Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

ছাত্র নির্বাচনে নোটা এ বার কলকাতাতেও

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় আগেই জানিয়েছে, এ বছর সেখানকার ছাত্র সংসদের নির্বাচনে ‘নোটা’ বা অপছন্দের ভোট দেওয়ার ব্যবস্থা চালু করা হচ্ছে। পিছিয়ে থাকতে চাইছে না কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ও। ছাত্র নির্বাচনে নোটা রাখার পক্ষেই মত দিয়েছে সেখানকার ছাত্র সংসদ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২৭ ডিসেম্বর ২০১৬ ০৩:০৮
Share: Save:

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় আগেই জানিয়েছে, এ বছর সেখানকার ছাত্র সংসদের নির্বাচনে ‘নোটা’ বা অপছন্দের ভোট দেওয়ার ব্যবস্থা চালু করা হচ্ছে। পিছিয়ে থাকতে চাইছে না কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ও। ছাত্র নির্বাচনে নোটা রাখার পক্ষেই মত দিয়েছে সেখানকার ছাত্র সংসদ। এবং তার ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত হয়েছে, এ বারের ছাত্রভোটেই চালু করে দেওয়া হবে ‘নোটা’।

কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষ অবশ্য আগে জানিয়েছিলেন, তাঁরা নোটার বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কলেজগুলির হাতেই ছেড়ে দেওয়ার পক্ষপাতী। তবে সোমবার ছাত্র সংসদের সায় মেলার পরে ওই ব্যবস্থা চালু করার ক্ষেত্রে আর কোনও বাধা থাকছে না।

আপাতত ঠিক হয়েছে, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদের নির্বাচন হবে ২৮ জানুয়ারি। সেই ছাত্রভোট নিয়েই এ দিন বৈঠক ডেকেছিলেন কর্তৃপক্ষ। বিদায়ী ছাত্র সংসদের প্রতিনিধি সেই বৈঠকে জানান, নোটা অর্থাৎ তালিকার কোনও প্রার্থীকেই পছন্দ না-হলে সেটা জানানোর অধিকার ছাত্রভোটেও থাকা দরকার। তার পরেই শতাব্দী-প্রাচীন এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষ স্থির করেন, ভোটে মত প্রকাশের এই বিশেষ দিকটিকে সাধারণ
নির্বাচনের মতো ছাত্রভোটেও মান্যতা দেওয়া হবে।

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) চায়, বিধানসভা-লোকসভার মতো ছাত্র সংসদের নির্বাচনেও ‘নোটা’ বা অপছন্দের ভোট দেওয়ার ব্যবস্থা চালু হোক। জুলাইয়ে এই মর্মে সুপারিশও করে তারা। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের ভিত্তিতে ২০১৪ সালের লোকসভা ভোটে বৈদ্যুতিন যন্ত্রে অপছন্দের ভোট (নান অব দ্য অ্যাবাভ, সংক্ষেপে নোটা)-এর জন্য পৃথক বোতাম রাখার বন্দোবস্ত করে নির্বাচন কমিশন। তালিকার কোনও প্রার্থীকেই পছন্দ না-হলে ওই বোতাম টিপতে পারেন ভোটার। তাতে ভোট দেওয়ার অধিকার প্রয়োগ করা গেল আবার তালিকাভুক্ত কোনও প্রার্থীকেই যে পছন্দ নয়, জানানো গেল সেটাও। পশ্চিমবঙ্গ গত বিধানসভা নির্বাচনেও বহু মানুষ ওই বোতামের সাহায্যেই ভোট দিয়েছেন অর্থাৎ তালিকাভুক্ত প্রার্থীদের কাউকে ভোট দেননি। রাজ্যের নিরিখে এ ক্ষেত্রে এগিয়ে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়। তার পরে কলকাতার ছাত্র সংসদ এ দিন নোটা চালু করার ব্যাপারে সায় দিল।

এ দিনের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বিদায়ী ছাত্র সংসদের প্রতিনিধি মণিশঙ্কর মণ্ডল। তিনি বলেন, ‘‘নোটা নিয়ে আমাদের যে কোনও আপত্তি নেই, সেটা আমরা জানিয়ে দিয়েছি।’’ কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদের ভোটে গত কয়েক বছর প্রায় নিরঙ্কুশ ভাবে জয়ী হয়েছে শাসক দলের ছাত্র সংগঠন তৃণমূল ছাত্র পরিষদ (টিএমসিপি)। অধিকাংশ আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হন টিএমসিপি-র প্রার্থীরা। ওই বিশ্ববিদ্যালয় এবং তাদের অধীন কলেজ ছাড়াও রাজ্যের অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিরোধী পক্ষকে মনোনয়নপত্র পেশ করতেই দেওয়া হয় না বলে অতীতে বারে বারেই অভিযোগ উঠেছে। এই অবস্থায় না-ভোটের অধিকার চালু করার ব্যাপারে ছাত্র সংসদের সায় দেওয়ার বিষয়টি তাৎপর্যপূর্ণ বলে শিক্ষা শিবিরের একাংশের অভিমত। তাঁদের বক্তব্য, ছাত্র সংসদে কোনও বিশেষ সংগঠনের একাধিপত্যের বিরুদ্ধে অন্তত মতামত প্রকাশের সুযোগ দেবে এই নোটা বা না-ভোট।

২৮ জানুয়ারি ছাত্রভোটের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য (শিক্ষা) স্বাগত সেন বলেন, ‘‘আমরা এ বার বিষয়টি পুলিশ কমিশনারকে জানাব। নির্ঘণ্ট নিয়ে উনি কোনও আপত্তি না-তুললে নির্বাচন হবে ওই দিনেই। আর কোনও আপত্তি উঠলে আবার আলোচনা করে নতুন দিনক্ষণ ঠিক করা হবে।’’ আগের মতো এ বারেও নির্বাচন প্রক্রিয়া অফলাইনেই হবে বলে জানান সহ-উপাচার্য (শিক্ষা)। রাজ্য সরকারের নির্দেশ অনুযায়ী প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রভোট ৩১ জানুয়ারির মধ্যে শেষ করার কথা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Calcutta University Student Election NOTA
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE