শহরতলি এবং হাওড়া, হুগলি, ব্যারাকপুরে যাতায়াতের প্রধান মাধ্যম এই বিটি রোড (ব্যারাকপুর ট্রাঙ্ক রোড)।
পুলিশ সূত্রের খবর, সব থেকে বেশি যানজট হয় ডানলপ থেকে টালা ব্রিজের আগে পর্যন্ত প্রায় ছ’কিলোমিটার রাস্তায়। গড়ে প্রতিদিন কয়েক হাজার মানুষ ও যানবাহন চলাচল করে এই রাস্তা দিয়ে। কিন্তু প্রায়শই দেখা যায়, বাস ও মালবাহী গাড়ির মর্জিমতো চলাচলের ফলে রাস্তায় যানজট লেগে যায়। যাত্রী তোলার জন্য পরপর বাস যত্রতত্র দাঁড়িয়ে থাকায় সমস্যা বাড়ে।
পূর্ত দফতর সূত্রের খবর, বিটি রোডের দু’দিকে যে রাস্তা রয়েছে, তা প্রায় ১১ মিটার করে চওড়া। তাতে আনায়াসে তিনটি গাড়ি পাশাপাশি যেতে পারে। কিন্তু বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায়, যাত্রী তোলার ‘লড়াই’-এর জেরে ওভারটেক করে বাসগুলি রাস্তার মাঝখানে দাঁড়িয়ে পড়ে। এর ফলে পাশ দিয়ে একটি মাত্র গাড়ি যেতে পারে। তার থেকেও বড় বিষয় হল, রাস্তার মাঝে দাঁড়ানো বাসে বিপজ্জনক ভাবে যাত্রীদের ওঠা-নামা করতে হয়। দীর্ঘ দিন ধরে সমীক্ষার পরে রাজ্য সরকার সিদ্ধান্ত নেয়, বিটি রোডে বাস দাঁড়ানোর নির্দিষ্ট জায়গা চিহ্নিত করে দেওয়া হবে। এর জন্য ডানলপ মোড় থেকে টালা ব্রিজের আগে পর্যন্ত রাস্তায় মোট ১৬টি বাস বে তৈরি হচ্ছে। প্রতিটিতেই থাকবে যাত্রী প্রতীক্ষালয়।
দফতরের এক কর্তা জানান, দু’দিকেই ১১ মিটার চওড়া রাস্তার পাশে যে জায়গায় মাটি জমে গিয়েছিল, সেখানে পাথর দিয়ে মোরাম করা হয়েছে। পুজোর পরেই তার উপরে বিটুমিন দেওয়া হবে। ওই অংশটি ব্যবহার হবে বাস বে হিসেবে। প্রতিটি বাস বে প্রায় ৭০ মিটার লম্বা ও সাড়ে তিন থেকে পাঁচ মিটার চওড়া হবে। বাসগুলি ওই জায়গায় ঢুকে যাত্রী তুলে ফের ১১ মিটার চওড়া বিটি রোডে উঠবে। ওই কর্তা বলেন, ‘‘নির্দিষ্ট চ্যানেলে বাস ঢুকে গেলে পিছনে থাকা গাড়ির আর কোনও সমস্যা হবে না। সহজেই সেগুলি ১১ মিটার চওড়া রাস্তা দিয়ে কোনও ভাবে না থেমেই বেরিয়ে যেতে পারবে।’’
পূর্ত কর্তারা জানান, কলকাতা ও বরাহনগর মিলিয়ে রয়েছে ওই ১৬টি জায়গা। সেই তালিকায় রয়েছে চুনিবাবুর বাজার, চিড়িয়া মোড়, রবীন্দ্র ভারতী, সাউথ সিঁথি, পালপাড়া, টবিন রোড, অনন্যা, সুভাষপল্লি-সহ আরও কয়েকটি এলাকা। কিন্তু প্রশ্ন হল, বাস বে তৈরির পরে তাতে
নিয়ম মেনে বাস ঢুকছে কি না, তা দেখবে কে? পূর্ত দফতরের এক কর্তার কথায়, ‘‘রাস্তায় ট্র্যাফিক নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট পুলিশের। তাই তাঁরাই বিষয়টি দেখবেন। আর নিয়ম চালু হলে বাস চালকেরাও তা মানবেন বলেই মনে হয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy