শুক্রবার সকালে ‘ট্র্যাপ ক্যামেরা’-এ ধরা পড়ে পূর্ণবয়স্ক এই রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারটি।
আতঙ্ক আর সন্দেহ দানা বাঁধছিল বেশ কয়েক দিন ধরেই।
বন দফতরের কর্তাদের অবশ্য দাবি ছিল, লালগড়ের জঙ্গলে বাঘ থাকতেই পারে না। কিন্তু, গ্রামবাসীরা জানিয়েছিলেন, বাঘই দেখেছেন তাঁরা। প্রমাণ স্বরূপ মাটিতে দেখিয়েছিলেন টাটকা পায়ের ছাপ। কিন্তু, একদা মাওবাদী অধ্যুষিত লালগড়ে মাঝেমধ্যে হাতির দেখা মিললেও বাঘের দেখা তো দূর, বাঘের কথাও শোনা যায়নি কস্মিনকালে।
সন্দেহ দূর করতে লালগড়ের জায়গায় জায়গায় বসানো হয়েছিল ‘ট্র্যাপ ক্যামেরা’। বন দফতরের পাতা সেই ক্যামেরাতেই শুক্রবার দেখা দিল একটা পূর্ণবয়স্ক রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার। শুক্রবার ভোরে লালগড়ের কাটাপাহাড়ি এলাকার মেলখেরিয়া গ্রামে দেখা যায় বাঘটিকে।
আরও পড়ুন:
দেড় যুগের লড়াইয়ে চাকরি মৃত শিক্ষকের স্ত্রীর
হাজিরা-বিধি জরুরি কি না, বিতর্ক শিক্ষায়
বেশ ক’দিন ধরেই বাঘের আতঙ্ক ছড়িয়েছিল লালগড়ের বিভিন্ন জায়গায়। প্রথমবার গ্রামের রাস্তায় সন্দেহজনক জন্তুর পায়ের ছাপ দেখতে পান গ্রামবাসীরা। খবর যায় বন দফতরে। গ্রামবাসীদের দাবি ছিল, গ্রামে বাঘ ঢুকেছে। তবে, বন দফতরের কর্তারা জানান, লালগড়ের যা ভৌগোলিক অবস্থান তাতে সেখানে বাঘ ঢোকা কোনওমতেই সম্ভব নয়। তাই ছাপটি অন্য কোনও হিংস্র জন্তুর বলেই মনে করেছিলেন তাঁরা।
লালগড়ের মেলখেরিয়া গ্রাম লাগোয়া জঙ্গলে দেখা গিয়েছে বাঘটিকে।
কিন্তু, দিনের পর দিন আতঙ্ক বেড়ে চলায় লালগড়ের নানা জায়গায় সাতটি ক্যামেরা বসান বন দফতরের কর্তারা। শুক্রবার তারই একটিতে ধরা পড়ে বাঘের ছবি। এ দিন ভোর সাড়ে ৪টে থেকে সোয়া ৬টা পর্যন্ত মোট চার বার ক্যামেরাটিতে একটি পূর্ণবয়স্ক রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের ছবি ধরা পড়ে। যা দেখে রীতিমতো অবাক বন দফতরের কর্তারাও। বাঘটি কোথা থেকে এবং কী ভাবে এল সেই নিয়ে অনুসন্ধান চালাচ্ছেন তাঁরা। বাঘের আতঙ্ক ছড়ানোয় গ্রামের স্কুলগুলি বন্ধ রাখা হয়েছে। সন্ধের পরে গ্রামবাসীদের ঘরের বাইরে থাকতে নিষেধ করা হয়েছে।
মেদিনীপুরের ডিএফও রবীন্দ্রনাথ সাহা বলেছেন, ‘‘এই প্রথমবার লালগড়ে বাঘ দেখা গেল। আমরা বাঘটাকে ধরার চেষ্টা করছি। সুন্দরবন থেকে বিশেষজ্ঞদের নিয়ে আসা হয়েছে।’’ আগামিকাল সকাল থেকেই বাঘ ধরার কাজ শুরু হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
—নিজস্ব চিত্র।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy