প্রতীকী চিত্র।
পুজোয় সরকারি অনুদান দেওয়ার উপর শুক্রবার অন্তর্বর্তিকালীন স্থগিতাদেশ জারি করল কলকাতা হাইকোর্ট। সরকারি ওই সিদ্ধান্ত নিয়ে কিছু প্রশ্নও তুলেছে ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি দেবাশিস করগুপ্ত ও বিচারপতি শম্পা সরকারের ডিভিশন বেঞ্চ। আগামী মঙ্গলবার পর্যন্ত স্থগিতাদেশ জারি থাকবে। জনস্বার্থে দায়ের হওয়া একটি আবেদনের প্রেক্ষিতে ওই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে মঙ্গলবারই।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছিলেন, রাজ্যের ২৮ হাজার দুর্গাপুজোর উদ্যোক্তা বা ক্লাবকে ১০ হাজার টাকা করে মোট ২৮ কোটি টাকা অনুদান দেওয়া হবে। অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশের খবর জেনে এ দিন মুখ্যমন্ত্রীর প্রতিক্রিয়া, ‘‘ক্লাবগুলোকে টাকা দিয়ে দেওয়া হয়েছে। তারা টাকা পেয়ে গিয়েছে। কোর্টকে আমরা মান্য করি। কিন্তু কী করব? এক মাস আগে সিদ্ধান্ত হয়ে গিয়েছিল।’’
সরকারি সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবিতে জনস্বার্থে মামলা দায়ের করেন যুক্তিবাদী আন্দোলনের কর্মী সৌরভ দত্ত এবং দ্যূতিমান বন্দ্যোপাধ্যায় নামে হাইকোর্টের এক আইনজীবী। তার আগে সরকারের সিদ্ধান্তের সাংবিধানিক মান্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতিকে চিঠি দিয়েছিলেন আরএসপি নেতা অশোক ঘোষ। ডিভিশন বেঞ্চের এ দিনের বক্তব্যকে স্বাগত জানিয়েছেন তিনি, সেই সঙ্গে সিপিএমের সুজন চক্রবর্তী ও কংগ্রেসের শুভঙ্কর সরকারও।
আবেদনকারীদের পক্ষে সওয়াল করেন আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য এ দিন আদালতে বলেন, সরকার জনগণের টাকা এই ভাবে বিলি করতে পারে না। বিশেষ একটি ধর্মীয় সম্প্রদায়ের উৎসবে সরকার অনুদান দিলে তা সরাসরি দেশের সংবিধানকে আঘাত করে। রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল (এজি) দাবি করেন, পুজো উদ্যোক্তাদের টাকা দেওয়া হচ্ছে ‘সেফ ড্রাইভ, সেভ লাইভ’ প্রকল্পের প্রচারের জন্য। অর্থ দফতর তার জন্য ২৮ কোটি টাকার তহবিল গড়েছে। প্রকল্প স্বরাষ্ট্র দফতরের। তা শুনে বিচারপতি করগুপ্ত এজি-র উদ্দেশে বলেন, ‘‘সরকারি টাকা অপব্যবহারের অভিযোগ তুলে মামলা হয়েছে। এ ভাবে অনুদান দিয়ে টাকা অপব্যবহার করা যায় কি?’’
এজি-র উদ্দেশে বিচারপতি করগুপ্তের পরের প্রশ্ন, ‘‘কোন উদ্যোক্তা অনুদান পাবেন, কারা পাবেন না, তার কোনও নির্দেশিকা তৈরি হয়েছে?’’ এজি জানান, যাঁরা আবেদন করবেন, তাঁরাই পাবেন। বিচারপতি করগুপ্ত বলেন, ‘‘সংখ্যাটা ২৮ হাজারের বেশি হলে কী হবে? তাঁরা পাবেন না? বেছে বেছে টাকা দেওয়া যায় কি?’’
ডিভিশন বেঞ্চ এ দিন পর্যবেক্ষণ করেছে, ‘‘বলা হয়, রাজ্যের কোষাগারে টাকার অভাব রয়েছে। বহু মানুষ ন্যায্য পাওনা সরকারি কোষাগার থেকে পাচ্ছেন না। অথচ সরকারি কোষাগার থেকে ২৮ কোটি টাকা এই ভাবে বেরিয়ে যাচ্ছে।’’ ডিভিশন বেঞ্চ এজি-কে বলেছে, মঙ্গলবার রাজ্যকে জানাতে হবে, অনুদান সংক্রান্ত কী নির্দেশিকা রয়েছে। টাকা খরচে নজরদারি থাকছে কি না। অন্যতম আবেদনকারী সৌরভবাবু জানান, কীসের ভিত্তিতে এই অনুদান, তা জানতে অর্থসচিবকে তিনি ই-মেল করেছিলেন। উত্তর মেলেনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy