Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
Andal Airport

বকেয়া ১০ কোটি, অন্ডালে সিএজির প্রবল চাপে কেন্দ্র

অন্ডালে বেসরকারি বিমানবন্দরের কাছে কেন্দ্রের ১০ কোটি টাকারও বেশি পাওনা জমে গিয়েছে।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

সুনন্দ ঘোষ
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০২:৩৮
Share: Save:

উড়ান বেড়েছে। দিল্লি থেকে বাড়তি অফিসারও পাঠাতে হয়েছে অন্ডাল বিমানবন্দরে। কিন্তু সেখান থেকে বকেয়া পাওনা আদায় না-হওয়ায় আতান্তরে পড়েছে কেন্দ্রীয় সরকার।

অন্ডালে বেসরকারি বিমানবন্দরের কাছে কেন্দ্রের ১০ কোটি টাকারও বেশি পাওনা জমে গিয়েছে। বিমান মন্ত্রক এত দিন বিষয়টি নিয়ে চুপচাপই ছিল। কিন্তু সম্প্রতি সমীক্ষার পরে ওই মন্ত্রককে চেপে ধরেছে কন্ট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল (সিএজি)। প্রশ্ন তোলা হয়েছে, একটি বেসরকারি সংস্থার কাছে দীর্ঘদিন ধরে এত টাকা পাওনা থাকা সত্ত্বেও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না কেন?

দিল্লি থেকে বিমান মন্ত্রকের এক কর্তা বলেন, ‘‘বার বার চিঠি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু অন্ডাল বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ সাড়া দিচ্ছে না। আমরা সেখানে এয়ার ট্র্যাফিক কন্ট্রোল (এটিসি)-এর পরিষেবা দিই। সেই খাতেই এই টাকা পাওনা রয়েছে। এ ছাড়াও যন্ত্র কিনে দেওয়া হয়েছিল। তার টাকাও বকেয়া রয়েছে। টাকা না-পেয়ে আমরা যদি ওখানে এটিসি পরিষেবা বন্ধ করে দিই, তা হলে বিমানবন্দরটাই বন্ধ হয়ে যাবে। আজকের পরিস্থিতিতে সেটা নিয়ে রাজনৈতিক তরজা হবে।’’

বকেয়া মেটানো হচ্ছে না কেন? অন্ডাল বিমানবন্দরের চিফ ফিনান্স অফিসার অঞ্জু মাডেকা বলেন, ‘‘কেন্দ্রের পাওনা নিয়ে আলোচনা চলছে।’’ বিমানবন্দর-কর্তৃপক্ষের একাংশের মতে, এখন রাজনৈতিক পরিস্থিতি যা, তাতে কেন্দ্র দুম করে অন্ডাল থেকে পরিষেবা তুলতে পারবে না, এই বিশ্বাস জন্মে গিয়েছে। সেই সঙ্গে সিএজি চেপে ধরায় কর্তৃপক্ষ সমস্যায় পড়েছেন।

দুর্গাপুরের অন্ডালে বিমানবন্দর চালু হয় ২০১৫ সালে। এটিই দেশের প্রথম বেসরকারি বিমানবন্দর। এটিসি বেসরকারি হাতে দেওয়ার নিয়ম নেই। তাই সেই পরিষেবা কেন্দ্রীয় বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের কাছ থেকেই নেওয়া হয়। চুক্তি হয়, অন্ডাল-কর্তৃপক্ষ এই খাতে মাসে মাসে টাকা দেবেন। প্রথম দিকে সেখানে কোনও উড়ান ছিল না। সারা দিনে কিছু ক্ষণের জন্য এটিসি চালু রাখা হত। তার জন্য সেখানে তিন জন অফিসার নিয়োগ করা হয়। এটিসি সংক্রান্ত যন্ত্রপাতি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য নিয়োগ করা হয় কমিউনিকেশন অ্যান্ড নেভিগেশন (সিএনএস) অফিসারদের।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উদ্যোগী হওয়ায় এয়ার ইন্ডিয়া ২০১৮ সালে অন্ডাল থেকে দিল্লি ও হায়দরাবাদের উড়ান চালু করে। শুরু থেকেই এই প্রকল্পে রাজ্যের শেয়ার আছে। বড় শেয়ার রয়েছে সিঙ্গাপুরের চাঙ্গি বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষেরও।

কেন্দ্রের বক্তব্য, ইদানীং অন্ডাল থেকে উড়ান বেড়েছে। এয়ার ইন্ডিয়া ছাড়াও স্পাইসজেট সেখান থেকে মুম্বই ও চেন্নাইয়ে সরাসরি উড়ান চালাচ্ছে। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ছড়িয়ে রয়েছে সেই চারটি উড়ানের সময়সূচি। ফলে তিন শিফটে এটিসি এবং সিএনএস অফিসারদের রাখতে হচ্ছে। তাই দিল্লি থেকে অতিরিক্ত অফিসার পাঠানো হয়েছে। এখন অন্ডালে সাত জন সিএনএস এবং পাঁচ জন এটিসি অফিসার রয়েছেন।

কেন্দ্রের যুক্তি, প্রথম চুক্তির সময় যত লোকবলের কথা বলা হয়েছিল, তার চেয়ে এখন চাহিদা অনেক বেড়ে গিয়েছে। সেই জন্য নতুন চুক্তি করার কথা। কিন্তু অন্ডাল বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ কোনও প্রস্তাবেই কর্ণপাত করছেন না বলে অভিযোগ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Andal Airport CAG
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE